আজহার মেহমুদ। ছবি: এক্স (টুইটার)।
পাকিস্তানের ক্রিকেটে আবার দ্বন্দ্ব।
কর্তাদের একাংশ চাইলেও টেস্ট দলের কোচের পর থেকে আজহার মেহমুদকে সরাতে পারছে না পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বাধা বোর্ডের পূর্বতন কমিটির করা চুক্তি। ছাঁটাই করলেই দিতে হবে ১৩ কোটি টাকারও বেশি গচ্চা।
পিসিবির কিছু কর্তা মেহমুদের কাজে খুশি নন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, নির্বাচক এবং জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান আকিব জাভেদও কোচের কাজে বিরক্ত। আজহার যে ভাবে কোচিং করাচ্ছেন, তা পছন্দ হচ্ছে না আকিবের।
কিন্তু সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলে আজহারকে ছ’মাসের বেতন এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা দিতে হবে। যার পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার আমেরিকান ডলার বা পাকিস্তানি মুদ্রায় ৪৫ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা)। পিসিবির পক্ষে এত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া কঠিন।
গ্যারি কার্স্টেন ইস্তফা দেওয়ার পর আজহারকেই সাদা বলে অন্তর্বর্তী কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে জেসন গিলেসপি টেস্ট দলের দায়িত্ব ছাড়লে তাঁকেই আবার টেস্ট দলেরও অন্তর্বর্তী কোচ করা হয়। কিছু দিন আগে টেস্ট দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয় দলের প্রাক্তন সহকারী কোচ আজহারকে। তার পর থেকেই ব্যক্তিত্বের সংঘাত শুরু দুই প্রাক্তন অলরাউন্ডারের। আজহারের বিরুদ্ধে কর্তাদের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ করেছেন আকিব। আজহারের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পদ্ধতি পছন্দ নয় নির্বাচক আকিবের। তা নিয়েই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
আকিব পিসিবির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ। স্বভাবতই পিসিবি কর্তারা লাল বলের দায়িত্ব থেকে আজহারকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। কিন্তু পারছেন না। কারণ, পিসিবির পূর্বতন কমিটির সঙ্গে আজহারের চুক্তি।
পিসিবির এক কর্তা বলেছেন, ‘‘কিছু দিন আগে টেস্ট দলের অন্তর্বর্তী কোচ করা হয়েছে আজহার মেহমুদকে। আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। মাইক হেসন সাদা বলের কোচ হওয়ার সময় শর্ত দিয়েছিলেন, তাঁকে পছন্দের সহকারীদের নিয়ে কাজ করতে দিতে হবে। আজহার তাঁর তালিকায় ছিলেন না। সে সময় আজহার দলের সহকারী কোচ ছিলেন। তখন খানিকটা বাধ্য হয়ে চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ এড়াতে টেস্ট দলের কোচ করতে হয়েছে। তাই আবার তাঁকে সরিয়ে দেওয়া কঠিন।’’ উল্লেখ্য, টেস্ট দলের কোচ হিসাবে আজহার মাসে ৭৫ লাখ পাকিস্তানি টাকা (প্রায় ২৩ লাখ টাকা) বেতন পান।
পিবিসির ওই কর্তা আরও বলেছেন, ‘‘আকিব জাভেদ এখন জাতীয় নির্বাচক। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধানও তিনি। বোর্ড চেয়ারম্যান মহসিন নকভির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তিনি আজহারের কোচিং পদ্ধতিতে একদমই খুশি নন। তবু কিছু করার নেই এই মুহূর্তে। আগের কমিটির করা চুক্তির জন্য আর্থিক ক্ষতি এড়াতে আজহারকে সরিয়ে দেওয়া কঠিন।’’
এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন পিসিবি চেয়ারম্যানই। নকভি আলাদা করে কথা বলতে পারেন আকিবের সঙ্গে। আপাতত তাঁকে শান্ত করে মে মাস পর্যন্ত অপেক্ষায় রাজি করাতে পারেন। না হলে ছ’মাসের বেতন এবং ক্ষতিপূরণ দিয়ে আজহারকে বিদায় জানাতে পারেন। তবে পিসিবির কোষাগারের যা পরিস্থিতি, তাতে এত টাকা খরচ করা কঠিন।