গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সাদা বলের সিরিজ় শেষ। এ বার শুভমন গিলের সামনে লাল বলের ক্রিকেট। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টেস্টের সিরিজ়। টেস্ট বিশ্বকাপজয়ী টেম্বা বাভুমার দলকে হারাতে রণকৌশল তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। টেস্ট দলের তিন ক্রিকেটারকে নিয়ে তিনি কিছুটা অসন্তুষ্ট। প্রথম একাদশে এক জনকে রেখে সমস্যা সমাধানের কথা ভাবছেন ভারতীয় দলের কোচ।
বাভুমাদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ১৪ নভেম্বর থেকে ইডেন গার্ডেন্সে। সাধারণ ভাবে ইডেনের ২২ গজ থেকে প্রথম দু’দিন কিছুটা সাহায্য পান জোরে বোলারেরা। তবে ব্যাট করা কঠিন হয় না। মোটামুটি তৃতীয় দিন থেকে স্পিন সহায়ক হয়ে যায় পিচ। ইডেন টেস্টের প্রথম একাদশে দু’জন উইকেটরক্ষককে রাখতে পারেন কোচ গম্ভীর।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন ধ্রুব জুরেল। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টেও শনিবার তিনি খেলেছেন ১২৭ রানের ইনিংস। তার আগের সাতটি ইনিংসে তাঁর রান যথাক্রমে ১৪০, ১, ৫৬, ১২৫, ৪৪, ৬ এবং ১৩২। আটটি ইনিংসের চারটিতেই শতরান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ভাল ফর্মে থাকা জুরেলকে বাদ দিয়ে প্রথম একাদশ তৈরির কথা ভাবছেন না গম্ভীর। চোট সারিয়ে ২২ গজে ফেরা ঋষভ পন্থ দলের সহ-অধিনায়ক। তাঁকেও প্রথম একাদশের বাইরে রাখা সম্ভব নয়। তাই জুরেলকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসাবে খেলানোর কথা ভাবছেন গম্ভীর, শুভমনেরা। তা ছাড়া ইংল্যান্ড সফরে পন্থ চোট পাওয়ার পর দলকে উইকেটের সামনে এবং পিছনে দলকে ভরসা দিয়েছিলেন জুরেল।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) এক কর্তা বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে জুরেল সম্ভবত বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসাবে খেলবে। দু’টি জায়গা রয়েছে ওর জন্য। ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বর জায়গা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন দল। সাই সুদর্শন শেষ টেস্ট ইনিংসে অর্ধশতরান করলেও ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। সুদর্শনের জায়গায় খেলতে পারে জুরেল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ভারতের পিচে বোলার নীতীশ কুমার রেড্ডিকে তেমন প্রয়োজন হবে না। জোরে বল করতে পারে এমন চার জন ক্রিকেটারকে প্রথম একাদশে রাখার প্রয়োজন নেই। ব্যাট হাতেও তেমন কিছু করতে পারছে না। ব্যাটার হিসাবে নীতীশের থেকে ভাল ফর্মে রয়েছে জুরেল। ব্যাটিং অর্ডারের ছ’নম্বরেও নামতে পারে জুরেল। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কোচ এবং অধিনায়ক নেবেন।’’
বোর্ড সূত্রে খবর, জুরেলকে প্রথম একাদশে রাখার আরও একটি উদ্দেশ্য রয়েছে গম্ভীরের। পন্থের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তাঁর আপত্তি না থাকলেও কিছুটা অসন্তুষ্ট তিনি। অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে প্রায়শই উইকেট ছুড়ে দিয়ে দলকে বিপদে ফেলছেন পন্থ। অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নিচ্ছেন কখনও কখনও। পরিস্থিতি বিচার করে ব্যাট করছেন না সহ-অধিনায়ক। জুরেলকে প্রথম একাদশে রেখে পন্থকে পরোক্ষে সতর্কবার্তা দিতে পারেন কোচ।
গম্ভীর চান লম্বা ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাট করতে পারেন, এমন আট জন ক্রিকেটারকে প্রথম একাদশে রাখতে চান কোচ। বিশেষজ্ঞ বোলার চান চার জন। দু’জন স্পিনার এবং দু’জন জোরে বোলার। হাতে রবীন্দ্র জাডেজা, ওয়াশিংটন সুন্দরের মতো ক্রিকেটার থাকায় তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে দু’জন উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের খেলা প্রায় নিশ্চিত।
ভারতের প্রথম একাদশে দু’জন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অবশ্য নতুন নয়। ১৯৮৬ সালে দু’টি টেস্টের প্রথম একাদশে ছিলেন কিরণ মোরে এবং চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। দু’টি ম্যাচেই বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসাবে খেলেছিলেন পণ্ডিত। সাদা বলের ক্রিকেটে কখনও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং দীনেশ কার্তিক একসঙ্গে খেলেছেন। কখনও ধোনি এবং পার্থিব পটেল একসঙ্গে খেলেছেন। আবার কখনও ধোনি এবং পন্থ একসঙ্গে প্রথম একাদশে থেকেছেন।