ICC Champions Trophy 2025

কোচ-অধিনায়ক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, রঞ্জি খেলব কখন? ‘গুরু’ গম্ভীরকে পাল্টা প্রশ্ন রোহিতের

কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছিলেন, ভারতীয় দলের সিনিয়র ও জুনিয়র ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা উচিত। তারই উল্টো সুর শোনা গেল অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের মুখে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩০
Share:

গৌতম গম্ভীর (বাঁ দিকে) ও রোহিত শর্মা। কোচ-অধিনায়কের গলায় ভিন্ন সুর। —ফাইল চিত্র।

কোচের কথা কি তবে মানছেন না অধিনায়ক? অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ় হারার পর ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছিলেন, ভারতীয় দলের সিনিয়র ও জুনিয়র ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা উচিত। তারই উল্টো সুর শোনা গেল অধিনায়ক রোহিত শর্মার গলায়। রোহিতকে সমর্থন করলেন নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরও।

Advertisement

ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার পর রোহিতদের সামনে প্রশ্ন করা হয় ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে। প্রশ্নটি প্রথমে করা হয়েছিল নির্বাচক প্রধান আগরকরকে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বোর্ড এই ধরনের কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করেনি। আগরকর বলেন, “এ রকম কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করা হয়নি। সময় পেলে ক্রিকেটারদের খেলা উচিত। অনেকের পক্ষেই একসঙ্গে তিনটে ফরম্যাট খেলা সম্ভব হয় না। পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। এখন সময় আছে বলে অনেকে রঞ্জি খেলার কথা ভাবছে। দেখতে হবে সকলে ফিট রয়েছে কি না।”

নিয়ম না করলেও নির্বাচক কমিটি চাইছে বিরাট, রোহিতেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলুন। তার একটি অন্য কারণও রয়েছে। আগরকর বলেন, “নির্বাচক হিসাবে আমরা চাই, সুযোগ পেলে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলুক। কারণ, তাতে শুধু তাদের খেলা ভাল হবে না, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিকাঠামো আরও মজবুত হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটারেরা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাবে। তবে এ রকম কোনও বাঁধাধরা নিয়ম করা হয়নি।”

Advertisement

আগরকরের কথা শেষ হতে রোহিত নিজেই সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া শুরু করেন। তিনি সরাসরি সময়ের কথা তোলেন। রোহিত জানান, সময় না পেলে কী ভাবে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবেন। ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, “গত ছ’সাত বছরে যদি আমাদের ক্রিকেট ক্যালেন্ডার দেখেন, তা হলে দেখবেন, এমন কোনও সময় নেই যখন আমরা ৪৫ দিন ঘরে বসে আছি। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শুরু হয়, মার্চে শেষ হয়। সেই সময় ভারতও অনেক ক্রিকেট খেলে। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় কোথায়?”

নিজের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন রোহিত। কেন তিনি দীর্ঘ দিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেননি তা জানান। রোহিতের কথায়, “আমি নিজের কথা বলতে পারি। ২০১৯ থেকে আমি ধারাবাহিক ভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি। তার পরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময়ই পাইনি। সারা বছর ধরে এত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় যে, ক্রিকেটারদের বিশ্রামও দরকার। পরের মরসুমের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে হয়। সেই সময়ও দরকার। তবে এখন নিয়ম হয়েছে, সময় থাকলে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতেই হবে। সকলেই সেই চেষ্টা করছে।”

২০২৪ সালে গম্ভীর কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সব ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে বলেছিলেন। তবে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই সময় রেহাই দেওয়া হয়েছিল রোহিত, কোহলি এবং জসপ্রীত বুমরাহকে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের পরে আবার সেই ঘরোয়া ক্রিকেটের কথাই বলেছেন কোচ। গম্ভীরের কথা মেনে শুভমন গিল, ঋষভ পন্থ, যশস্বী জয়সওয়ালের মতো ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে নামছেন। রোহিতও রঞ্জি দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন। তবে এখনও তিনি খেলবেন কি না তা নিশ্চিত নয়। দিল্লির প্রাথমিক দলে নাম রয়েছে বিরাটেরও। কিন্তু তিনি দিল্লির আগামী ম্যাচে খেলছেন না। বিরাট, রোহিতেরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন কি না সে দিকেই নজর রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে বিষয়টি যে জলের মতো স্পষ্ট নয় তা বুঝিয়ে দিলেন রোহিত। কোচ বললেই যে ঘরোয়া ক্রিকেট তাঁরা খেলতে পারবেন না তা অধিনায়কের কথাতেই স্পষ্ট। এ ক্ষেত্রে কিন্তু নির্বাচক প্রধানের সমর্থনও রয়েছে অধিনায়কের দিকেই।

যদিও পরে হয়তো রোহিত বুঝতে পারেন যে সরাসরি কোচের বিরুদ্ধে কথা বললে বিতর্ক হতে পারে। তাই পরিস্থিতি কিছুটা সামলানোর চেষ্টা করেন তিনি। জানান, কোচ গম্ভীরের প্রতি তাঁর বিশ্বাস রয়েছে। কোচও তাঁকে বিশ্বাস করেন। তাঁদের মধ্যে কী কথা হয় তা স্পষ্ট করেননি রোহিত। তিনি বলেন, “আমরা দু’জনেই জানি কী করতে হবে। আমি তো এখানে বসে বলব না যে, কী কথা হয়েছে। গম্ভীরও নিজের পরিকল্পনায় পরিষ্কার। কিন্তু মাঠে নামার পরে ও অধিনায়কের উপর ভরসা রাখে। মাঠের বাইরেই আমাদের সব কথা হয়। কিন্তু এক বার মাঠে নামার পর আমার সিদ্ধান্তই শেষ। সেটা গম্ভীরও জানে। সেই বিশ্বাস আমাদের দু’জনের একে অপরের উপর রয়েছে। সেটাই হওয়া উচিত।” পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেও রোহিত পরিষ্কার করে দিয়েছেন, অধিনায়ক হিসাবে নিজের সিদ্ধান্তের উপর পূর্ণ ভরসা রয়েছে তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement