(বাঁ দিকে) রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি (ডান দিকে)। পার্থে ব্যর্থ ভারতের দুই ব্যাটার। ছবি: এক্স।
পারলেন না রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। পারলেন না প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখতে। পার্থে ব্যর্থ ভারতের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। রান না পাওয়ার পাশাপাশি যে ভাবে তাঁরা খেললেন তাতে স্পষ্ট বোঝা গেল, পুরনো টাচ আর নেই। আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা গেল। দুই ব্যাটার মিলে মোট ২২ বল খেললেন। রোহিত ১৪ বলে ৮ রান করলেন। কোহলির করলেন ৮ বলে শূন্য। কেমন গেল এই দুই ব্যাটারের ২২ বল? কোথায় সমস্যা হল তাঁদের?
রোহিত শুরুতে কিছুটা সময় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁর ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। দেখে মনে হচ্ছিল, ভয়ে ভয়ে শট মারছেন। রোহিত আউট হওয়ার পরেই ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী বললেন, “বলের বাউন্স সামলাতে পারল না। পিচে পড়ে বল একটু বেশি লাফাল। সেটাই সমস্যায় ফেলল রোহিতকে। অস্ট্রেলিয়া এসে দু’দিন অনুশীলন করেছে। এখনও পিচের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি।” শাস্ত্রী যতই ঢাকার চেষ্টা করুন, রোহিত তো আর এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় খেলছেন না। তাঁর তো জানা উচিত সেখানকার পিচ কেমন? তা হলে কেন সামলাতে পারলেন না তিনি। বয়স কি বাধা হয়ে দাঁড়াল? কোহলি আবার তাড়াহুড়ো করলেন। সেই অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে যাওয়ার রোগ সারল না। দুই ব্যাটারকেই পরিকল্পনা করে আউট করল অস্ট্রেলিয়া।
রোহিতের ১৪ বল:
১ বল— মিচেল স্টার্কের বল হালকা হাতে মিড অনে খেলে ১ রান নিলেন।
২ বল— স্টার্কের বল পয়েন্টে খেললেন। রান এল না।
৩ বল— স্টার্কের বল লেগ সাইডে হালকা হাতে খেললেন। এই বলেও রান পেলেন না।
৪ বল— ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে বড় শট খেলতে গিয়েছিলেন। স্টার্কের বল ভিতরে ঢুকল। উইকেটের সামান্য উপর দিয়ে বেরিয়ে গেল বল। আর একটু হলেই বোল্ড হতে পারতেন রোহিত। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, রান না পেয়ে উশখুশ করছেন তিনি।
৫ বল— স্টার্কের বল ডিফেন্স করলেন রোহিত।
৬ বল— স্টার্কের ইনসুইং সামলাতে পারেননি রোহিত। বল গিয়ে লাগে প্যাডে। এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে অস্ট্রেলিয়া। বল অবশ্য লেগ স্টাম্পের বাইরে ছিল।
৭ বল— হাওয়ায় শট খেলেন রোহিত। আউট হতে পারতেন। কিন্তু বল কভারের ফিল্ডারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ২ রান নেন রোহিত।
৮ বল— স্টার্কের ফুল লেংথের বল সামনে খেলেন রোহিত। ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের ভিতরে থাকায় বল বাউন্ডারিতে চলে যায়। এই প্রথম রোহিতের কোনও শটে আত্মবিশ্বাস ধরা পড়ে।
৯ বল— স্টার্কের বল লেগ সাইডে হালকা হাতে খেলেন রোহিত। রান আসেনি।
১০ বল— ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়্যার লেগে সিঙ্গল নেন রোহিত।
১১ বল— হেজ়লউডের বলের বাউন্স সামলাতে পারেননি রোহিত। বল ছাড়েন তিনি।
১২ বল— আড়াআড়ি বড় শট মারার চেষ্টা করেন রোহিত। কিন্তু ব্যাটে-বলে হয়নি। বল যায় উইকেটরক্ষকের হাতে।
১৩ বল— হেড়লউডের আরও একটি বল ব্যাটের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। অফ সাইডের বাইরের বলে সমস্যায় পড়ছিলেন রোহিত।
১৪ বল— অবশেষে আর সামলাতে পারেননি রোহিত। হেজ়লউডের বল পিচে পড়ে একটু বেশি লাফায়। সামলাতে পারেননি রোহিত। ব্যাটে লেগে স্লিপে যায় বল। ক্যাচ ধরেন ম্যাট রেনশ। আউট হন রোহিত।
কোহলির ৮ বল:
১ বল— হেজ়লউডের বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি কোহলি। বল প্যাডে লাগে। দৌড়ে রান নেন তিনি। কিন্তু অতিরিক্ত হিসাবে ধরা হয় সেই রান।
২ বল— স্টার্কের বল পয়েন্ট এলাকায় হালকা হাতে খেলেন কোহলি। রান হয়নি।
৩ বল— কোহলিকে বার বার অফ স্টাম্পের বাইরে বল করছিলেন স্টার্ক। বাইরের বলে ব্যাট ছোঁয়ানোর চেষ্টা করছিলেন কোহলি। সেই পুরনো রোগ দেখা যাচ্ছিল। এই বলেও সেটাই হয়।
৪ বল— স্টার্কের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছাড়েন কোহলি।
৫ বল— স্টার্কের বল মিড অনে খেলেন কোহলি। কিন্তু রান হয়নি।
৬ বল— স্টার্কের সপ্তম স্টাম্পের বল মারতে যান কোহলি। প্যাড ও ব্যাটের মধ্যে বড় ফাঁক ছিল। ব্যাটে লাগলে স্লিপে ক্যাচ হত। ভাগ্য ভাল, বল ব্যাটে লাগেনি।
৭ বল— মিড অফে মেরে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন কোহলি। কিন্তু পারেননি।
৮ বল— স্টার্কের বল পয়েন্ট অঞ্চলে জোরে মারতে যান কোহলি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। বল হাওয়ায় ছিল। ঝাঁপিয়ে ভাল ক্যাচ ধরেন কুপার কোনোলি। শূন্য রানে আউট হয়ে ফেরেন কোহলি।