গৌতম গম্ভীর। ছবি: এক্স।
শুভমন গিলের মতোই আস্থা রয়েছে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের উপরও। ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীর জানিয়ে দিলেন, টেস্ট দল যেমন শুভমনের, তেমন টি-টোয়েন্টি দলটা সূর্যকুমারের। অধিনায়কদের দল পরিচালন পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করতে চান না। সফলতম কোচ হওয়ার লক্ষ্যও নেই তাঁর।
ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ় দিল্লি টেস্টের তৃতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সম্প্রচারকারী চ্যানেলের তরফে আকাশ চোপড়া প্রশ্ন করেন অধিনায়ক শুভমনকে কতটা সফল বলে মনে করেন? গম্ভীর বলেছেন, ‘‘এর আগে পর্যন্ত শুভমন মাত্র ছ’টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছে। এখনই কি বিচার করা যায়! শুভমন অত্যন্ত পরিশ্রম করছে। দ্রুত সব কিছু শেখার চেষ্টা করছে। ওকে আরও অনেক চাপ সামলাতে হবে। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়েও যেতে হবে। আমি শুধু চেষ্টা করব ওর চাপ যতটা সম্ভব কমিয়ে দেওয়ার।’’
আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পর পর দু’বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। কতটা চাপে রয়েছেন? গম্ভীর বলেছেন, ‘‘চাপ তো সব সময় থাকে। প্রতিটি ম্যাচে, প্রতিটি দিনই আমাদের চাপ সামলাতে হয়। সূর্যকুমার খুব ভাল নেতৃত্ব দিচ্ছে। টি-টোয়েন্টি দলটাকে দারুণ সামলাচ্ছে। ও ব্যাট হাতে কতটা কী করল, সেটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভারতের টি-টোয়েন্টি দলটা সূর্যর। যেমন টেস্ট দলটা এখন শুভমনের। এখন এক দিনের দলটাও ওর হবে। দল সব সময় অধিনায়কদের হয়। আমি ওদের দল পরিচালন পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। প্রয়োজনে পরামর্শ দিতে পারি। তবে দিনের শেষে দল অধিনায়কেরই।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সূর্য অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে আমাদের টি-টোয়েন্টি দলের পারফরম্যান্স দেখুন। প্রায় সব ম্যাচই জিতেছে। মাঠের সব সিদ্ধান্ত ওই নেয়। ও চায় ভয়ডর ক্রিকেট খেলতে। এটাই ঠিক। এশিয়া কাপের সময় আমিও ক্রিকেটারদের ভয়ডরহীন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে বলেছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, আগ্রাসী ক্রিকেট খেললে জেতার সুযোগ বেশি থাকে। রক্ষণাত্মক খেলা মানে প্রতিপক্ষ দলকে সুযোগ করে দেওয়া। এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও তো চাপ ছিল। আমরা চাপ নিয়ে খেলেই পারফর্ম করেছি। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে গেলে অনেক সময় ভুল হয়। ভুল হয়ে যেতে পারে, এমন ভয় পেলে চলবে না। ভুল হলেও আগ্রাসী ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার কারণ নেই। জেতার মানসিকতা নিয়েই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের। সফলতম কোচ হওয়ার কোনও লক্ষ্য আমার নেই।’’ ভুল হলে তো সমালোচনা হয়! গম্ভীর বলেছেন, ‘‘সমালোচনা হয়। অনেকে অনেক কিছু বলেন। আমরা গুরুত্ব দিই না। আমাদের সাজঘরে যে ৩০ জন থাকে, শুধু তাদের মতামত, পরামর্শকেই গুরুত্ব দিই আমরা। তার বাইরে কারও মতামত নিয়ে মাথা ঘামাই না। এটা খেলা। একটা দল হারবে, একটা জিতবে।’’
এশিয়া কাপে কতটা চাপ ছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে গম্ভীর বলেছেন, ‘‘দেখুন, আমরা ১৪০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি। আমাদের নিয়ে এত মানুষে প্রত্যাশা থাকে। আমাদের দায়িত্ব মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। চাপ তো থাকবেই। রোজ থাকে। দলের সকলের থাকে। সেটা নিউ জ়িল্যান্ড সিরিজ় হোক বা অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়। এই যে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে খেলছি, এই ম্যাচেও প্রত্যাশার চাপ আছে।’’
দুই অধিনায়কের পাশেই থাকার আশ্বাস দিয়েছেন গম্ভীর। কোচ হিসাবে ব্যর্থ হওয়ার ভয় নেই তাঁর। তিনি চান ভারতীয় দলকে আগ্রাসী ক্রিকেটে অভ্যস্ত করে তুলতে। সব ধরনের ক্রিকেটেই প্রতিপক্ষে চাপে রেখে ম্যাচ বের করে নেওয়ার পক্ষে তিনি। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের গৌতম গম্ভীর স্ট্যান্ডে বসে নিজের ক্রিকেট দর্শন পরিষ্কার করে দিলেন ভারতীয় দলের কোচ।