সংযোগ গুপ্ত। —ফাইল চিত্র।
এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পরেই ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল পাকিস্তান। দাবি না মানা হলে বয়কট করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল তারা। সেই সমস্যা মিটেছে। তার নেপথ্যে রয়েছেন এক ভারতীয়। সংযোগ গুপ্ত। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের একের পর এক অভিযোগ শুনেছেন তিনি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভির সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সামলেছেন আইসিসি-র সিইও সংযোগ। আইসিসি-র চেয়ারম্যান জয় শাহের ‘ডানহাত’ তিনি। এই সংযোগ নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সাংবাদিক হিসাবে।
চলতি বছর ৭ জুলাই আইসিসি-র সিইও হিসাবে নিযুক্ত হন সংযোগ। দিল্লির ছেলে সংযোগ ২০০২ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকনমিক্সে স্নাতক হন। তার পরে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন সংযোগ। তার পর ২০১০ সালে স্টার ইন্ডিয়ায় যোগ দেন। সেখানে বড় পদে ছিলেন তিনি। কন্টেন্ট, প্রোগ্রামিং এবং স্ট্র্যাটেজিতে দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০২০ সালে স্পোর্টস অ্যাট ডিজনি এবং স্টার ইন্ডিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।
স্টার ইন্ডিয়ায় মহিলা কেন্দ্রিক ম্যাচ সম্প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন সংযোগ। বিভিন্ন আইসিসি প্রতিযোগিতা এবং আইপিএলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। প্রো কবাডি লিগ এবং ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। স্টার টিভি নেটওয়ার্কের সঙ্গে প্রায় ১৫ বছর ধরে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে আইসিসিতে যোগ দেন সংযোগ। সিইও করা হয় তাঁকে।
জয় শাহ আইসিসি-র চেয়ারম্যান হওয়ার পর সংযোগের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করছেন তিনি। এশিয়া কাপে করমর্দন বিতর্কের পর সেই কারণে সংযোগের উপরেই ভরসা করেছেন জয়। সেই ভরসা রেখেছেন তিনি। পাকিস্তান আইসিসি-র কাছে অভিযোগ করার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির সঙ্গে বৈঠক করেন সংযোগ। সেখানে পাকিস্তানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সুপার ফোরের ম্যাচে যাতে পাক ক্রিকেটারেরা ভারতের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে না যান। আইসিসি-র এই নির্দেশ মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ, রবিবারও দু’দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলাতে দেখা যাবে না।
আইসিসি-র বক্তব্য, তাদের কাজই হল ম্যাচ পরিচালকদের পাশে থাকা। পাকিস্তানের চাপে পাইক্রফ্টকে সরিয়ে দেওয়া হলে আইসিসি-র স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। পাশাপাশি এটাও প্রমাণিত হবে, আইসিসি পাকিস্তানকে ভয় পায়! খুব খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। আইসিসি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ম্যাচ রেফারি ঠিক করা পুরোপুরি আইসিসি-র দায়িত্ব। কোনও দেশের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না।
শুধু ম্যাচ পরিচালকের পাশেই দাঁড়ায়নি আইসিসি। তারা তদন্ত করার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পাইক্রফ্ট কোনও দোষ করেননি। পিসিবিকে ই-মেল করে জানিয়েও দেওয়া হয়, তাঁকে বদলে দেওয়ার কোনও কারণ নেই। পিসিবি প্রস্তাব দেয় অন্তত বুধবারের ম্যাচে পাইক্রফ্টের জায়গায় আর এক ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনকে দেওয়ার। সেই প্রস্তাবও খারিজ হয়ে যায়। আর এই সবটাই করেন সংযোগ। এশিয়া কাপ যাতে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছেন সংযোগই।