জুটি: ডাবলসে রুপো মণিকা বাত্রা (পিছনে) ও মৌমা দাসের। ছবি: পিটিআই
দিল্লিতে শেষ বার যখন কমনওয়েলথ গেমসে নেমেছিলেন, জিতেছিলেন রুপো এবং ব্রোঞ্জ। আট বছর পর ফের অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে নামার সুযোগ পেয়ে আরও বড় সাফল্য পেয়েছেন মৌমা দাস। দলগত বিভাগে দেশের হয়ে প্রথম বার সোনা জেতার পর শুক্রবার মণিকা বাত্রাকে সঙ্গী করে ডাবলসের রুপো জিতেছেন তিনি।
তবুও পদক জয়ের খিদে যায়নি মৌমার। গোল্ড কোস্ট থেকে ফোনে মধ্যমগ্রামের সোনার মেয়ে বলে দিলেন, ‘‘গেমসে কখনও পদক জয়ের হ্যাটট্রিক করিনি। এ বার আমার লক্ষ্য মিক্সড ডাবলসের একটা পদক। শনিবার থেকে সেই লড়াই শুরু করব।’’ মৌমা যখন আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, তখন গোল্ড কোস্টের ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটা পেরিয়ে গিয়েছে। ‘‘একটু বেশি রাত হয়ে গেল গেমস ভিলেজে দলের বৈঠক শেষ করতে। আসলে কাল (শনিবার) তো শরৎ কমলের সঙ্গে মিক্সড ডাবলসের সেমিফাইনাল খেলতে নামব। ওখানে একটা পদক চাইছি। তাই আলোচনায় বসেছিলাম রণনীতি ঠিক করতে।’’ ডাবলসে এ দিন সোনা না জিততে পারার হতাশা দূরে সরিয়ে রেখে নতুন লক্ষ্যের কথা এ ভাবেই বলে দেন তেত্রিশ বছরের মৌমা। উল্টে তিনি বলে দেন, ‘‘আমরা একেবারেই খেলতে পারিনি। কোনও কিছুই ঠিক মতো হয়নি। ওঁরা অনেক ভাল খেলেছে। আমাদের চেয়ে ওদের রণনীতি ভাল ছিল। তাই সোনা না জেতার জন্য কোনও আক্ষেপ নেই আমার বা মণিকার। দলগত বিভাগে ওদের হারিয়েছিলাম। হয়তো একটু আত্মতুষ্টি এসে গিয়েছিল।’’
যাদের সঙ্গে খেলতে নেমেছিলেন মৌমা-মণিকা জুটি সেই সিঙ্গাপুরের ইউ মেনজিউ এবং ফেং তিয়ানওয়েই গত বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন গেমসে। দু’জনে বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে এখন ৪ এবং ১৩। মৌমারা হেরেছেন ১১-৫, ১১-৪, ১১-৫ ফলে। মৌমা বলছিলেন, ‘‘সোনা জেতার লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম। দলগত সোনা পেয়েছি। মেয়েদের ডাবলসেও তো কখনও পদক আসেনি গেমস থেকে। এটাও বড় প্রাপ্তি। আশা করছি ভারত আরও পদক পাবে।’’ জয়ন্ত পুশিলালের ছাত্রীর কথায় স্পষ্ট, দু’টো সোনা এবং একটা রুপো জেতার পরে কতটা উজ্জিবীত হয়ে রয়েছে টেবল টেনিস দল। শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালে শরৎ এবং মৌমা মিক্সড ডাবলসে কানাডার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারালেন। আরও একটি পদক জয় নিশ্চিত করলেন পুরুষদের ডাবলস জুটি শরৎ কমল ও জি সাথিয়ান ফাইনালে উঠে। মেয়েদের ডাবলসের তৃতীয় স্থান নির্ধারণের ম্যাচে সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় ও পূজা সহস্রবুদ্ধে জুটি অবশ্য হেরে গেলেন।
পাঁচ বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। দু’বার অলিম্পিক্সে নেমেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে দেড়শোরও বেশি পদক বাড়িতে। তাঁর সমসাময়িক বেশিরভাগ খেলোয়াড় অবসর নিয়েছেন অথবা পিছিয়ে পড়েছেন। এখনও আপনার এই পদক জয়ের খিদের রহস্য কী? প্রশ্ন শুনে হাসেন মৌমা। বলেন, ‘‘বয়স কোনও বাধা নয়। অনুশীলন করলে সাফল্য আসবে। সেটা প্রমাণ করতে চাই। এর পরের লক্ষ্য সুইডেনের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ।’’