বিরাটদের তিনে তিন করার যুদ্ধ

ডেথের জন্য আজ রাখা হোক ধোনি-যুবিকে

টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়ে চলেছেন ইংল্যান্ডের দুই বিশেষজ্ঞ ডেথ বোলার— ক্রিস জর্ডন ও টাইমাল মিলস। এক জনের ইয়র্কার আর অন্য জনের স্লোয়ার কী ভাবে সামলানো যেতে পারে বিশ্লেষণ করলেন দীপ দাশগুপ্ত।চিন্নাস্বামীতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চূড়ান্ত যুদ্ধের আগে অনেককেই প্রশ্নটা করতে শুনছি। ইংল্যান্ডের দুই পেসার নিয়ে প্রশ্ন, যারা কি না টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভাল রকম ভুগিয়ে চলেছে ভারতকে। আর প্রশ্নটাও খুব সহজ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

আজও কি আরও একবার দেখা যাবে এই ছবি!

চিন্নাস্বামীতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চূড়ান্ত যুদ্ধের আগে অনেককেই প্রশ্নটা করতে শুনছি। ইংল্যান্ডের দুই পেসার নিয়ে প্রশ্ন, যারা কি না টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভাল রকম ভুগিয়ে চলেছে ভারতকে। আর প্রশ্নটাও খুব সহজ।

Advertisement

ক্রিস জর্ডন আর টাইমাল মিলসকে ভারত সামলাবে কী করে?

কে সামলাবে?

Advertisement

জর্ডন নিয়ে প্রথমে বলি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বে ওকে খুবই উঁচু দরের পেসার হিসেবে ধরা হয়। ধরা উচিতও।

কারণ জর্ডনের বোলিংয়ের কাঁটাছেড়া করলে দেখা যাবে, ওর বোলিংয়ের পঞ্চাশ শতাংশ হয় ইয়র্ক লেংথে লো ফুলটস। অথবা স্লোয়ার। যে বোলার এটা ভাল রকম করতে পারে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার একটা বিশেষ জায়গা প্রাপ্য। টি-টোয়েন্টিতে ডেথ বোলিং একটা প্রবল গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আর তাই, ডেথে যে বোলার ভাল ইর্য়কার বা লো ফুলটস দিতে পারবে, স্লোয়ার দেবে, তার জায়গাটাই টিমে আলাদা হবে।

আমার মতে, জর্ডনকে খেলার সবচেয়ে ভাল উপায় হল ক্রিজের ভেতরে একটু ঢুকে দাঁড়ানো। বোলার যখন ইয়র্কার দেবে ঠিক করে, তখন সে ব্যাটসম্যানের ক্রিজে পজিশন দেখে। আর দেখে তার বুটের পজিশন। তাই ক্রিজে যদি একটু ভেতরে দাঁড়ানো যায়, তা হলে জর্ডনকে ধন্দে ফেলা যাবে। ও বুঝতে পারবে না, কোনটা ওর ইয়র্ক লেংথ হওয়া উচিত। আর এই ব্যাপারে ওকে খেলার সেরা লোক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।

অকাতর সেলফি। বেঙ্গালুরুতে মঙ্গলবার। -পিটিআই

ক্রিজকে খুব ভাল ব্যবহার করতে জানে এমএস। প্রয়োজনে এগিয়ে-পিছিয়ে বোলারকে বিভ্রান্ত করতে ওস্তাদ। তা ছাড়া ওর স্পেশ্যাল শট— হেলিকপ্টার শট। এমএস গত কয়েক বছরে যে ডেথে এত সফল, তার কারণ ওর ওই হেলিকপ্টার শট মারার ক্ষমতা। যা কি না ইয়র্কারকেও মাঠের বাইরে ফেলে দিতে পারে।

টাইমাল মিলস আর একজন। মিলসের সবচেয়ে বড় শক্তি হল, ওর দ্রুততম ডেলিভারি আর স্লোয়ারের মধ্যে গতির একটা বিশাল ফারাক রেখে দেওয়া। বোলারের ফাস্টেস্ট ডেলিভারি আর স্লোয়ারের মধ্যে যদি বিশাল গতির ফারাক না থাকে, ব্যাটসম্যানের পক্ষে কঠিন হয় না ম্যানেজ করা। বলতে চাইছি, কোনও বোলারের যদি দ্রুততম ডেলিভারিটা হয় ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার আর স্লোয়ারটা হয়, ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটার, ব্যাটসম্যান ম্যানেজ করে দেবে। কিন্তু মিলসেরটা দেখুন। ওর দ্রুততম ডেলিভারি হল ঘণ্টায় ৯৩ মাইল (প্রায় ১৫০ কিলোমিটার)। আর স্লোয়ার দেয় ঘণ্টায় ৬৬ মাইলে (১০২ কিলোমিটার)। মানে, প্রায় তিরিশ মাইলের তফাত! এখানেই ধোঁকা খেয়ে যায় ব্যাটসম্যানরা।

আর স্লোয়ারটা করেও বটে! মিলসের বিশেষত্ব হল, ওর স্লোয়ারটা ব্যাক অব দ্য হ্যান্ড থেকে আসে। তাতে আর্ম স্পিড একই রেখে স্লোয়ারটা দেওয়া যায়। ব্যাটসম্যানের পক্ষে বোঝা খুব, খুব কঠিন হয়ে যায়। স্লোয়ার দেওয়ার সময় আরও একটা ব্যাপার করে মিলস। বলটাকে সিমে ফেলে। তাতে পড়ে একটু বেশি বাউন্সও করে বলটা। ব্যাটসম্যানের পক্ষে টাইম করাটা তখন প্রায় দুঃসাধ্য দাঁড়ায়।

এবং ওকে সামলানোর সেরা লোক— যুবরাজ সিংহ। কিংবা রায়না। আমার মনে হয়, বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের সামনে পড়লে বাঁ-হাতি মিলসকে অতটাও ভয়ঙ্কর লাগবে না। যতটা লাগে ডানহাতিদের সামনে। দেখুন, একটা কথা এখনও বলা হয়নি। নাগপুরে এই দু’জনকে দারুণ লেগেছে ঠিকই, কিন্তু চিন্নাস্বামীতে অতটা না-ও লাগতে পারে। কারণ, নাগপুরের মাঠ বড়। প্লাস বাউন্ডারি লাইন আরও দশ গজ করে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চিন্নাস্বামীর মাঠ সেখানে বেশ ছোট। স্লোয়ার দিলে চিন্নাস্বামীতে অতটা কাজ না-ও করতে পারে। সে দিক থেকে সিরিজ ফয়সালার যুদ্ধে ভারতই কিন্তু কিছুটা এগিয়ে। তবু বলব, সাবধান হওয়া ভাল।

আজ যা-ই হোক, ডেথের জন্য ধোনি-যুবিকে রেখে দিও কোহালি! যতই হোক, আজ তো কোহালিদের তিনে তিন করার যুদ্ধ। টেস্ট, ওয়ান ডে-র পর এ বার যুদ্ধ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের।

আজ টিভিতে

ভারত বনাম ইংল্যান্ড
তৃতীয় টি-টোয়েন্টি, বেঙ্গালুরু
সন্ধে ৭-০০ | স্টার স্পোর্টস ১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন