বল হাতে মান বাঁচালেন। বুমরাহ: ১০-০-৪০-২।
এত দিন ধরে বিভিন্ন ফর্ম্যাটে বিভিন্ন অধিনায়কের কথা শোনা যেত। শনিবার সিডনিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানোর পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বলে দিলেন, ভারতের তিন ফর্ম্যাটে তিন ধরনের বোলিং আক্রমণ দরকার।
ধোনির সাফ কথা, ‘‘আমাদের একেবারে সাজিয়ে নিতে হবে কারা সেরা টি-টোয়েন্টি বোলার। কারা সেরা ওয়ান ডে বোলার। আর কারাই বা টেস্টে সেরা। এবং সে ভাবে আলাদা করতে হবে আমাদের বোলিং অ্যাটাক। একই বোলিং আক্রমণ তিন ফর্ম্যাটে রাখা চলবে না।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘টিম গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। গত বার যখন আমরা অস্ট্রেলিয়া সফরে এসেছিলাম আমাদের লাইন-আপ দারুণ ভাল ছিল না। তবু বিশ্বকাপে আমরা ভাল খেলেছিলাম বোলারদের পারফরম্যান্সের জন্য। আমাদের ব্যাটিং সব সময়ই জমাট। কিন্তু বোলিং বিভাগে সমস্যা হলেই বিপদে পড়ে যেতে হচ্ছে।’’
এ দিন অবশ্য অভিষেকে যথেষ্ট ভাল বল করে গেলেন জসপ্রীত বুমরাহ। ভারতীয়দের মধ্যে সেরা বোলার তিনিই। তবে নায়ক সেই ব্যাটসম্যানরা। প্রথমে রোহিত শর্মা এবং তার পরে নবাগত মণীশ পাণ্ডে এ দিন ম্যাচ নিয়ে চলে গেলেন। রোহিত সেঞ্চুরি ফস্কালেও জীবনের প্রথম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করে ভারতকে সিরিজের এক মাত্র ম্যাচ জেতালেন মণীশ।
ম্যাচ জিতে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের সিরিজে বিপর্যয়ের বিশ্লেষণে তিন ফর্ম্যাটে ভিন্ন বোলিং আক্রমণের প্রয়োজনের কথা বলেন ধোনি। টিম ইন্ডিয়ার দুই তরুণ ক্রিকেটার ঋষি ধবন এবং গুরকিরত মানের উপরও খুব একটা ভরসা রয়েছে ক্যাপ্টেনের বলে মনে হয়নি ধোনির কথায়। এ রকম উইকেটেও বড় রান তাড়া করতে নেমে কেন চালিয়ে খেললেন না প্রশ্ন করলে ধোনি বলেন, ‘‘ক্যানবেরায় যা হয়েছিল তার পর বড় শট খেলতে চাইনি। কারণ আমার পর গুরকিরত, জাডেজা আর ঋষি ধবন ছিল। আমার মনে হয়েছিল, আমি যখন সেট হয়ে গিয়ে বড় শট খেলতে পারছি না, তখন পরে নেমে ওরা কী ভাবে ওই সব শট খেলবে। তবে মণীশ সেট হয়ে গিয়েছিল। আর আমাদের দু’জনের কেউ আউট না হওয়াতে পার্টনারশিপটা দাঁড়িয়ে যায়।’’
এর পরেই ওঠে মণীশের কথা। আর ধোনি বলছেন, ‘‘মণীশ আজ যে ইনিংসটা এখানে খেলল, সেটা ওকে আরও ১০-১৫টা ম্যাচে খেলার সুযোগ করে দেবে। নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জমিয়ে বসাতে আপনাকে যে ক’টা ম্যাচ খেলতে হয় আর কী।’’
মণীশের পাশাপাশি বুমরাহ নিয়ে ভারত অধিনায়কের বক্তব্য, ‘‘এই ছেলেটার বোলিং ভুললেও চলবে না। দুর্দান্ত বোলিং করে গেল। নিজের প্রথম ম্যাচে শুরুতে নতুন বলে, তার পরে মাঝের ওভারে আর ডেথে, ব্যাটসম্যানদের উপর ক্রমাগত চাপ রেখে গেল। ওর বোলিং অ্যাকশনটা অদ্ভুত। এবং তার সঙ্গে বৈচিত্রও আছে। এই ধরনের বোলারদেরই বেশি করে এখন দরকার।’’
এরই মাঝে ফের উঠে এল ধোনির অবসর প্রসঙ্গ। আপাতত বেশ কিছু দিন ভারতের ওয়ান ডে ম্যাচ নেই। আবার সেই মে মাসে। তা হলে কি এটাই আপনার শেষ ওয়ান ডে? পরের সিরিজের আগে কি অবসর নিয়ে ফেলবেন? স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ধোনির পাল্টা, ‘‘আমার অবসর নিয়ে একটা জনস্বার্থ মামলা করুন না।’’
অস্ট্রেলিয়া: ফিঞ্চ এলবিডব্লিউ ইশান্ত ৬, ওয়ার্নার ক জাডেজা বো ইশান্ত ১২২, স্মিথ ক রোহিত বো বুমরা ২৮, বেইলি ক ইশান্ত বো ঋষি ৬, শন মার্শ রান আউট ৭, মিচেল মার্শ ন.আ. ১০২, ওয়েড ক ধোনি বো উমেশ ৩৬, ফকনার বো বুমরা ১, হেস্টিংস ন.আ. ২, অতিরিক্ত ২০। মোট ৩৩০-৭ (৫০ ওভারে)।
বোলিং: ইশান্ত ১০-০-৬০-২, উমেশ ৮-০-৮২-১, বুমরা ১০-০-৪০-২, ঋষি ১০-০-৭৪-১, জাডেজা ১০-০-৪৬-০, গুরকিরত ২-০-১৭-০। ভারত: রোহিত ক ওয়েড বো হেস্টিংস ৯৯, শিখর ক শন মার্শ বো হেস্টিংস ৭৮, কোহলি ক ওয়েড বো হেস্টিংস ৮, মণীশ ন.আ. ১০৪, ধোনি ক ওয়ার্নার বো মিচেল মার্শ ৩৪, গুরকিরত ন.আ. ০, অতিরিক্ত ৮। মোট ৩৩১-৪ (৪৯.৪ ওভারে)।