প্রোদুনোভা: দীপা কর্মকার। ফাইল চিত্র
আগামী এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলিয়ায় কমনওয়েলথ গেমসে তো নয়-ই। অগস্টে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসেও দেখা যাবে না তাঁর বিখ্যাত প্রোদুনোভা ভল্ট।
দু’টো টুর্নামেন্টেই ‘ভল্ট অব ডেথ’ দেওয়া হবে না রিও অলিম্পিক্সে আলোড়ন ফেলে দেওয়া দীপা কর্মকারের। গত ২ এপ্রিল হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তাঁর। সাত মাস ‘রিহ্যাবিলিটেশনে’ ছিলেন। তার পরেও ডাক্তারের পরামর্শে আরও প্রায় এক বছর প্রোদুনোভা অনুশীলন বন্ধ থাকবে দীপার। ফলে অদূর ভবিষ্যতে প্রোদুনোভা বাদে অন্য দু’টি ভল্ট নিয়েই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামতে হবে ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের তারকাকে।
অলিম্পিক্সের পরে দীপা আর প্রোদুনোভা প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। দুঃসাহসিক এই ভল্টকে অনেকে ‘দীপানোভা’ বলেও ডাকছিলেন। কেন বন্ধ হল প্রিয়তম সেই ভল্ট? আগরতলা থেকে দীপার কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী বললেন, ‘‘প্রোদুনোভা করতে গেলে পায়ে যে জোর দরকার হয়, অস্ত্রোপচারের পরে তা এখনও ওর আসেনি। ডাক্তাররা বলেছেন, তাড়াহুড়ো না করতে। আমরা ঠিক করেছি, এশিয়াডের পরে আবার প্রোদুনোভা অনুশীলন শুরু করব।’’
আরও পড়ুন: প্রহৃত রেফারি হাসপাতালে
দিল্লির শিবির শেষ করে মঙ্গলবারই আগরতলায় ফেরার কথা ছিল দীপার। কিন্তু সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আয়োজিত দৌড়ে অংশ নেওয়ার জন্য বিমানের টিকিট পিছোতে হয়েছে। দিল্লি থেকে দীপা বললেন, ‘‘প্রোদুনোভা ভল্ট-টা আমি করতে চাই ২০২০-তে টোকিও অলিম্পিক্সে। ওখানে পদক পাওয়াই আমার এখন প্রধান লক্ষ্য। ডাক্তার এবং কোচ যা বলবেন সেটাই করব।’’
এপ্রিলে মুম্বইয়ে শল্য চিকিৎসক অনন্ত জোশীর কাছে অস্ত্রোপচারের পরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নামতে পারেননি দীপা। তাতে অবশ্য দুঃখ নেই। দীপা বলছিলেন, ‘‘চোট তো খেলার অঙ্গ। আমি এখন সুস্থ। নভেম্বরেই জাতীয় শিবির বসবে দিল্লিতে। ওখানেই অনুশীলন শুরু করব। প্রোদুনোভার পরে ল্যান্ডিংটার জন্য অসম্ভব পায়ের জোর দরকার। ডাক্তার বললে তবেই সেটা শুরু করব।’’ কোচ বিশ্বেশ্বরের বক্তব্য, ‘‘নভেম্বরে অনুশীলনে ফিরলেও যদি পদক পাওয়ার মতো তৈরি হতে না পারে, তা হলে কমনওয়েলথেও নামবে না দীপা। এশিয়াডে সরাসরি নামবে।’’
প্রোদুনোভার বদলে আপাতত দীপা যে দু’টি ভল্ট দেবেন সেগুলি হল— ‘সুকাহারা ৭২০’ (এটি রিওতেও ছিল) ও হ্যান্ড স্প্রিং থেকে সোজা সমারসল্টের সঙ্গে ৫৪০ ডিগ্রি টার্ন। প্রিয় প্রোদুনোভা ভুলে আপাতত এই দু’টি ভল্টকেই পাখির চোখ করছেন আগরতলার মেয়ে।