Football

ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত এই টার্মগুলির মানে জানেন?

ফলস নাইন। শব্দটা প্রথম বহুল ভাবে প্রচারের আলোয় আসে পেপ গুয়ার্দিওলার আমলে। লিওনেল মেসিকে ফলস নাইন খেলিয়ে বিপুল সাফল্য পান বার্সা কোচ। এর পরই বিশ্বজুড়ে ফুটবল কোচদের আলোচনার কেন্দ্রে আসে এই ‘ফলস নাইন’। ম্যানুয়েল ন্যয়ারের দৌলতে আরও একটি টার্ম নিয়ে বছর দু’য়েক ধরে আলোচনা চলছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ১০:৪৩
Share:
০১ ১৫

ফলস নাইন: ফলস নাইন হল সেই ধরনের ফুটবলার যারা পুরোপুরি স্ট্রাইকার নয়। ন’নম্বর জার্সি সাধারণত সেন্টার ফরোয়ার্ডরা পরে থাকেন। এই সিস্টেমে মিডফিল্ডাররা নির্দিষ্ট কোনও ফুটবলারকে লক্ষ্য করে বল বাড়ায় না। আক্রমণে ওঠে নিজেরাই। ১৯৩০ সালে প্রথম ফলস নাইনের ব্যবহার করে অস্ট্রিয়া। ২০০৭ সালে প্রথম ফলস নাইনের সফল ব্যবহার করেন রোমা কোচ। ফ্রান্সিসকো তোত্তিকে ওই পজিশনে খেলিয়ে ব্যাপক সাফল্য পান। তবে সবচেয়ে সফল ভাবে ফলস নাইন প্রয়োগ করেন পেপ গুয়ার্দিওলা। মেসিকে ওই পজিশনে ব্যবহার করে একাধিক ট্রফি জেতে বার্সা।

০২ ১৫

ইনভার্টেড উইঙ্গার: এই পদ্ধতিতে দুর্বল পায়ের ফুটবলারকে সেই দিকের উইঙের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অর্থাত্ ডান পায়ের ফুটবলারকে খেলানো হয় লেফ্ট উইঙ্গার হিসাবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তি দেওয়া হয়, ওই উইঙ্গারের কাট করে ঢুকতে সুবিধা হয়। যার ফলে গোল করতে সুবিধা হয়। এই পদ্ধতিতে দুই বিশ্বসেরা টিম খেলে সাফল্য পেয়েছে। এক, বায়ার্ন মিউনিখ এবং দুই, রিয়াল মাদ্রিদ।

Advertisement
০৩ ১৫

মিডফিল্ড শাটলার: মিডফিল্ড শাটলারের প্রধান কাজ ডিফেন্স এবং আক্রমণের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা। সময় বুঝে আক্রমণ এবং ডিফেন্সকে সাহায্য করে এই পজিশনের ফুটবলাররা। এর জন্য প্রচণ্ড গতির ফুটবলার প্রয়োজন। তিন মিডফিল্ডার ফর্মেশনে এক জন এবং ডায়মন্ড সিস্টেমে ৪ মিডফিল্ডার ফর্মেশনে দু’জন মিডফিল্ড শাটলার থাকে।

০৪ ১৫

সেন্ট্রাল উইঙ্গার বা ফলস টেন: চিরাচরিত ১০ নম্বরের প্লেমেকার পজিশনে খেলেন না এঁরা। সামনে থাকা সেন্টার ফরোয়ার্ডকে বল বাড়ানোর বদলে এঁরা বল পেলে উইং দিয়ে খেলা তৈরির চেষ্টা করে। এর ফলে আক্রমণের জোর বাড়ে। ইন্টার মিলানে থাকার সময়ে ওয়েসলি স্নেইডারকে এই পজিশনে খেলিয়ে সাফল্য পান হোসে মোরিনহো।

০৫ ১৫

রেজিস্টা: এই পজিশনের ফুটবলারকে বলা হয় ডিপ লাইং প্লেমেকার বা কোয়ার্টার ব্যাক। ইতালিয়ান ফুটবলে এই পজিশনের ফুটবলারকে বলা হয় ডিরেক্টর। অর্থাত্ তিনিই খেলা পরিচালনা করবেন। এই পজিশনের ফুটবলারকে প্রচণ্ড গতিশীল না হলেও চলবে। বদলে তাঁর কাছ থেকে অসাধারণ গেম রিডিং সেন্স এবং পাস দেওয়ার ক্ষমতা আশা করা হয়। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে ধারাবাহিক রেজিস্টার নাম আন্দ্রে পির্লো।

০৬ ১৫

ফরোয়ার্ড ডেস্ট্রয়ার: রেজিস্টাদের প্রভাব কাটাতে ফরোয়ার্ড ডেস্ট্রয়ারদের ব্যবহার শুরু করেন কোচেরা। আসলে এঁরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার যাঁরা আক্রমণে ওঠেন। এই পজিশনে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে বিখ্যাততম অবশ্যই মার্কাস ফেলাইনি। এভার্টনে খেলার সময়ে ডেভিড মোয়েস তাঁকে এই পজিশনে খেলাতেন।

০৭ ১৫

সুইপার কিপার: গোলকিপারদের ক্ষেত্রে একটা কথা খুব শোনা যায়। তাঁরা নাকি পেনাল্টি বক্সের ‘মস্তান’। কিন্তু খেলার ধরনের সঙ্গে বদলে গিয়েছে সেই ধারণাও। এখন এসেছে সুইপার কিপার। গোলকিপার যে নাকি এক সঙ্গে ডিফেন্ডারও। যদিও গোল ছেড়ে বেড়িয়ে ডিফেন্সকে সাহায্য করার ঝুঁকি মারাত্মক বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই মুহূর্তে তর্কাতিত ভাবে বিশ্বের সেরা সুইপার কিপার জার্মানির ম্যানুয়েল নুয়ের।

০৮ ১৫

ক্যাটানেচ্চিও: ইতালীয় ভাষায় এই শব্দের মোটামুটি অর্থ দরজা বন্ধ করে রাখা। ঘর আগলে আক্রমণে যাওয়া কোচেরা এই পদ্ধতিতে দল সাজতে পছন্দ করেন। ৫-৪-১ এর এই ফর্মেশনের মূল লক্ষ্য থাকে কোনও ভাবেই গোল না খাওয়ার। এই পদ্ধতির প্রাচীনতম প্রমাণ মেলে ১৯৩০ সালে। পরে তা বিপুল জনপ্রিয়তা পায় ১৯৬০ সালে ইন্টার মিলানের হাত ধরে। ইতালি বহু ম্যাচ এই পদ্ধতিতে খেলে জিতেছে।

০৯ ১৫

টোটাল ফুটবল: টোটাল ফুটবলের জনক নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দল। ধারণাটি হল, কোনও ফুটবলারেরই নির্দিষ্ট কোনও পজিশন থাকবে না। বিপক্ষকে ধোঁকা দিতে ফুটবলাররা অনবরত পজিশন পাল্টাতে থাকেন। ১৯৭৪ বিশ্বকাপে এই ফর্মেশনে খেলে নেদারল্যান্ডস।

১০ ১৫

তিকিতাকা: বার্সেলোনা তথা স্পেনের একেবারে ঘরের সম্পত্তি তিকিতাকা। এই ফর্মেশনের মূল মন্ত্র হল ছোট ছোট পাস খেলে যতটা সম্ভব বল পজেশন বেশি রাখা। বল না পেয়ে ভুল করতে বাধ্য হয় বিপক্ষ। জোহান ক্রুয়েফ বার্সায় এই পদ্ধতির প্রথম সফল প্রয়োগ করেন। পরে তা স্পেনের জাতীয় দলে নিয়ে আসেন দেল বস্কি।

১১ ১৫

জোনাল মার্কিং: এই পদ্ধতিতে কোনও এক জন নির্দিষ্ট ফুটবলারকে বিপক্ষের নির্দিষ্ট কোনও এক জনকে মার্ক করার দায়িত্ব দেওয়া হয় না। বদলে প্রতি ফুটবলারকে একটি জোন বা অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিপক্ষের কোনও ফুটবলার ওই অঞ্চলে এলে সেই অঞ্চচলের দায়িত্বে থাকা ফুটবলারের দায়িত্ব তাঁকে মার্ক করার।

১২ ১৫

রাবোনা: এই মুভে ফুটবলার বলে শট নেন একটা পায়ের পিছনে অন্য পা থাকা অবস্থায়। এই কঠিন শট ফুটবলার তখনই নেন যখন তিনি বোঝেন বলটি তাঁর দুর্বল পায়ের দিকে রয়েছে। ডিফেন্সকে বোকা বানাতেও এই শট নেওয়া হয়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, সুয়ারেজ বা গ্যারেথ বেলরা রাবোনা নিয়েছেন বহু বার।

১৩ ১৫

রউলেট: ফুটবলের অন্যতম দর্শনীয় ড্রিবলিং রউলেট আসলে বলকে নিয়ন্ত্রণে রেখে এক পাক ঘুরে বিপক্ষকে চমকে দেওয়ার কৌশল। রউলেটের প্রথম সফল ব্যবহার করেন মাইকেল লাউড্রপ। পরে দিয়েগো মারাদোনা থেকে জিনেদিন জিদান, থিয়েরি অঁরি থেকে হালের মেসি বহু বার রউলেট প্রয়োগ করেছেন। এই মুভকে মার্সেইলও বলা হয়ে থাকে।

১৪ ১৫

ক্রুয়েফ টার্ন: কড়া মার্কিংয়ে থাকা ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দেওয়ার এই পদ্ধতি প্রথম প্রয়োগ করেন ডাচ মহাতারকা জোহান ক্রুয়েফ। ডিফেন্ডারকে বোঝানো হয় যেন স্ট্রাইকার বল পাস বা ক্রস করতে চাইছেন। একেবারে শেষ মুহূর্তে বলকে এক পা দিয়ে অন্য পায়ের দিকে টেনে নিয়ে বোকা বানানো হয় ডিফেন্ডারকে। ১৯৭৪ সালে ক্রুয়েফ এই পদ্ধতি প্রয়োগের পর তা রীতিমতো জনপ্রিয় হয় ফুটবলবিশ্বে।

১৫ ১৫

ইলাস্টিকো: ইলাস্টিকো এক ধরনের ফ্লিপ ফ্লপ পদ্ধতি যা দিয়ে ডিফেন্ডারদের বোকা বানানো হয়। ডিফেন্ডার যখন ভাবছে বল পাস করা হবে, তখনই এক পা থেকে অন্য পায়ে বল নিয়ে ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দেওয়া হয়। ১৯৭০ সালে সের্জিও এজিগো প্রথম এই মুভ প্রয়োগ করেন। এখন এই মুভ তারকা ফুটবলারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement