শামি নেই। দায়িত্ব বেড়ে গেল অশ্বিন-উমেশের।
মহম্মদ শামির চোট পেয়ে সফর থেকে ছিটকে যাওয়ার দিনেও ভারতীয় শিবিরে একটা স্বস্তি থেকে গেল। তা হল পরপর দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ জিতে ওয়ান ডে সিরিজের দিকে এগোতে পারছে তারা। যদিও ইয়ান চ্যাপেলের ভবিষ্যদ্বাণী, এ বারও মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের হতাশ হয়েই অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হবে, তবে জোড়া প্রস্তুতি ম্যাচ জেতার পর ভারতীয় শিবির আশাবাদী, ভাল কিছু নিয়েই সিরিজ শেষ করবে তারা।
তবে আগের দিন টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যে দাপট দেখান, শনিবার রোহিত শর্মা ও মণীশ পাণ্ডে ছাড়া আর কেউ তা দেখাতে পারলেন না। ৫০ ওভারের ম্যাচে ৬৪ রানে জয়ের কৃতিত্ব বরং বোলারদের। প্রথম ম্যাচে সফল বারিন্দর স্রান এ দিন শিকার না পেলেও ঋষি ধবন, রবীন্দ্র জাডেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর পটেলরা সেই ব্যর্থতা ঢেকে দিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে নিজের কলামে চ্যাপেল লেখেন, ভারতের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান কম। আর বাউন্সে ঠাসা উইকেটে পেসারদের অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের সামনে কঠিন পরীক্ষা। দু’দিক থেকেই ভারতকে পিছিয়ে রেখেছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। ‘‘ভারতীয় শিবিরে বড় নাম আছে ঠিকই। কিন্তু হোম টিমকে হারানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। প্রথম দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া মনস্তাত্বিক সুবিধা পাবেই।’’
শনিবারের প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে চ্যাপেলের প্রথম ধারণাটা কিছুটা ঠিকই মনে হয়েছে। এ দিন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারত ১৯-২ হয়ে যাওয়ার পর অবস্থা সামলান রোহিত (৬৭) ও রাহানে (৪১)। তার পর দায়িত্ব নেন মণীশ পাণ্ডে (৫৮)। পাণ্ডের সঙ্গে খেলে রবীন্দ্র জাডেজা (২৬) ২৪৯ তুলে দেন।
মঙ্গলবার থেকে যে ওয়ান ডে সিরিজ শুরু হচ্ছে, তাতে এই রানটা যে মোটেই যথেষ্ট নয়, তা প্রায় নিশ্চিত। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা সামাল দেওয়ার কাজটা ভাল ভাবেই সামলেছেন ভারতীয় বোলাররা। অশ্বিন-জাডেজা পিচের বাউন্স কাজে লাগিয়ে বিপক্ষকে বিপদে ফেলেছেন বারবার। বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত যিনি খেলেন, সেই উইকেটকিপার জোশ ইংলিশের স্ট্রাইক রেট ৮০.৯৫। শুরু থেকেই ঘনঘন আক্রমণ করে দলের তিন প্রধান স্পিনার ছয় উইকেট সমান ভাগে ভাগ করে নেন। পার্ট টাইম অফ স্পিনার গুরকিরাত সিংহও একটি উইকেট পান। বাকি তিন উইকেট দুই পেসার ঋষি ও উমেশের। ১৮৫-তে অল আউট ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া।
বোলারদের এই পারফরম্যান্সে যথেষ্ট আশাবাদী বোলিং কোচ ভরত অরুণের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দু-তিনজন বোলার রয়েছে, যারা ১৪০-এর উপর গতিতে বল করতে পারে। তার উপর আজ স্পিনাররা যে পারফরম্যান্স দেখাল, তাতে তো মনে হচ্ছে আমাদের বোলিং বিভাগ এ বার আসন্ন সিরিজে বিপক্ষের চিন্তার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। অপেক্ষা করুন, দেখুন কী হয়।’’
চ্যাপেল অবশ্য ভারতের ভাল অলরাউন্ডার না থাকার সমস্যাকে বড় করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন নিজের কলামে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রথম চার ব্যাটসম্যান দ্রুত ফিরে গেলে ভারতের ইনিংসকে দ্রুত এগোনর মতো ব্যাটসম্যান আর কেউ নেই। অস্ট্রেলিয়া বড় রান চাপিয়ে দিলে তাই ওরা বেশ ঝামেলায় পড়ে যাবে।’’ অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখার পর থেকে অবশ্য এই পরীক্ষার সামনে পড়তে হয়নি ধোনিদের।
শেষ পর্যন্ত না চ্যাপেল তত্ত্বেই সমস্যায় পড়তে হয় ভারতকে।
ছবি: এএফপি