ইস্টবেঙ্গলকে ট্রফি দিল মিরশাদের হাত

নির্ধারিত নব্বই মিনিটে কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু সেখানেও কোনও দলই গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে খেলা গড়ালে ৩-১ জিতে যায় ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৩
Share:

উৎসব: জিতে ‘ভাইকিং ক্ল্যাপ’ ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের। নিজস্ব চিত্র

আইএফএ শিল্ডের পরে মরসুমের দ্বিতীয় ট্রফি ঘরে এল ইস্টবেঙ্গলের। রবিবার কালিম্পঙে আয়োজিত জিটিএ চেয়ারম্যান’স কাপের ফাইনালে তারা হারাল কলকাতারই আর এক দল মহমেডান স্পোর্টিংকে।

Advertisement

নির্ধারিত নব্বই মিনিটে কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু সেখানেও কোনও দলই গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে খেলা গড়ালে ৩-১ জিতে যায় ইস্টবেঙ্গল। পেনাল্টি রুখে নায়ক কেরল থেকে খেলতে আসা লাল-হলুদ গোলরক্ষক মিরশাদ মিচু। প্রতিযোগিতার সেরাও তিনি। তবে ফাইনালের সেরা ফুটবলার হয়েছেন কলকাতা লিগের পরে এফসিআই থেকে ইস্টবেঙ্গলে খেলতে আসা ডিফেন্ডার বিকাশ সাইনি।

পাহাড়ে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন করে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ রঞ্জন চৌধুরী (সিনিয়র)। ম্যাচের পরে কালিম্পং থেকেই ফোনে তিনি বললেন, ‘‘দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে খেলতে এসেছিলাম আমরা। সেখানে পূর্ণশক্তির প্রথম দল নিয়ে খেলতে এসেছিল মহমেডান। প্রতিযোগিতার ফেভারিট ছিল ওরাই। সেই মহমেডানকে ফাইনালে হারিয়ে দারুণ লাগছে। কারণ, নানা প্রতিকূলতা সরিয়ে রেখে জিটিএ চেয়ারম্যান’স কাপে খেলতে এসেছিল ইস্টবেঙ্গল।’’

Advertisement

আসলে, কলকাতা লিগের পরে সেখানে ভাল খেলা বিভিন্ন দলের কয়েক জন ফুটবলারকে দলে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। লক্ষ্য ছিল, আই লিগের দল শক্তিশালী করা। কিন্তু লাল-হলুদ শিবিরের সিনিয়র দলের স্পেনীয় কোচ সেই সুজয় দত্ত, হীরা মণ্ডল, বিকাশ সাইনিদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ‘বি’ দলে। যেখানে ক্লাবের অ্যাকাডেমির ফুটবলারদের ভিড় বেশি। সেই দল নিয়েই উত্তরবঙ্গ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরছেন কোচ রঞ্জন চৌধুরী (সিনিয়র)। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত খেলল আমাদের গোলকিপার মিরশাদ। এ দিন মহমেডানের বেশ কয়েকটা গোলের সুযোগ ওর হাতেই আটকে যায়। টাইব্রেকারেও দুরন্ত খেলে রুখে দেয় পেনাল্টি। এই খেতাব জয়ের অন্যতম কারিগর আমাদের গোলকিপার। এই মুহূর্তে যা ফর্মে রয়েছে ও, তাতে জাতীয় দলে ডাক পেতেই পারে। ক্লাবের সিনিয়র দলে গোলকিপার সমস্যা রয়েছে। সেই দলে খুব দ্রুত ঢুকতে পারে মিরশাদ। আশা করি, ওর এই ফর্ম সিনিয়র দলের কোচকে আশ্বস্ত করবে।’’

যাঁকে নিয়ে এত প্রশংসা সেই মিরশাদ ফোনে বলছেন, ‘‘আমার বন্ধু জবি জাস্টিন গোল করে সিনিয়র দলকে জেতাচ্ছেন। আর গোলকিপার হিসাবে আমিও নিজের দায়িত্ব পালন করে খুশি। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে খেলাটা আমার কাছে গর্বের। জবির মতোই সিনিয়র দলের হয়ে আই লিগে ভাল খেলার স্বপ্ন দেখি। এই জয় উৎসর্গ করছি আমার বাবা আর ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের।’’

কালিম্পঙের মাঠে এ দিন প্রথমার্ধে সে ভাবে ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডান—কোনও দলকেই আক্রমণে যেতে দেখা যায়নি। তবে তার মধ্যেও খেলায় প্রাধান্য ছিল সাদা-কালো শিবিরের। এই সময় মহমেডানের ফিলিপ আজা, প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, পঙ্কজ মৌলাদের গোলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন মিরশাদ। এ ছাড়াও রক্ষণে কুম্ভ হয়ে লাল-হলুদ শিবিরের বিপদ সামাল দেন এফসিআই থেকে আসা ডিফেন্ডার বিকাশ সাইনি। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। তবে গোলের সামনে গিয়ে লাল-হলুদের ঝন্টু প্রসাদরা খেই হারিয়ে ফেলায় এগিয়ে যেতে পারেনি লাল-হলুদ শিবির। প্রথম সারির দল নিয়েও শেষ পর্যন্ত হারতে হওয়ায় হতাশ মহমেডান টিডি রঘু নন্দী। তিনি বলছেন, ‘‘প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করেও জিততে না পেরে খারাপ লাগছে। টাইব্রেকারে আমাদের দু’টো শট বাইরে যেতেই চাপটা বেড়ে যায়। তার পরেই মিরশাদ পেনাল্টি রুখে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন