বাগান বনাম বেঙ্গালুরু মহাম্যাচের আগে অন্য শিবিরের প্রধান ভরসা মুখোমুখি আনন্দবাজারের

ইস্টবেঙ্গল ভাল দল, তবে আসল লড়াই সুনীলদের সঙ্গে

তাঁর দল পুরো পয়েন্ট পাক, বা পয়েন্ট হারাক, আই লিগের সবচেয়ে বড় তারকা তিনিই। তাঁর টিমের সবচেয়ে বড় ভরসাও। মোহনবাগানের সেই ১৬ নম্বর সনি নর্ডি মুম্বই-পর্ব সেরে বেঙ্গালুরু অভিযানে যাওয়ার আগে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।

Advertisement

প্রীতম সাহা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৫
Share:

তাঁর দল পুরো পয়েন্ট পাক, বা পয়েন্ট হারাক, আই লিগের সবচেয়ে বড় তারকা তিনিই। তাঁর টিমের সবচেয়ে বড় ভরসাও। মোহনবাগানের সেই ১৬ নম্বর সনি নর্ডি মুম্বই-পর্ব সেরে বেঙ্গালুরু অভিযানে যাওয়ার আগে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে।

Advertisement

প্রশ্ন: মোহনবাগানের এখনও কোন জায়গায় উন্নতি দরকার বলে আপনি মনে করেন?

Advertisement

সনি: ধারাবাহিকতায়। অনেক সময় আমরা বিপক্ষকে খুব হালকা ভাবে নিয়ে ফেলি। সেটা বন্ধ করতে হবে। আমাদের সব ম্যাচ ডার্বি ধরে খেলতে হবে।

প্র: গতবার আপনাদের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন দলে বোয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ওঁর অভাব কি এ বার কোথাও অনুভূত হচ্ছে টিমে?

সনি: সেটা সময় বলবে। তবে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ওকে খুব মিস করি। বোয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে এখনও আমার রোজ কথা হয়। ও এখন ফ্রান্সে আর ফুটবল থেকে দূরে।

প্র: কর্নেল গ্রেনের সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া কি সত্যিই গড়ে উঠেছে?

সনি: মাত্র চারটে ম্যাচের বিচারে সেটা বলা কঠিন। তবে গ্লেন আসায় আমাদের দলের যে আরও শক্তি বেড়েছে তাতে তো কোনও সন্দেহ নেই। গতবার অ্যাটাকিং জোনে অনেক সময় আমি একা পড়ে যাচ্ছিলাম সাপোর্টিং স্ট্রাইকারের অভাবে। সেটা এ বার হচ্ছে না।

প্র: ডিফেন্সে বেলো রজ্জাকের জায়গায় লুসিয়ানোকে পাওয়া কতটা পার্থক্য ঘটিয়েছে?

সনি: সেটাও সময়ই বলবে। তবে স্টপার হিসেবে বেলো রক সলিড ছিল। ও পিছনে আছে মানে নিজেদের ডিফেন্স নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকা যেত।

প্র: গ্লেন-লুসিয়ানোর গড় বয়স ৩৬। মোহনবাগানের এখন সামনে যে রকম গায়ে-গায়ে টানা ম্যাচ, তাতে ওঁরা শেষ পর্যন্ত টানতে পারবেন তো?

সনি: ফুটবল বয়স নয়, মানসিক দৃঢ়তার খেলা। লুসিয়ানো আমায় বলেছে, এটাই ওর শেষ মরসুম। তার পর অবসর নেবে। যদিও আমার মতে ও আরও দু’-তিন মরসুম সহজেই খেলে দিতে পারে।

প্র: গতবারের চেয়ে এই মোহনবাগান আপনার চোখে কতটা শক্তিশালী? নাকি সেই চ্যাম্পিয়ন টিমটা বেশি ভাল ছিল?

সনি: আই লিগে যে কোনও টিমের শক্তি নির্ভর করে সঠিক স্বদেশি নির্বাচনের উপর। কেননা এগারো জনে বিদেশি তো মাত্র চার জন খেলতে পারে। তাই যদি স্বদেশিদের বিচার করা হয়, তা হলে আমি বলব এ বারও আমরা আই লিগ জিততে পারি। তবে আমার কাছে গতবারের টিমটা সেরা। এ বারের মোহনবাগান দল তো এখনও কোনও ট্রফি পায়নি।

প্র: কিন্তু আপনিও তো একটা সময় ক্লাবে সবাইকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন!

সনি: কেন? আমি ভূত না কি (হাসতে হাসতে)? সবাইকে ভয় দেখিয়ে বেড়াই।

প্র: ওই যে, মোহনবাগানে কখনও আপনি আসছেন আবার কখনও আসছেন না চলছিল?

সনি: না না, সে রকম কিছু নয়। আমি পেশাদার ফুটবলার। ভাল প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

প্র: আপনার কাছে কি অন্য ক্লাবের প্রস্তাব সত্যিই ছিল?

সনি: সত্যি, মেক্সিকোর একটা ক্লাবের সঙ্গে আমার চুক্তি প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। নিরানব্বই পার্সেন্টেজ সেখানেই যাব ঠিক। হঠাৎই মোহনবাগান এমন একটা প্রস্তাব দিল, আর ‘না’ করতে পারিনি।

প্র: আইএসএল থেকে আই লিগে সুইচ ওভার করা কত কঠিন?

সনি: আই লিগকে আমি ছোট করছি না। তবে আমার মতে আইএসএল অনেক বেশি কঠিন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি। টিমে ছ’জন বিদেশি খেলতে পারে। বিশ্বকাপারে ভরা টুর্নামেন্ট। প্রচুর কিছু শেখার যেমন সুযোগ পাওয়া যায়, তেমনই বেশি পরিশ্রমও করতে হয়।

প্র: এ বারের আই লিগে কোন টিম আপনাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে হচ্ছে?

সনি: ইস্টবেঙ্গল আর স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া বেশ ভাল টিম। তবে এ বারও আমাদের আসল লড়াই বেঙ্গালুরুর সঙ্গে। শনিবার ওদের মাঠে মোহনবাগানের ম্যাচটা তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার ধারণা, ওই দিন জিততে পারলে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে ষাট শতাংশ এগিয়ে যাব আমরা।

প্র: তা হলে বলছেন ওডাফা ওকোলি আপনাদের টেনশন কমিয়ে দিয়েছেন? বেঙ্গালুরুকে প্রায় একাই হারিয়ে দিয়ে!

সনি: (হাসতে হাসতে) প্রথমে ভেবেছিলাম ওকে একটা ফুলের তোড়া পাঠাব। তার পর ভেবে দেখলাম, ওর টিমও তো তাড়া করছে আমাদের। তাই আর পাঠাইনি।

প্র: মোহনবাগানকে ফের আই লিগ দিতে পারলে কী করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন কি কিছু?

সনি: (এক মুহূর্ত চুপ থাকার পর) অন্য ক্লাবের যত বড় প্রস্তাবই পাই না কেন, আবার মোহনবাগানেই খেলব তখন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন