ক্লাব তাঁবুতে এসে খালিদ শুনলেন অনুশীলন বন্ধ

কোচের জার্সি গায়ে তৈরি হয়ে মাঠে নামার আগে খালিদ শুনলেন, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক অনুশীলনই বাতিল করে দিয়েছেন। তার বদলে শনিবার জিম সেশন, জাকুজির ঠান্ডা জলে স্নান আর সভা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০৫:২০
Share:

কাছে-দূরে: খালিদ জামিল কবে অনুশীলনে নামবেন, তা নিয়ে মুখ বন্ধ সুভাষ ভৌমিকের। —ফাইল চিত্র।

প্যান্ট, জার্সি, বুট পরে তৈরি হয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত খালিদ জামিলের মাঠে নামা হল না শনিবারও।

Advertisement

কোচের জার্সি গায়ে তৈরি হয়ে মাঠে নামার আগে খালিদ শুনলেন, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক অনুশীলনই বাতিল করে দিয়েছেন। তার বদলে শনিবার জিম সেশন, জাকুজির ঠান্ডা জলে স্নান আর সভা হবে। সকাল আটটায় ক্লাব তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, আল আমনাদের নিয়ে তাঁবুর ভিতর সভা করছেন সুভাষ। আর খালিদ অন্য একটি ঘরে মোবাইল থেকে কিছু দেখে দেখে একটা কাগজে কী সব লিখছেন। বন্ধ দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই রীতিমতো চমকে উঠলেন কিছু দিন আগেও ডাকাবুকো মেজাজের খালিদ। মুখটা ম্লান, চিন্তিতও। শুধু বললেন, ‘‘আমি জানতাম অনুশীলন হবে। দাদা (পড়ুন সুভাষ) আজ জিম হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই অনুশীলন হবে না। সেটাই হচ্ছে। আমি কিছু বলব না, দাদার সঙ্গে কথা বলুন।’’ একই রকম অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গেল তাঁকে, যখন ফুটবলারদের জিমে পাঠিয়ে সুভাষ সটান কোচের ঘরে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ে প্রশ্ন করলেন, ‘‘কী রে খালিদ, কী করছিস। শরীর ঠিক আছে তো?’’ চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে উঠে ছিটকে সরে গেলেন খালিদ। সুভাষের পিছন পিছন হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছিলেন মিডিয়ার লোকজন। তা দেখে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন খালিদ। সুভাষ তাঁকে ডেকে নিয়ে পাশে বসালেন। ফোটোগ্রাফারদের ছবিও উঠে গেল। মিনিট পাঁচেক পর আলোচনা করে বেরিয়ে এলেন সুভাষ। খালিদ ফের দরজা বন্ধ করে দিলেন। জানা গেল, দুপুর বারোটার পরে সবাই চলে গেলে ক্লাব ছাড়েন খালিদ। তবে মজার ব্যাপার হল, প্রায় দু’ঘণ্টা ইউসা কাতসুমি, আল আমনা, অর্ণব মণ্ডলরা ড্রেসিংরুমে বা জিমে ছিলেন। কিন্তু একবারও তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়নি খালিদের। মাঝে মাঝে খালিদের বন্ধ ঘরে যাচ্ছিলেন তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ গোলকিপার কোচ পিটার সিদ্দিকি। তার পর এসে নানা রকম কাগজ পৌঁছে দিচ্ছিলেন সুভাষের হাতে। সুভাষকে বলতে শোনা গেল, ‘‘ওর আর কিছু জানার থাকলে যেন পাঠায়।’’ খবর নিয়ে জানা গেল, সুপার কাপের জন্য তাঁর পছন্দের ফুটবলারের তালিকা সুভাষের কাছে পাঠিয়েছেন খালিদ। তা খতিয়ে দেখছেন সুভাষ।

সুপার কাপের প্রস্তুতি প্রায় ছয় দিন হয়ে গেল, সুভাষ আর খালিদকে নিয়ে নাটক চলছেই। আই লিগে চার নম্বর হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তাই সুপার কাপ গুরুত্বপূর্ণ। অথচ দু’জনে এখনও একসঙ্গে মাঠেই নামতে পারলেন না। ফুটবলারদের সঙ্গেও টিম মিটিং করতে এখনও দেখা যায়নি দু’জনকে। যা অভিনব। বিশ্ময়করও।

Advertisement

এ দিন যে হঠাৎ-ই অনুশীলন বন্ধ হয়ে যাবে সেটা জানতেন না ফুটবলাররাও। সুভাষ বললেন, ‘‘মাঠের জন্য এদুয়ার্দো কাল চোট পেয়েছে গোড়ালিতে। এখানে কোনও ফুটবলার অনুশীলন করতে চাইছে না। তার উপর এ রকম বিশ্রী গরম। সে জন্যই মাঠে ফুটবলারদের নামাইনি। কাল থেকে সল্টলেকের মাঠে অনুশীলন হবে।’’ কিন্তু খালিদ রবিবার নামবেন কি না, তা নিয়ে রহস্য কাটেনি। খালিদ এ দিনও বললেন, ‘‘সুস্থ হলেই মাঠে নামব।’’

কোচের অসুস্থতা নিয়ে অবশ্য একটি শব্দও উচ্চারণ করতে চাইছেন না টিডি। তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিজের সিদ্ধান্তেই। ২ এপ্রিল ভুবনেশ্বর যাবে ইস্টবেঙ্গল। তাদের ম্যাচ ৫ এপ্রিল। কোন ৩০ জন যাবে সেটা যেমন ঠিক করছেন সুভাষ, তেমনই সকালে ফুটবলারদের নিয়ে সভাও করেছেন কোচকে বাদ দিয়েই। জিমে এবং জাকুজির পাশে চেয়ার নিয়ে বসে থেকে নজরদারি চালিয়েছেন তিনি। পারিবারিক সমস্যা সামাল দিতে ফিনল্যান্ডে গিয়েছেন ডুডু ওমাগবেমি। চোটের জন্য এদুয়ার্দো ফেরিরা আসেননি। বাকিরা সবাই এসেছেন। সুভাষের নির্দেশ মেনে কাজ করেছেন। খালিদ ব্রাত্যই থেকে গিয়েছেন গত পাঁচ দিনের মতোই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন