গোলের আশায় র্যান্টি-ডুডু জুটি।
ডার্বির ধাক্কায় ছিটকে পড়তে চলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচের ‘পছন্দের ফুটবলার’! মহম্মদ রফিকের বদলে মঙ্গলবার পাহাড়ে হয়তো শুরু থেকে খেলবেন কেভিন লোবো। তবে লোবো খেললেও রয়্যাল ওয়াহিংডো ম্যাচে মাঝমাঠে অভিজ্ঞ মেহতাব হোসেনকে পাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। ডান পায়ের পেশিতে চোট। অন্তত চার-পাঁচ দিন বিশ্রামে থাকতে হবে তাঁকে। সোমবার শিলং থেকে অধিনায়ক খাবরা বলছিলেন, ‘‘আই লিগে চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে আমাদের এই ম্যাচটা জিততেই হবে।’’
খাবরা আত্মবিশ্বাসী। তা সত্ত্বেও কাজটা যে সহজ, সেটাও নয়। একে তো রয়্যাল ওয়াহিংডোর এটা হোম ম্যাচ। তার উপর আগের ম্যাচে করিম বেঞ্চারিফার পুণে এফসি-কে হারিয়ে আরও বেশি ছটফট করছে সন্তোষ কাশ্যপের দল। আর সেটা করাও অস্বাভাবিক নয়! ইস্টবেঙ্গল যেখানে এই ম্যাচ জিতলে লিগে চারে উঠে আসবে, সেখানে ওয়াহিংডো জিতলে পুণেকে পিছনে ফেলে লিগের ‘সেকেন্ড বয়’ হয়ে যাবে (একই দিনের বেঙ্গালুরু-স্পোর্টিং ম্যাচের ফলের উপরও অবশ্য নির্ভরশীল)।
হয়তো সে কারণেই ওয়াহিংডো কোচ সন্তোষ বলছিলেন, ‘‘আমরা এখন আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছি। আগের ম্যাচটা আমরা পুরো ডমিনেট করেছি। যে রকম পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম, ছেলেরা ঠিক সে রকম ভাবেই সংগঠিত হয়ে খেলেছে। আমার আশা ওই স্বপ্নের দৌড়টা ইস্টবেঙ্গল ম্যাচেও আমাদের টিম ধরে রাখতে পারবে।’’
এহেন ওয়াহিংডো ঘরের মাঠে যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে সেটা হয়তো আঁচ করেই রবিবারই স্টেডিয়ামে বিপক্ষকে মেপে আসেন এলকো। একই সঙ্গে মন দিয়ে নোট তুলে রেখেছেন করিম বনাম সন্তোষ—দুই প্রাক্তন বাগান কোচের ভেতর হওয়া আগের ম্যাচ থেকে। লাল-হলুদ টিম সূত্রের খবর, ওয়াহিংডোকে কাউন্টার অ্যাটাকে বিঁধতে চাইছেন এলকো। করিমের পুণের বিরুদ্ধে কয়েক বার বহু নাকি দেখা গিয়েছে ওয়াহিংডোর আক্রমণের সময় কিন্তু পিছনে তাদের ডিফেন্স ফাঁকা পড়ে থাকছে। তাই মঙ্গলবার কেভিনকে বিপক্ষের সেই দুর্বল জায়গায় ব্যবহার করে ধাক্কা দিতে চাইছেন এলকো।
এ সবের পরেও অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের একটা দুশ্চিন্তা, ডুডুর গোল-খরা চলতেই থাকা। র্যান্টি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকলেও তাঁর সতীর্থ ডুডু প্রথম দশেও নেই। এ দিন তাই বিকেলে প্রায় আড়াই ঘণ্টার লম্বা অনুশীলনে ডুডুর দিকেই বেশি নজর দেন লাল-হলুদ কোচ। নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার যাতে হারানো ফর্ম আবার ফিরে পান, সে জন্য ফাঁকা গোলেই শ্যুটিং প্র্যাক্টিস করালেন। ইস্টবেঙ্গলের আরও এক সমস্যা, এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত শিলংয়ে খেলেনি তারা। ফোনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লাল-হলুদ ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় দমের। সেটা একবার মানিয়ে নিতে পারলে আর কোনও অসুবিধা হবে না। তবে মানাতে হবে।’’
ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তুতিতে খামতি নেই। এখন চাপ সামলে পাহাড়-জয় করতে পারে কি না এলকো-বাহিনী, সেটাই দেখার। আজও জিততে না পারলে লিগ জয়ের দৌড় থেকে কিন্তু অনেকটাই ছিটকে পড়বেন র্যান্টিরা। সেটা এমনকী পাহাড় থেকে পড়ার মতোও হতে পারে!
মঙ্গলবারে
আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : রয়্যাল ওয়াহিংডো (শিলং, ৪-৩০)