সাড়ে ছ’ফুটের বেটেকে ঘিরে হঠাৎ গরম প্র্যাকটিস

নামে কীই বা আসে যায়! উচ্চতায় সাড়ে ছ’ফুট। কিন্তু রজার মিল্লার দেশ থেকে আসা আটলেটিকো দে কলকাতা-র গোলকিপারের নাম কি না বেটে! আর এই আপুলা এদেল বেটে-কে নিয়েই হঠাৎ অশান্ত আইএসএলে কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজি শিবির! সঙ্গে খোঁচা মারছে কলকাতার গরম, আর্দ্রতা, যুবভারতীর কৃত্রিম মাঠ। এ সব নিয়েও অবশ্য আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কলকাতার আটলেটিকো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৯
Share:

এদেল বেটে। যাঁকে নিয়ে বিতর্ক।

নামে কীই বা আসে যায়!

Advertisement

উচ্চতায় সাড়ে ছ’ফুট। কিন্তু রজার মিল্লার দেশ থেকে আসা আটলেটিকো দে কলকাতা-র গোলকিপারের নাম কি না বেটে!

আর এই আপুলা এদেল বেটে-কে নিয়েই হঠাৎ অশান্ত আইএসএলে কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজি শিবির! সঙ্গে খোঁচা মারছে কলকাতার গরম, আর্দ্রতা, যুবভারতীর কৃত্রিম মাঠ। এ সব নিয়েও অবশ্য আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কলকাতার আটলেটিকো।

Advertisement

বেটেকে নিয়ে কী ঘটেছিল মঙ্গলবার? সকাল আটটায় যুবভারতীতে অনুশীলন ছিল তাঁর দলের। সংবাদমাধ্যমের দেখার জন্য সময় ধার্য ছিল প্র্যাকটিস শুরুর প্রথম কুড়ি মিনিট। জগিং সেরে সবে পাসিং প্র্যাকটিস শুরু হয়েছে ক্লাইম্যাক্স, বলজিৎ, গার্সিয়াদের। তখনই সেন্ট্রাল সার্কেলে পাস দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু গোলকিপার বেটে এবং স্প্যানিশ মিডিও হোফ্রে মাতিউয়ের। দু’জনেই দু’জনের দিকে তেড়ে যান। হাতাহাতির উপক্রম। বড় কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই দু’জনের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েন টিমের ইথিওপিয়ান স্ট্রাইকার ফিকরু তেফেরা। উত্তেজিত দুই বিদেশি সতীর্থকে শান্ত করতে এগিয়ে আসেন বলজিৎ, কেভিন লোবোরাও। অতঃপর ঘটনাস্থলে কোচ হাবাস এসে দু’জনকেই বোঝানোর পর পরিস্থিতি আয়ত্বে আসে। প্র্যাকটিস শেষে দু’জনই শান্ত ভাবে টিম বাসেও ওঠেন। তবে মাঠে কেউই কারও সঙ্গে আর কথা বলেননি।

টিম সূত্রে খবর, বিকেলে জিম এবং সুইমিং সেশনেও এই দুই ফুটবলার একসঙ্গেই ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিমের কেউ কেউ রসিকতা করে বলেন, “সকালে ওদের মধ্যে যা হয়েছে সেটা ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। দিনের শেষে আমরা একটা পরিবারের মতো। সেখানে কোনও অশান্তি নেই। আমরা সকলেই ফোকাস করছি রবিবারের মুম্বই ম্যাচের জন্য।”

ঘরের মাঠে আইএসএলের ঢাকে কাঠি পড়ার দিনেই তিন পয়েন্ট পকেটে পুরে ফেলতে তাই চেষ্টার খামতি নেই টিমে। সহকারী কোচ ব্যারেটো পুজোর মধ্যেই শহর ছেড়ে বেরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বেশ কয়েকটি টিমের প্রস্তুতি গোপনে দেখে এসেছেন। যার রিপোর্ট ব্যারেটো ইতিমধ্যেই কোচের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে খবর। যার ভিত্তিতে প্রথম ম্যাচের পাঁচ দিন আগেই রণকৌশল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলাভঙ্গ যাতে না হয়, তার জন্যও রাজারহাটের হোটেলে সতর্ক নজর রাখছেন কোচ। এত দিন বাড়ি থেকে যাতায়াত করলেও মঙ্গলবার রাতে হোটেলে ঢুকে পড়লেন ব্যারেটোও।

কোচের শ্যেন দৃষ্টির সামনে গার্সিয়াদের প্র্যাকটিস। মঙ্গলবার যুবভারতীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

তবে শহরের গরম আর আর্দ্রতা। কপালের ভাঁজ বাড়াচ্ছে হাবাসের। কলকাতার আবহাওয়ায় কিছুটা কাবু হয়ে পড়েছেন দলের ইউরোপের ফুটবলাররা। গার্সিয়া, হোফ্রে, পদানিরা অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বাড়তি সোডিয়াম বেরিয়ে যাওয়ার জন্য চিন্তিত। যা প্রতিরোধ করতে ফুটবলারদের ইলেকট্রোলাইট সলিউশন দেওয়া হচ্ছে। যদিও দলের ম্যানেজার রজত ঘোষ দস্তিদার বলছেন, “মাঠ এবং আবহাওয়ার ব্যাপারটাকে বরং আমরা ইতিবাচক ফ্যাক্টর হিসেবেই দেখছি। কারণ কলকাতায় খেলায় সময় বিপক্ষও তো একই সমস্যায় ভুগবে। সেখানে আমরা বেশি খাপ খাইয়ে নিতে পারলে সুবিধা কলকাতার দলেরই।”

দু’দিন আগেই প্রস্তুতি ম্যাচে তিন গোল হজম করেছিল হাবাসের দল। তাই গোলকিপারদের প্র্যাকটিসে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ফুটবলের সঙ্গে টেনিস ও রাগবি বল, বক্সিং গ্লাভসও হাজির। রিয়াল মাদ্রিদের কোস্তারিকান কিপার কেলর নাভাস যেমন টেনিস বল নিয়ে প্র্যাকটিস করতেন ঠিক সে ভাবেই প্র্যাকটিস চলছে শুভাশিস রায়চৌধুরীদের। দলের ম্যানেজার প্রাক্তন জাতীয় গোলকিপার রজত বলছেন, “নতুন কিছু নয়। জাতীয় দলে খেলার সময় কনস্ট্যানটাইনের কাছেও ঠিক এ ভাবে প্র্যাকটিস করেছি। এতে রিফ্লেক্স ভাল হয়।”

দেশের আরও দুই প্রাক্তন গোলকিপারও এর মধ্যে নতুনত্ব দেখছেন না। ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “রিফ্লেক্স ভাল করার সঙ্গে গ্রিপিংটাও কিন্তু দেখতে হবে।” আর তনুময় বসু বলছেন, “টেনিস, রাগবি বল, বক্সিং গ্লাভস দিয়ে শ্যাডো প্র্যাকটিস হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খেলতে তো হবে ফুটবল নিয়েই। ‘ছায়া অনুশীলন’ না করে ফুটবলের সঙ্গে একাত্ম হোক কিপাররা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন