চাণক্যের চোখে
Euro Cup 2020

এই ইংল্যান্ডকে ভয়ঙ্কর লাগছে

জার্মানির বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর থেকেই বারবার মনে হচ্ছে, ইউরোপ সেরা হবে ইংল্যান্ড।

Advertisement

ট্রেভর জেমস মর্গ্যান

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ০৫:৪৮
Share:

সফল: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে দলের চতুর্থ গোল করে হেন্ডারসন। রয়টার্স

ইউরো ২০২০

Advertisement

ইউক্রেন ০ ইংল্যান্ড ৪

ইংল্যান্ডে থাকলে এই ম্যাচটা দেখতে রোমে চলে যেতাম। অলিম্পিক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে জাতীয় পতাকা কাঁধে জড়িয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ২৫ বছর পরে ইউরোর শেষ চারে ওঠার উৎসবে মেতে উঠতাম। কিন্তু আমি এখন কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অস্ট্রেলিয়ায়। পারথের স্থানীয় সময় রাত তিনটেয় একা টেলিভিশনের সামনে বসেই দেখলাম হ্যারি কেনদের দুর্দান্ত জয়। এ বার
চলো ওয়েম্বলি।

Advertisement

জার্মানির বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর থেকেই বারবার মনে হচ্ছে, ইউরোপ সেরা হবে ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেট দলটা খুব সুন্দর ভাবে গড়ে তুলেছে। রক্ষণ থেকে আক্রমণভাগ, সব বিভাগেই দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। চিন্তা হচ্ছিল হ্যারি গোল না পাওয়ায়। শেষ ষোলোর ম্যাচে ইংল্যান্ড অধিনায়ক গোল পাওয়ার পরে সেই সমস্যাও
মিটে গিয়েছে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সাউথগেটের প্রথম একাদশ নির্বাচন দেখেই মনে হয়েছিল একাধিক গোলে জিততে পারে ইংল্যান্ড। বুকায়ো সাকা চোটে ছিটকে যাওয়ায় প্রথম দলে রয়েছে আমার প্রিয় ফুটবলার জাডন স্যাঞ্চো। এ ছাড়াও কিয়েরান ট্রিপিয়ারের পরিবর্তে খেলছে মেসন মাউন্ট। এর ফলে ইংল্যান্ডের আক্রমণের শক্তি আরও বেড়েছে। চার মিনিটের মধ্যেই হ্যারি গোল করে এগিয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে। বাঁ-দিক থেকে কাট করে ভিতরে ঢুকে রাহিম স্টার্লিং পাস দেয় হ্যারিকে। বিপক্ষের গোলরক্ষকের সামনে থেকে ডান পায়ের নিখুঁত ছোঁয়ায় বল জালে জড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ড অধিনায়ক। অনবদ্য গোল।

দুর্দান্ত স্ট্রাইকারও পরপর কয়েকটা ম্যাচে গোল করতে না পারলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে। তার আত্মবিশ্বাস ফেরানোর জন্য কোচেরা অনুশীলনে ফাঁকা গোলে বল মারার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে বলেন, আমি জানি, তোমার গোলে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইউরো ২০২০-র গ্রুপ পর্বে হ্যারি একটাও গোল করতে পারেনি। সাউথগেট কিন্তু ওর দলের এক নম্বর স্ট্রাইকারের পাশে সব সময় ছিল। জার্মানির বিরুদ্ধে গোল করে হ্যারি আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বুঝিয়ে দিল কতটা ভয়ঙ্কর। এই ফুটবলই ওর থেকে আশা করে ইংল্যান্ডের সমর্থকেরা।

হ্যারির প্রথম গোলের পরে ইংল্যান্ড হঠাৎ করেই একটু রক্ষণাত্মক হয়ে পড়েছিল। তাই আর গোল হয়নি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পরে আমার মনে হচ্ছিল, আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলা উচিত ইংল্যান্ডের। তা হলেই ভেঙে পড়বে ইউক্রেনের যাবতীয় প্রতিরোধ। বিরতিতে সাউথগেটও নিশ্চয়ই ড্রেসিংরুমে একই নির্দেশ দিয়েছিল স্টার্লিংদের। তাই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যেই লুক শ-এর ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁইয়ে ২-০ করে হ্যারি ম্যাগুয়ের। চার মিনিটের মধ্যে ফের গোল। বাঁ-প্রান্ত থেকে তোলা লুকের সেন্টার দুরন্ত হেডে জালে জড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ৬৩ মিনিটে কেভিন ফিলিপসের ফ্রি-কিক থেকে হেড করে ইংল্যান্ডকে ৪-০ এগিয়ে দেয় পরিবর্ত হিসেবে নামা জর্ডান হেন্ডারসন। তবে আমি মনে করি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শনিবার হ্যাটট্রিকও করতে পারত হ্যারি। দুর্ভাগ্য, ওর শট গোলে ঢোকার আগে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় বাঁচিয়ে দেয় ইউক্রেনের গোলরক্ষক।

ওয়েম্বলিতে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে নিশ্চয়ই হ্যারি আমার আশা পূরণ করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন