Wasim Jaffer

হ্যাঁ আমি নমাজ পড়ি, কিন্তু ক্রিকেটকে অবহেলা করে নয়, পাল্টা তোপ ওয়াসিম জাফরের

২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অভিযোগগুলোর সোজা ব্যাটে জবাব দিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনার।

Advertisement

সব্যসাচী বাগচী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৫৮
Share:

ভগ্ন হৃদয়ে সব অভিযোগের জবাব দিলেন ওয়াসিম জাফর। ফাইল চিত্র

মঙ্গলবারই উত্তরাখণ্ড দলের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ওয়াসিম জাফর। কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন ‘ব্যাক্তিগত’। কিন্তু তার পরেই উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার সচিব মহিম ভার্মা জাফরের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামির অভিযোগ তোলেন প্রকাশ্যে। শুধু তাই নয়, মহিম ভার্মার আরও অভিযোগ ছিল অনুশীলনের সময় জাফরের নমাজ পড়া দলের ক্ষতি করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অভিযোগগুলোর সোজা ব্যাটে জবাব দিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডিজিটালকে জাফর বলেন,“ হ্যাঁ আমি নমাজ পড়ি। তবে নমাজ পড়তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় তো লাগে না। ক্রিকেটের ক্ষতি হয় না। এটা কয়েক মিনিটের ব্যাপার। আমি কিন্তু ক্রিকেটের ক্ষতি করিনি। কারণ ওয়াসিম জাফরকে একজন মুসলমান নয়, সবাই ভারতের একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার হিসেবেই সম্মান করে। শুধু উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার গুটিকয়েক নির্বোধ কর্তা ছাড়া।” এর পরেই যোগ করলেন, “সেই দলে যে কয়েকজন মুসলমান ছেলে ছিল। তাদের নিয়ে তো ড্রেসিংরুমেই নমাজ পড়ে নিতাম। শুধু শুক্রবার দলের অনুমতি নিয়ে মাঠের ধারে নমাজ পড়তাম। এতে ভুল কোথায়! আমি সাম্প্রদায়িক হলে তো সামাদ ফালহাকে লাগাতার খেলিয়ে যেতাম। প্রতিদিন দুপুর ১২টার আগে অনুশীলন বন্ধ করে দিতাম! সেগুলো কিন্তু করিনি। কারণ ক্রিকেট আমার কাছে সবকিছু।”

মুম্বইকে একাধিকবার রঞ্জি জিতিয়েছেন। দেশের হয়ে ৩১টা টেস্ট খেলেছেন। রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিশতরান। কেরিয়ারের শেষ দিকে লাগাতার দুবার বিদর্ভ দলকেও করেছেন দেশের সেরা। ক্রিকেটকে এত কিছু দেওয়ার পরেও এমন অসম্মান হজম করতে পারছেন না। তাই বেশ আক্ষেপের সঙ্গে বললেন, “আমার বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ করা হল। আমিও কিন্তু দেশের জন্য খেলেছি। সচিন, দাদা (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়), রাহুল, লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ কি করতে পারত! এর চেয়ে অসম্মান ও দুঃখের কিছু হতে পারে না।”

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল তিনি নাকি জোর করে ইকবাল আবদুল্লাকে অধিনায়ক করতে চেয়েছিলেন। এই বিষয়ে জাফরের জবাব, “আমি নাকি ইকবাল আবদুল্লাকে অধিনায়ক হিসেবে চেয়েছি। এটা পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ। জয় ভিস্তাকে অধিনায়ক করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রিজুয়ান শামশাদ ও বাকি দুই নির্বাচক ইকবালকে দলের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিল। ইকবাল দলের সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার। আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাই ওদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। এখন এই বিষয় নিয়ে আমার ধর্মকে টেনে আনা হচ্ছে। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”

অনুশীলনের সময় জৈব বলয় ভেঙে মৌলবীদের ডেকে এনে নমাজ পড়তে ব্যস্ত থাকতেন জাফর, এই অভিযোগকেও অস্বীকার করলেন রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। প্রাক্তন ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বক্তব্য, “একটা কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিই যে মৌলবীরা কিন্তু আমার কথায় আসেননি। দলের ম্যানেজারের অনুমতি নেওয়ার পর ইকবাল ওই মৌলবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তার পর ওঁরা দুই-তিনবার আসেন। তাই এখানে আমাকে জড়ানোর কোনও প্রশ্নই আসে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন