জবাব নয়, শুধু কাজটা করেছি
Wriddhiman Saha

‘ক্রিকেট ঈশ্বরের’ প্রশংসায় আপ্লুত ঋদ্ধিমান

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বঙ্গসন্তানের ব্যাটিং মুগ্ধ করেছে স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকরকেও। তিনি নিজে কী ভাবছেন?

Advertisement

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

শাসন: মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ঋদ্ধিমান সাহার দাপট। মঙ্গলবার রাতে। আইপিএল

তাঁর দাপটে আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছে কেকেআর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বঙ্গসন্তানের ব্যাটিং মুগ্ধ করেছে স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকরকেও। তিনি নিজে কী ভাবছেন? দুবাই থেকে ভিডিয়ো কলে আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনের কথা খুলে বললেন ঋদ্ধিমান সাহা। সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে আইপিএল প্লে-অফে তোলার পরের দিন।

Advertisement

প্র: বলা হচ্ছে, বাংলার ব্রাত্য ক্রিকেটারদের হয়ে কেকেআরকে জবাব দিলেন আপনি। কী বলবেন?

ঋদ্ধিমান: আমার কাউকে কিছু জবাব দেওয়ার নেই। আমি দায়বদ্ধ শুধু সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের কাছে। আমাকে একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেটা পূরণ করতে পেরে ভাল লাগছে। দলকে প্লে-অফে তুলতে পারাটাই আমার প্রাপ্তি।

Advertisement

প্র: কলকাতার হারা বা জেতা নিয়ে কোনও বিশেষ অনুভূতি?

ঋদ্ধিমান: না, না। একেবারেই কিছু নেই। পেশাদার ক্রিকেটাররা এ ভাবে কিছু ভাবে না। যখন কেকেআরের হয়ে খেলতাম, তখন ওই দলটাই আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল। তার পরে চেন্নাইয়ে যাই, পঞ্জাবে যাই। এখন হায়দরাবাদের সঙ্গে আছি। যখন যে দলে আমি খেলি, তার ভালমন্দই শুধু ভাবি। অন্য দলকে নিয়ে নয়।

প্র: সচিন তেন্ডুলকর বলেছেন, আপনার গায়ে ‘টেস্ট ম্যাচের ক্রিকেটার’ তকমাটা লাগিয়ে দেওয়া খুব বড় ভুল। আপনি সাদা বলের ক্রিকেটেও দুরন্ত ব্যাট করেন। আপনার কী মনে হয়?

ঋদ্ধিমান: (হেসে) ক্রিকেটের ঈশ্বর যখন আমার সম্পর্কে এ কথা বলেছেন, তখন আমি কী করে অন্য রকম কথা বলব, বলুন!

প্র: শেষ তিনটে ইনিংসের (৮৭, ৩৯, অপরাজিত ৫৮) মধ্যে দিয়ে নির্বাচকদের কোনও বার্তা দিলেন?

ঋদ্ধিমান: কাউকে বার্তা দেওয়ার জন্য খেলছি না, খেলছি দলকে জেতানোর জন্য। আমার লক্ষ্য সানরাইজ়ার্সকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যে কাজটা করতে পারি, সেটাই করছি।

প্র: ভারতের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন দেখেন?

ঋদ্ধিমান: আমি ক্রিকেটার, ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার চেয়ে গর্বের ব্যাপার আর কী হতে পারে। তা যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই হোক না কেন। তবে ওই যে বললাম, কোথায়, কখন সুযোগ পাব, সে ব্যাপারটা আমার হাতে নেই। আমি শুধু পারফর্ম করতে পারি।

প্র: তিনটে ইনিংসের কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন?

ঋদ্ধিমান: অবশ্যই দিল্লির বিরুদ্ধে ইনিংসটা (৪৫ বলে ৮৭)। প্রথমত, ওই ম্যাচটা মরণ-বাঁচন পরিস্থিতি ছিল। তার উপরে আমি অনেক দিন বাদে সুযোগ পেয়েছিলাম। ওই ম্যাচে ভাল খেলাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যা করতে চেয়েছিলাম, ঠিকঠাক হয়ে যায়। যে ব্যাটটায় খেলছি, সেটায় রঞ্জি ফাইনালেও রান (৬৪) পেয়েছিলাম।

প্র: অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার বা টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে কী পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল?

ঋদ্ধিমান: বলা হয়েছিল, প্র্যাক্টিসে যে ভাবে শট খেলো, মাঠে নেমেও তাই করো। বল তুলে মারতে পারি বলে প্রথম ছ’ওভারে সেটা করতে চেয়েছিলাম। স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে বলা হয়েছিল। উল্টো দিকে ওয়ার্নার ছিল। ও বার বার বলেছে, চাপ না নিয়ে খোলা মনে খেলতে। আর কোচ ট্রেভর বেলিস বলেন, অতীতে কী হয়েছে ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করো।

প্র: মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সূর্যকুমারকে স্টাম্পিং না হাফসেঞ্চুরি— কোনটা এগিয়ে রাখবেন?

ঋদ্ধিমান: সূর্যকে স্টাম্পিং। খুব কম সময় পেয়েছিলাম স্টাম্পিংটা করতে। তা ছাড়া সূর্য খুব ভাল ফর্মে ছিল। ও যদি আরও কিছুটা সময় উইকেটে থাকত, তা হলে মুম্বই হয়তো ১৮০-১৯০ রানও তুলে দিত। সেটা তাড়া করা আর একটু চ্যালেঞ্জের হত। ওই সময় সূর্যকে ফিরিয়ে দেওয়াটা খুব দরকার ছিল।

প্র: বেয়ারস্টোর জায়গায় আপনি খেলছেন। ওঁর সঙ্গে কথা হয়?

ঋদ্ধিমান: অবশ্যই। ও ভাল খেললে আমি যেমন ওর প্রশংসা করি, আমি ভাল খেললে বেয়ারস্টোও আমার পিঠ চাপড়ে দেয়।

প্র: লকডাউনে অনেক দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকা, তার পরে জৈব সুরক্ষা বলয়ে দিন কাটানো। এগুলো কতটা কঠিন?

ঋদ্ধিমান: আমি সব সময় চেষ্টা করেছি ক্রিকেটের মধ্যে থাকতে, নিজেকে ফিট রাখতে। আর লকডাউনে তো প্রতিটা মানুষকে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে। আমরা ব্যতিক্রম হব কেন? এখন আইপিএল খেলছি বলে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। ক্রিকেটের জন্য এটুকু আত্মত্যাগ তো করতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন