টিম হোটেলে জোফ্রে। শনিবার। -শঙ্কর নাগ দাস
প্রশ্ন: আপনার টিম তো হারের হ্যাটট্রিক করে বসে আছে। কেন এই হাল গোয়ার?
জোফ্রে: কোনও একটা নয়, অনেক কারণই আছে। তবে আমাদের সবার আগে ধৈর্য ধরতে হবে। হাল ছাড়লে চলবে না। জানি লড়াইটা কঠিন। তিন ম্যাচের মধ্যে তিনটেতেই হেরেছি। তবে একটা জয়ই সব কিছু বদলে দিতে পারে। আমাদের তার জন্য লড়াই করতে হবে। সবার আগে নিজেদের মনকে শান্ত করতে হবে। তার পর নিজেদের লক্ষ্যে এগোতে হবে।
প্র: ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে আপনাদের?
জোফ্রে: দেখুন সে ভাবে খুঁজে দেখতে বসলে অনেক ছোট ছোট সমস্যা পাওয়া যাবে। তবে সে সব বলে বা ভেবে লাভ নেই। নিজেদের রোগ আমাদের নিজেদেরই সারাতে হবে। হতাশ হয়ে না পড়ে এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদেরকেই নিজেদের বের করে আনতে হবে।
প্র: গত বারের ফাইনালের ঘটনার জেরে এ বার গোয়াকে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল। এই সমস্ত ঝামেলা মেটাতে গিয়ে এ বার গোয়া অনেক দেরিতে টিম করেছে। সেটার প্রভাব কি এখনও রয়ে গিয়েছে?
জোফ্রে: হয়তো এই ঘটনার প্রভাব কিছুটা হলেও শুরুর দিকে পড়েছিল। কিন্তু এ সব অজুহাত দেওয়া ঠিক নয়। আমাদের টিম বেশ ভালই হয়েছে। যারা প্রথম একাদশে খেলছে, বা রিজার্ভ বেঞ্চে রয়েছে, প্রত্যেকেই কোয়ালিটি প্লেয়ার। শুধু আমাদের ফোকাস ঠিক রাখতে হবে। গোলটা আগে করতে হবে। বিপক্ষ টিম আগে গোল করে দিলেই টিমের উপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে।
প্র: কলকাতার বিরুদ্ধে ম্যাচ। যে টিমে আপনি প্রথম বছর দাপিয়ে খেলে গিয়েছেন। কতটা মিস করেন কলকাতাকে?
জোফ্রে: কলকাতাকে সত্যি খুব মিস করি। গোয়া খুব সুন্দর জায়গা। কিন্তু কলকাতার মধ্যে একটা আলাদা ব্যাপার রয়েছে। এখানকার সমর্থকরাও সবাই ফুটবল পাগল। এখানকার ফুটবল উন্মাদনাটা ভারতের অন্য যে কোনও জায়গার থেকে আলাদা। এই ফুটবল উন্মাদনাটা খুব মিস করি।
প্র: এখন এটিকে উল্টো দিকে থাকলে কি জেতারW খিদেটা দ্বিগুণ হয়ে যায় আপনার?
জোফ্রে: না সে রকম কোনও ব্যাপার নেই। আমি কলকাতায় খেলে গিয়েছি। এই টিমের অনেক ফুটবলারকেই চিনি। তবে মাঠে খেলাটা হয় এগারো জন ফুটবলারের বিরুদ্ধে এগারো জন ফুটবলারের। এ বার অবশ্য আটলেটিকো ম্যাচটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট না পেলে আমরা সমস্যায় পড়ে যাব। সে কারণেই আমাদের সবার মধ্যে বাড়তি একটা তাগিদ কাজ করছে।
প্র: আপনি যে আটলেটিকো টিমে খেলেছিলেন, সেই টিমের সঙ্গে এখনকার টিমের পার্থক্য কী?
জোফ্রে: অনেক ফুটবলার নতুন এসেছে। কোচ বদলে গিয়েছে। পুরো টিমটাই নতুন মোটিভেশন নিয়ে খেলছে।
প্র: আন্তোনিও হাবাস আর মলিনার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
জোফ্রে: ওদের দু’জনের স্ট্র্যাটেজি একেবারে আলাদা। হাবাস আমাদের যে স্ট্র্যাটেজিতে খেলাতেন, তাতে মূলত রক্ষণ সামলে আমরা আক্রমণে উঠতাম। গত বছরও আটলেটিকোকে একই স্ট্র্যাটেজিতে খেলিয়েছেন হাবাস। মলিনা কিন্তু আবার আক্রমণের দিকেই বেশি জোর দেন। এ বছর তাই দেখা যাচ্ছে, এটিকে গোল পেয়ে যাওয়ার পরও অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ছে না। উল্টে পাল্টা আক্রমণই করছে।
প্র: জিকো আর হাবাসের মধ্যে?
জোফ্রে: হাবাস অনেক বেশি অ্যাগ্রেসিভ। আগ্রাসী কোচ। জিকো সেখানে অনেক ঠান্ডা স্বভাবের। সব কিছু খুব শান্ত ভাবে সামলান। জিকো ভিতরে ভিতরে যতই তেতে থাকুন, বাইরে থেকে দেখলে সেটা বোঝার উপায় নেই।
প্র: আপনাদের প্রথম তিন ম্যাচে পারফরম্যান্স দেখার পর কি মনে হচ্ছে, প্লে অফে যাবে আপনার টিম?
জোফ্রে: প্লে অফে কারা কারা যাবে, তা এত তাড়াতাড়ি বলা মুশকিল । তবে আমরাও শেষ চারে ওঠার জন্যই লড়াই করছি। গোয়া সেমিফাইনালে যাবে না, এটা বলার সময় এখনও আসেনি। আবার বলছি, একটা ম্যাচে সব কিছু বদলে যেতে পারে।
প্র: বার্সেলোনাতে খেলার সময় আপনি ফিগো, রিভাল্ডো, জাভি, জেরারের মতো ফুটবলারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নিয়েছেন। এই অভিজ্ঞতা কখনও নিজের সতীর্থদের সঙ্গে ভাগ করেছেন?
জোফ্রে: সে সব দিনগুলো তো আমার ফুটবল জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিল। জুনিয়রদের সঙ্গে সেই সব দিনের গল্প করি। হয়তো ওরাও মনে মনে উজ্জীবিত হয়। আমাকেও উজ্জীবিত করে ভাল খেলতে।