বিতর্কে এ বার জার্মানি বিশ্বকাপ

আরবকে জাহাজ-ভর্তি গ্রেনেড, পাউন্ডে মুখ বন্ধ আইরিশদের

ফিফা কলঙ্কের নাটকে নতুন অঙ্ক যোগ হল শুক্রবার। যোগ হল নতুন চরিত্রও— ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (এফএআই)। শুধু তাই নয়, ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের পাশাপাশি নতুন সন্দেহের মেঘ তৈরি হয়ে গেল ২০০৬ বিশ্বকাপ নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

ফিফা কলঙ্কের নাটকে নতুন অঙ্ক যোগ হল শুক্রবার। যোগ হল নতুন চরিত্রও— ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ড (এফএআই)। শুধু তাই নয়, ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের পাশাপাশি নতুন সন্দেহের মেঘ তৈরি হয়ে গেল ২০০৬ বিশ্বকাপ নিয়েও।

Advertisement

এ দিন এফএআই দাবি করে, ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার তাদের প্রায় চার মিলিয়ন পাউন্ড ‘উপহার’ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পাল্টা উপহার? থিয়েরি অঁরির এক বিতর্কিত হ্যান্ডবল নিয়ে আইনি রাস্তায় যেন না হাঁটে আয়ারল্যান্ড! বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে হ্যান্ডবল থেকে গোল করেন ফ্রান্সের অঁরি। যা ম্যাচ রেফারির চোখ এড়িয়ে যায় এবং যা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে আয়ারল্যান্ড। বিশেষ করে শেষমেশ যখন আয়ারল্যান্ডকে টপকে ফ্রান্সই মূলপর্বে চলে যায়।

এফএআই মুখ্যকর্তা জন ডেলানি পরিষ্কার জানিয়েছেন, ব্লাটারের সঙ্গে এই ব্যাপারে একটা বোঝাপড়ায় আসেন তিনি। পরে যদিও ফিফা দাবি করে অঙ্কটা চার মিলিয়ন নয়, সাড়ে তিন মিলিয়নের কিছুটা কম। আর বেআইনি কাজ নয়, আয়ারল্যান্ডে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য সেটা ঋণ হিসেবে দিয়েছিল ফিফা। যদিও আয়ারল্যান্ড ’১০ বিশ্বকাপ মূলপর্বে না ওঠায় এবং সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নাকি ঋণ আর ফেরত চায়নি ফিফা।

Advertisement

এই আগুনে আরও ঘি ঢেলে দিল মিশর। সে দেশের এক ক্রীড়াকর্তা বলে দিলেন, ২০১০ বিশ্বকাপ তাঁদের দেওয়ার জন্য সাত মিলিয়ন ডলার চেয়েছিলেন ফিফার ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যাক ওয়ার্নার। যাঁর নাম ফিফা-কলঙ্কের সঙ্গে ভাল ভাবে জড়িয়ে। মিশর টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় নাকি হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। বৃহস্পতিবার ওয়ার্নার বলেন, তাঁর প্রাণের ভয় থাকলেও নাকি তিনি একের পর এক গোপন তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত যা হয়নি। কিন্তু তাতে ফিফার অবস্থান উন্নতি করেছে, বলা যাবে না। উল্টে ২০১০ বিশ্বকাপের আয়োজক ড্যানি জর্ডানও তোপের মুখে। ক্যারিবিয়ান ফুটবল সংস্থাকে তিনি দশ মিলিয়ন ডলার দিতে চান, এই মর্মে একটি চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর তাঁর উপর সব খোলসা করার চাপ বাড়ছে।

এ সবের মধ্যে জার্মানির একটি সংবাদপত্র দাবি করেছে, ২০০৬ বিশ্বকাপ পেতে তাদের দেশ নাকি সৌদি আরবকে জাহাজ-ভর্তি রকেট দিয়ে ছোড়া গ্রেনেড পাঠিয়েছিল! তাদের দাবি, জার্মানির ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তখনকার সরকারকে দিয়ে আরবকে এই উপহার দেয়। যাতে ’০৬ বিশ্বকাপ আয়োজনে আরবের ভোটটা মরক্কো নয়, পড়ে জার্মানির পক্ষে। ২০০০ সালের সেই ভোটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১২-১১-র ব্যবধানে হারিয়ে ২০০৬ বিশ্বকাপের স্বত্ত্ব পায় জার্মানি। শুধু গ্রেনেড নয়, বিশ্বকাপ পেতে আরও অনেক কিছু করতে হয় জার্মানিকে। দুই জার্মান কর্পোরেট জায়েন্ট বেয়ার এবং ফোক্সভাগেন যেমন তাইল্যান্ড আর দক্ষিণ কোরিয়ায় লগ্নির অঙ্ক বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার মোটর কোম্পানি হিউন্দাই-এ ৭৩ মিলিয়ন পাউন্ড লগ্নি করেছিল ডেমলার।

এই পরিস্থিতিতে চরম ব্লাটার-বিরোধী এফএ চেয়ারম্যান গ্রেগ ডাইক বলে দিলেন, ব্লাটার যে গ্রেফতার হবেন সেটা নিয়ে বাজি ধরতেও রাজি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন