প্রশংসা ও বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল ফিফা।
২০২৬ থেকে আর বত্রিশ নয়, আটচল্লিশ দেশ নিয়ে হবে ফিফা বিশ্বকাপ। কিছু দিন আগেই ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফান্তিনো বিশ্বকাপের নতুন ফর্ম্যাট নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, বিশ্বকাপকে এই নতুন অবতারে মোড়া হচ্ছে যাতে আরও বেশি দেশ সুযোগ পায় ফুটবলের সেরা টুর্নামেন্টে খেলতে। কারণ ফিফার সদস্য দেশের মধ্যে এ রকম প্রচুর দেশ আছে, যাদের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ ঘটে না। তাদের কথা ভেবেই ইনফান্তিনো চেয়েছিলেন বিশ্বকাপে দল বাড়ানো হোক।
এ দিন ফিফা সদস্যরা ৪৮ দেশের বিশ্বকাপের পক্ষে ভোট দেন। পরিষ্কার করে দেন, ইনফান্তিনোর এই ভাবনাকে বাস্তবে দেখতে তাঁরা রাজি। ফিফার সিদ্ধান্তের পরেই অবশ্য ঝড় ওঠে ফুটবলবিশ্বে। কেউ কেউ ফিফা প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান। কেউ আবার কটাক্ষ করেন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের পর্তুগিজ কোচ জোসে মোরিনহো যেমন বললেন, এ রকম বিশ্বকাপ দেখতে মুখিয়ে থাকবেন তিনি। ‘‘ফুটবল নিয়ে আবেগটা আরও বাড়বে। অনেক ছোট ছোট দল নিজেদের সেরাটা দিতে ঝাঁপাবে,’’ বলছেন মোরিনহো।
ফিফা প্রেসি়ডেন্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবশ্য আইনের দ্বারস্থ হতে চলেছে লা লিগা। স্প্যানিশ লিগের কর্তারা পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছিলেন, এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যাতে প্রতিটা ইউরোপীয় লিগের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়। কারণ ফুটবলারদের বিষয় ক্লাবেদের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু লা লিগা কর্তাদের অভিযোগ, এ রকম কোনও বৈঠক না করেই হঠাৎ বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল ফিফা।
লা লিগার অভিযোগ অনুযায়ী, ফুটবলাররা প্রাক্ মরসুমে ক্লাবের সঙ্গে খুব বেশি সময় থাকতে পারবে না। তাতে ফিটনেসে সমস্যা হতে পারে। যে কারণে ফিফার বিরুদ্ধে মামলা করবে লা লিগা।
মোরিনহো অবশ্য মনে করছেন, গ্রুপে দুটো করে ম্যাচ মানে আরও জমে উঠবে টুর্নামেন্ট। ‘‘নতুন ফর্ম্যাটে দুটো করে ম্যাচ মানে ছোট ছোট দলগুলো আগেই বিদায় নেবে। গ্রুপ পর্বকে আর কেউ হাল্কা ভাবে নিতে পারবে না,’’ বলছেন দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান। ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী দিয়েগো মারাদোনাও বলছেন, ‘‘আমি খুব খুশি জিয়ানির সিদ্ধান্তে। কারণ বাকি দেশগুলো যারা আগে ভাবত কোয়ালিফাই করার কোনও সুযোগ নেই, তারাও এ বার স্বপ্ন দেখবে।’’
আটচল্লিশ দেশের বিশ্বকাপ, অর্থাৎ প্রায় হাজারের উপর ফুটবলার খেলবেন। যে কারণে ফিফা চাইছে বড় কোনও দেশকে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার দায়িত্ব দিতে। আপাতত ফেভারিটের তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।