রসুলকে নিয়ে উদ্বেগ।
বন্যায় সর্বস্ব খোয়ানো হাজারো কাশ্মীরির মধ্যে তিনি আছেন? না কোনও ত্রাণশিবিরে ঠাঁই পেয়েছেন? কোথায় পরভেজ রসুল?
তাঁর ঘনিষ্ঠদের ধারণা, ভয়াবহ বন্যায় অনন্তনাগে তাঁর বাড়ি-ঘর হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু কাশ্মীরি ক্রিকেট অধিনায়ক কেমন আছেন? সপরিবার কোনও ত্রাণশিবিরে ঠাঁই পেয়েছেন কি না, রবিবার রাত পর্যন্ত সেই খোঁজ দিতে পারলেন না কেউ।
সপ্তাহ দুয়েক আগে ফোনে তাঁর গলা শোনা গিয়েছিল শেষ বার। তখনই তাঁর রঞ্জি দলের সহ-অধিনায়কের কাছে ভূস্বর্গে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তার পর থেকে নিখোঁজ তিনি। রবিবার সন্ধ্যায় জম্মু থেকে ফোনে সেই সতীর্থ ইয়ান দেব সিংহ বলেন, “পরভেজকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। জানি না কোথায় আছে, কেমন আছে। গত মাসের কুড়ি তারিখ থেকে আমাদের প্রস্তুতি শিবির শুরু হয়েছিল। একই সঙ্গে কাশ্মীর প্রিমিয়ার লিগও। পরভেজ অনন্তনাগে ওর বাড়ি থেকেই যাতায়াত করছিল। জম্মুতে থেকে শিবির করলে হয়তো বন্যায় আটকে পড়ত না। বন্যা তো প্রথম ওদের ওখানেই শুরু হয়। গত কয়েক দিনে সমানে ফোন করেও পরভেজের কোনও খবর পাইনি।”
কাশ্মীরি রঞ্জি ক্রিকেটাররাও যে নিরাপদে ছিলেন, তাও না। ইয়ানের কথায়, “আমরা, জম্মুর শিবিরে থাকা ক্রিকেটাররা গত ন’দিন ধরে একটা পাহাড়ের মাথায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। সে জন্যই প্রাণে বেঁচেছি। এই ক’দিনে ঠিকমতো খাবারও পাইনি। কিন্তু বেঁচে তো আছি। পরভেজের তো কোনও খবরই নেই!” কাশ্মীরের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। তাই তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনও ফল পাওয়া গেল না। দিল্লিতে সেনাবাহিনীর হেল্পলাইনে ফোন করতে ও পারে ভারপ্রাপ্ত সেনা কর্তা জানিয়ে দিলেন, “অনন্তনাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই ওখান থেকে বন্যা কবলিতদের নামের তালিকা এখনও পাওয়া যায়নি।”
উত্তরাখণ্ডে বন্যার সময় সেখানে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন হরভজন সিংহও। তবে সৌভাগ্যবশত সেনাদের তৎপরতায় এক ত্রাণশিবিরে ঠাঁই পান তিনি। পরভেজের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর শুনে সেই হরভজন এ দিন বিকেলে রায়পুরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে নামার আগে ফোনে বলেন, “আমিও এমন বন্যার কবলে পড়েছি বলে উপলব্ধি করতে পারছি, ছেলেটার উপর দিয়ে কী যাচ্ছে। আইপিএলের সময়ই দেখা হয়েছিল। অনেকক্ষণ গল্প করেছিলাম আমরা। খুব ভাল ছেলে। আমার বিশ্বাস, ঈশ্বর ওর আর ওর পরিবারের পাশে আছেন।”