বিতর্ক: মাঠে রেফারিদের সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। —ফাইল চিত্র
মিনার্ভা পঞ্জাবকে অন্যায় পেনাল্টি দিয়ে জেতানো হয়েছে এই অভিযোগ তুলে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে শিলং লাজং।
আইজল-মোহনবাগান ম্যাচে ‘অন্যায় সিদ্ধান্ত’র প্রতিবাদে ম্যাচের পর রেফারিদের দীর্ঘক্ষণ মাঠে আটকে রেখেছিলেন আইজলের সমর্থকরা।
শুধু আই লিগ নয়, খারাপ রেফারিং নিয়ে সরব ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ক্লাবগুলির বিদেশি কোচেরাও প্রায় প্রতি ম্যাচের পরই।
রেফারিং নিয়ে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে এ বার যেন সেটা মাত্রা ছাড়া। ক্লাব কর্তাদের অভিযোগ, অর্ধেক রেফারি ফিটনেসের অভাবে বলের কাছেই সবসময় থাকতে পারছেন না। ফলে সিদ্ধান্তে ভুল হচ্ছে। তা ছাড়া চাপের মুখে অনভিজ্ঞ রেফারিরা প্লে অ্যাকটিং না বুঝতে পেরে পেনাল্টি দিয়ে দিচ্ছেন, লাল কার্ড দেখাচ্ছেন। ভুগছে ক্লাবেরা।
কেন এমন হচ্ছে? দিল্লির ফুটবল হাউসে খোঁজ নিয়ে জানা গেল আই লিগ এবং আই এস এল পাশাপাশি চলছে বলেই সব জায়গায় অভিজ্ঞ রেফারি দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে ‘বি’ ক্যাটাগরির রেফারি দিতে বাধ্য হচ্ছে ফেডারেশন। তা ছাড়া একজন রেফারির যেখানে সপ্তাহে একটা ম্যাচ খেলানোর কথা, সেখানে গড়ে দু’টো বা তিনটে ম্যাচে মাঠে নামতে হচ্ছে তাদের। সে জন্য ফুটবলারদের যেমন পরপর ম্যাচ খেলতে গেলে ক্লান্তি আসে, সেই একই রোগে আক্রান্ত রেফারিরা। তাঁরা নিজেদের সুস্থ করে তোলার সময়ই পাচ্ছেন না। এমনিতে রাতের ম্যাচ হলে রিপোর্ট সাজাতে রাত বারোটা হয়ে যায়। আবার পরের দিন ভোরের বিমানে ওই রেফারিদের যেতে হচ্ছে হয়তো দেশের অন্য প্রান্তে। যে দিন পৌঁছচ্ছেন প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় বা শ্রীকৃষ্ণরা, তার পর দিনই আবার ম্যাচ খেলাতে হচ্ছে। ফুটবল বিজ্ঞান বলে ফুটবলারদের প্রতি ম্যাচে গড়ে দৌড়তে হয় ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার। সেখানে রেফারিদের দৌড়তে হয় ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার। ফলে রেফারিদের বিশ্রামটা বেশি জরুরি। সেটাই হচ্ছে না।
দেশে ‘এ’ ক্যাটাগরির রেফারি আছেন ২৬ জন। ‘বি’ ক্যাটাগরির রেফারি ৩১। এই ক্যাটাগরির বিন্যাস হয় শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা করে। এ বার এত ম্যাচ যে, সেই পরীক্ষাই ঠিকমতো করা যায়নি। ফলে যা পরিস্থিতি তাতে ‘বি ক্যাটাগরির রেফারিদের মুখেও উঠছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের বাঁশি। এমনিতে ৫৭ জনের মধ্যে গড়ে ৪০ জনের বেশি রেফারি পাওয়া যাচ্ছে না নানা কারণে। এ বার আইএসএলের ম্যাচ খেলানোর জন্য বিদেশি রেফারিও আনা হয়নি। দুই লিগের মোট ম্যাচ ১৮৫টি। সপ্তাহে ১০-১২টি ম্যাচ হচ্ছে। এত ম্যাচে অভিজ্ঞ রেফারি জোগান দিতে গিয়ে পোস্টিং কমিটি তাই সমস্যায়। রেফারিজ বোর্ডের ডিরেক্টর গৌতম কর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘পাশাপাশি দুটো লিগ তো কখনও হয়নি। তাই এটা একটা চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে। নতুন রেফারিদেরও তো নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।’’ যা শুনে এক প্রাক্তন রেফারির মন্তব্য, ‘‘অর্ধেক রেফারির তো ফিট সার্টিফিকেটের পরীক্ষাই ঠিকঠাক করা যায়নি এ বার। ওটা না হলেই তো ঝামেলা। প্রমাণ তো পরে।’’