East Bengal

মাঠের বাইরেও চলছে ডার্বি! মোহন-সচিবের বিরুদ্ধে তোপ দাগল ইস্টবেঙ্গল, পাল্টা দেবাশিসেরও

মোহনবাগান সচিবের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারী ভাঙানোর অভিযোগ আনা হল ইস্টবেঙ্গলের তরফে। সমর্থকদের বিক্ষোভকে হাতিয়ার করে দেবাশিস দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হল। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দেবাশিসও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩৪
Share:

ইস্টবেঙ্গলের একগাদা অভিযোগ মানতে চাইলেন না দেবাশিস দত্ত। — ফাইল চিত্র

মোহনবাগান সচিবের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারী ভাঙানোর অভিযোগ আনা হল ইস্টবেঙ্গলের তরফে। বৃহস্পতিবার ইমামি অফিসের বাইরে কিছু লাল-হলুদ সমর্থক বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের অভিযোগ, সেই সমর্থকদের ‘নীতু-বাহিনী’ (ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের ডাক নাম নীতু) বলে দাগিয়ে ইমামি কর্তা আদিত্য আগরওয়ালের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন মোহন-সচিব। যদিও পাল্টা মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। ইস্টবেঙ্গলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করতে চান না।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে ডাকা হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। সেখানে দেবব্রত না থাকলেও কার্যকরী সমিতির সদস্য রজত গুহ, শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্তরা ছিলেন। সেখানেই রজত বলেন, “মোহনবাগান সচিবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। এত দিন আমি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। কিন্তু এখন বলতেই হচ্ছে, উনি নিজের ক্লাবের বদলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নিয়ে বেশি ভাবছেন। ওঁকে কিছু মনে করিয়ে দেওয়া আমাদের দরকার।”

তাঁর সংযোজন, “কিছু দিন ধরে দেখছি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এবং ব্যক্তিকে আলাদা করে দেখানোর চেষ্টা করছেন। সেটা কোনও দিন সফল হবে না, কারণ এই ক্লাবে ব্যক্তির কোনও জায়গা নেই। মোহনবাগান সচিব দীর্ঘ দিন ধরে ব্যঙ্গোক্তি, কটূক্তি আমাদের ক্লাবের হয়ে করে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ইমামি দফতরে বোর্ড মিটিং ছিল। সেখানে কিছু সমর্থক ভাল দল করার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সেই ছবি উনি আদিত্য আগরওয়ালকে পাঠিয়ে দাবি করেন, এই জমায়েত নীতু-বাহিনীর। কোনও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের নয়। এতে ময়দানের সুস্থ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।” সংবাদমাধ্যমের তরফে সেই বার্তার স্ক্রিনশট দাবি করা হয়। সেটা অবশ্য তুলে দেওয়া হয়নি।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গলের আর এক কর্তা সদানন্দ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ইমামিই প্রথম নয়। অতীতে কোয়েস কর্তাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরিতে ভূমিকা নিয়েছিলেন দেবাশিস দত্ত। কোয়েসই হোক বা শ্রী সিমেন্ট, দু’টি ক্ষেত্রেই ক্লাব এবং বিনিয়োগকারীর ভুল বোঝাবুঝিতে মদত দিয়েছেন দেবাশিস। সদানন্দের কথায়, “উনি কলকাতা থেকে মেল পাঠিয়েছেন অজিত আইজ্যাককে (কোয়েসের কর্ণধার)। আমরা চাই দুটো শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের লড়াইটা মাঠে থাকুক। আমরা ব্যথিত যে মোহনবাগানের কর্তা আমাদের বিনিয়োগকারীকে বার্তা পাঠিয়ে ভুল ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”

শুক্রবার মোহনবাগান তাঁবুতে বসে পাল্টা দেবাশিস বলেন, “ওই বিক্ষোভের কোনও ভিডিয়ো দেখিনি। ফেসবুকে কিছু ছবি দেখেছি। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমার মন্তব্য করা ঠিক নয়। আমি চাই ইস্টবেঙ্গল দ্রুত ভাল দল তৈরি করে চ্যাম্পিয়ন হোক। মোহনবাগান প্রত্যেক বার আইএসএল জিতবে, এটা হতে পারে না। কে কার বাহিনী, আমি জানব কী করে? কেউ গিয়ে যদি বিক্ষোভ করে আমার তো কিছু বলার নেই। দুটো ক্লাবেরই উচিত নিজেদের ব্যাপারে নজর রাখা।”

কোয়েস বা শ্রী সিমেন্টকেও বার্তা পাঠানোর প্রসঙ্গে দেবাশিস বলেন, “ওরা বিরাট বিরাট সংস্থা। আমি একটা মেসেজ পাঠালে রাজি হয়ে যাবে, এটা হতে পারে? আমি বিশ্বাস করি না। কোয়েসের কর্ণধারের বাড়িতে আমি এবং টুম্পাই (সৃঞ্জয় বোস) গিয়েছিলাম। খুব ভাল সম্পর্ক। তখন বলা হয়েছিল, আমরা নাকি ওদের থেকে ভাঙিয়ে কোয়েসকে আমাদের ক্লাবে নিয়ে আসতে চাইছি। কোয়েস কর্ণধার আমাদের চেন্নাইয়ের বাড়িতে ডেকে নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছিলেন। আমরা মধ্যাহ্নভোজ করেছিলাম। কী ধরনের সম্পর্ক তা হলে দেখুন। কোয়েস ছেড়ে দেওয়ার পরেও আমাদের কোনও স্পনসর ছিল না। তখন তো আমরা কোয়েসকে নিইনি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতেই পারে। তাতে ভাঙানোর সম্পর্ক কোথা থেকে আসছে? তা হলে তো তখন কোয়েসকেই নিয়ে নিতে পারতাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন