Mohun Bagan Supporter

ভুল করে ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাউন্টে তিন হাজার টাকা মোহনবাগান সমর্থকের, ফেরালেন লাল-হলুদ কর্তারা

মোহনবাগানের এক সমর্থক ভুল করে ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাউন্টে তিন হাজার টাকা পাঠান। টাকা ফেরত পেতে যোগাযোগ করেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে। শুক্রবার টাকা ফেরত পেলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৩ ২৩:২১
Share:

ইস্টবেঙ্গল মাঠে মোহনবাগান সমর্থক অংশুমান বসু। ছবি: অংশুমানের ফেসবুক থেকে।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অ্যাকাউন্টে ভুল করে তিন হাজার টাকা পাঠিয়ে ফেলেছিলেন মোহনবাগান সমর্থক অংশুমান বসু। টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য লাল-হলুদ কর্তাদের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। শুক্রবার তাঁর হাতে তিন হাজার টাকার চেক তুলে দিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা।

Advertisement

সমর্থকদের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। লাল-হলুদ সমর্থকদের অনেকে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে নিজেদের সামর্থ্য মতো টাকা পাঠিয়ে প্রিয় ক্লাবকে সহযোগিতা করছেন।

সুযোগ ছাড়েননি মোহনবাগান সমর্থকেরাও। চির প্রতিপক্ষ ক্লাবের অ্যাকাউন্টে অনেকে এক টাকা করে পাঠান। টাকা পাঠানোর ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লাল-হলুদ শিবিরকে নানা কটূক্তিও করেন তাঁরা। তেমনই প্রতিপক্ষ ক্লাবকে নিয়ে মজা করার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাননি অংশুমান। তিনিও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে এক টাকা পাঠান ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাউন্টে। ইস্টবেঙ্গলকে ‘ভিখারি ক্লাব’ বলে কটূক্তিও করেন। তার পরে হয় বিপত্তি।

Advertisement

অংশুমান নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তিন হাজার টাকা নিজেরই অন্য একটি অ্যাকাউন্টে পাঠানোর সময় হয় এই বিপত্তি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অ্যাকাউন্ট যে বেসরকারি ব্যাঙ্কের, সেখানেই রয়েছে অংশুমানের দ্বিতীয় অ্যাকাউন্ট। টাকা ট্রান্সফার করার সময় অংশুমান খেয়াল করেননি। ফোনে আগে থেকে সেভ করে রাখা ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাউন্টে ভুল করে পাঠিয়ে দেন তিন হাজার টাকা।

ভুল বুঝতে পারার পর অংশুমান ধরেই নিয়েছিলেন তিন হাজার টাকা আর ফেরত পাবেন না। পরিচিতদের অনেকেও ওই টাকার মায়া ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবু অংশুমান যোগাযোগ করেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে। প্রমাণ হিসাবে টাকা ট্রান্সফার সংক্রান্ত কাগজপত্রও জমা দেন। তাঁর আবেদন পেয়ে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। শুক্রবার অংশুমানকে ক্লাবে ডেকে ভুল করে পাঠিয়ে দেওয়া তিন হাজার টাকা ফেরত দিলেন লাল-হলুদ কর্তারা।

টাকা ফেরত পাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এবং কর্তাদের প্রশংসা করেছেন অংশুমান। সমাজমাধ্যমে গোটা বিষয়টি জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘অনেক দিন পর নিতুদার (ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার) সঙ্গে দেখা হল। কুশল বিনিময় হল। ওঁদের ব্যবহার, আন্তরিকতা আমাকে সম্মানিত করেছে। আমি অভিভূত। সব ক্ষেত্রে সৌজন্য বজায় রাখা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে অংশুমানের সঙ্গে। টাকা ফেরত পাওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সমস্যার কথা বলায় ইস্টবেঙ্গল কর্তারা প্রথম থেকেই সহযোগিতা করেছেন। টাকা ফেরত পেতে কোনও সমস্যা হয়নি। ভুলটা আমারই ছিল।’’ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে কটাক্ষ করা নিয়ে ভবানীপুরের বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘খেলার মাঠে দুই ক্লাবের সমর্থকেরাই নানা রকম মন্তব্য করে। প্রতিপক্ষ ক্লাব বা সমর্থকদের নানা ভাবে বিদ্রুপ করে। খেলার মাঠে এরকম হয়েই থাকে। তবে আমার মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের প্রতি কোনও বিদ্বেষ নেই। আমার স্ত্রী ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। আমার শ্বশুর বাড়ির পরিবার আদতে ঢাকার বাসিন্দা। আমার দিদি-জামাই বাবুও ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। জামাই বাবুর পরিবার ময়মনসিংহ থেকে কলকাতায় এসেছেন। বলতে পারেন বাড়িতে আমি প্রায় একা মোহনবাগান। আমার বন্ধুরাও অনেকে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক।’’

দুই ক্লাবের সমর্থকদের প্রতি মোহনবাগান সমর্থক বছর পঞ্চাশের অংশুমানের আর্জি, লড়াই হোক মাঠে। রেষারেষি থাক দু’ক্লাবের। বাইরে বজায় থাকুক বন্ধুত্ব। পরস্পরের প্রতি অশালীন, নোংরা কটূক্তিও বন্ধ হোক। পরিবেশ হোক সুস্থ, সুন্দর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন