Qatar World Cup 2022

বিশ্বকাপ ফুটবলে মদ নিষিদ্ধ, মিলতে পারে শুধু বিয়ার! কাতারে কী কী শর্ত মানতে হবে দর্শকদের

কাতারে প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ। দোহায় কোনও মদের দোকান নেই। ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য দেশের আইন শিথিল করতে রাজি ছিল না কাতার প্রশাসন। ফিফার ক্রমাগত চাপে সুর কিছুটা নরম করেছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:৪৬
Share:

কাতার বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামের বাইরে অল্প সময়ের জন্য পাওয়া যাবে বিয়ার। ফাইল ছবি।

ফুটবলপ্রেমীদের জন্য স্বস্তির খবর। মদ যেখানে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ, সেই কাতার বিশ্বকাপের সময় কিছুটা নরম হল। বিশ্বকাপের সময় মদ না পাওয়া গেলেও কাতারে পাওয়া যাবে বিয়ার। প্রতিটি স্টেডিয়ামের বাইরে থাকবে দোকান। সেখান থেকে বিয়ার কিনে পান করতে পারবেন ইচ্ছুক ফুটবলপ্রেমীরা। ফিফা সরকারি ভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করলেও একটি সূত্র থেকে এই দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

ফিফার ওই সূত্র জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের দোকানে সব সময় বিয়ার পাওয়া যাবে না। খেলা শুরুর আগে এবং পরে ৩০ মিনিটের জন্য খোলা থাকবে দোকান। দোকান থেকে শুধু তাঁরাই বিয়ার কিনতে পারবেন, যাঁদের কাছে খেলা দেখার টিকিট থাকবে। বিয়ারের ক্যান নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না স্টেডিয়ামের ভিতর। অর্থাৎ, খেলা দেখতে দেখতে পান করার সুখ থেকে বঞ্চিতই থাকতে হবে ফুটবলপ্রেমীদের। ফিফার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্টেডিয়ামের বাইরে ফ্যান জোনে সন্ধে সাড়ে ছ’টা থেকে কিছু ক্ষণের জন্য বিয়ার পাওয়া যাবে।

স্টেডিয়ামের ভিতর ঠান্ডা পানীয়র পাশাপাশি অ্যালকোহলহীন বিয়ার রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। যে ঠান্ডা পানীয় সংস্থা ফিফার অন্যতম স্পনসর, তারাই বিশ্বকাপের আটটি স্টেডিয়ামের ভিতর পানীয় বিক্রি করার একমাত্র অধিকারী। সেই সংস্থা নিজেদের দোকান থেকে অন্য সংস্থার অ্যালকোহলহীন বিয়ার বিক্রি করা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানায়নি। আবার বিয়ার প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছে স্টেডিয়ামের ভিতর দোকান খোলার অনুমতি নেই।

Advertisement

বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলির ফুটবল সমর্থকদের একটা বড় অংশই সুরাপ্রেমী। তাঁরা সাধারণত বিয়ার পান করতে করতেই প্রিয় দলের খেলা উপভোগ করেন। ইউরোপের দেশগুলিতে গ্যালারিতে বসেই বিয়ার পান করা যায়। অনেক জায়গায় মদ্যপানও করা যায়। কিন্তু কাতারে এ সব চলবে না। প্রথম থেকেই কাতার প্রশাসন কড়া অবস্থান নেয়। দেশের নিয়ম শিথিল করতে রাজি হয়নি তারা। পরে ফিফার সঙ্গে আলোচনায় স্থির হয়, দোহার দু’টি নির্দিষ্ট ঘেরা জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হবে। সেই দুই জায়গায় পর্যাপ্ত বিয়ার এবং মদের ব্যবস্থা রাখা হবে।

এই ব্যবস্থাও খুশি করতে পারেনি ইউরোপ, আমেরিকার ক্রীড়াপ্রেমীদের। দু’টি জায়গা মিলিয়ে মাত্র হাজার ছয়েক মানুষের খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কাতারের আয়োজক এবং প্রশাসনের অনড় মনোভাবে খুশি ছিল না বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থাও। কারণ ফিফার অন্যতম প্রধান স্পনসর একটি বিয়ার প্রস্তুতকারী সংস্থা। তাদের প্রবল চাপ ছিল ফিফার উপর। এর আগের সব বিশ্বকাপে সারা দিন ধরে বিয়ার বিক্রির অনুমতি ছিল।

বিশ্বকাপের খেলা দেখতে কাতারে ১০ লক্ষের বেশি ফুটবলপ্রেমী বিভিন্ন দেশ থেকে আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফিফার ওই সূত্র জানিয়েছে, বিয়ার পানের সুযোগ থাকলেও কোনও রকম অভব্যতা বরদাস্ত করা হবে না। কাতারের সংস্কৃতি এবং আবেগকে আঘাত করে এমন যে কোনও আচরণ শাস্তিমূলক হিসাবেই বিবেচিত হবে। ফিফার স্পনসর সংস্থাও জানিয়েছে, কাতারে আইনকে সম্পূর্ণ সম্মান করেই তারা ফুটবলপ্রেমীদের খুশি করার চেষ্টা করবে।

উল্লেখ্য, কাতারে মদ্যপান কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। রাজধানী দোহায় কোনও মদের দোকান নেই। শহরের অনেকটা বাইরে একটি সরকারি দোকান রয়েছে। সেই দোকান থেকে মদ কিনতে পারেন শুধু বিদেশি নাগরিকরা। তা-ও সকলে নন। কর্মসূত্রে কাতারে বসবাসকারী বিদেশিদের মধ্যে যাদের কাছে বিশেষ অনুমতি পত্র রয়েছে, তাঁরাই শুধু কিনতে পারেন মদ। এ ছাড়া কাতারের ৩৫টি নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক হোটেল এবং রেস্তোরাঁয় মদ পাওয়া যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন