খালিদ জামিল। —ফাইল চিত্র।
গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বাজে ফুটবল খেলল ভারত। তাজিকিস্তান ও ইরানের বিরুদ্ধে যে ফুটবল খালিদ জামিলের ছেলেরা খেলেছিলেন, তার ৫০ শতাংশও এই ম্যাচে দেখা গেল না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনে হল, ড্রয়ের লক্ষ্যেই নেমেছিলেন খালিদ। গোল দেওয়ার থেকে গোল না খাওয়ার দিকে বেশি নজর ছিল তাঁর। সেটাই হল। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করল ভারত। এই ড্রয়ের ফলে ভারতের নক আউটে ওঠার আশা বজায় থাকল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ইরান তাজিকিস্তানকে হারালেই ভারত নক আউটে। কাফা নেশনস কাপে তৃতীয় স্থানে নির্ণায়ক ম্যাচ খেলবে তারা।
আগের দুই ম্যাচে ভারতের খেলা দেখে সমর্থকদের আশা বেড়েছিল। কিন্তু এই ম্যাচে প্রথমার্ধে ভারতের খেলা একেবারেই হতাশ করেছে। তেমন আক্রমণই করতে পারেনি তারা। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা বদলেছিলেন খালিদ। আগের দুই ম্যাচে জোনাল মার্কিং করেন তিনি। এই ম্যাচে ম্যান টু ম্যান মার্কিং রেখেছিলেন। তাতে হয়তো ভারতেরই সমস্যা হল।
প্রথমার্ধে মুসাউয়ি, হানিফি, রহিমিদের হাত ধরে বার বার আক্রমণে উঠছিল আফগানিস্তান। তাঁদের গতি ভারতকে সমস্যায় ফেলছিল। মাঝে দু’-এক বার ভারতের স্ট্রাইকার ইরফান ইয়াদওয়াদ সুযোগ তৈরি করেন। কিন্তু তিনি গোলটা খুব একটা ভাল চেনেন না। ফলে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ভারতের স্ট্রাইকার। উল্টোদিকে ভারতের গোলে গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু না থাকলে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারত আফগানিস্তান। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বিক্রম প্রতাপ সিংহকে নামান কোচ খালিদ। তাঁকে সামনে রেখে লং বলের পরিকল্পনা করেন তিনি। তাতে খেলার ছবিটা একটু বদলায়। আফগান ডিফেন্ডারদের উপর চাপ রাখছিলেন বিক্রম। ফলে আফগানদের খেলার গতিও একটু কমে। মহম্মদ উবেইসের কয়েকটি লম্বা থ্রো থেকেও সুযোগ তৈরি হয়। বিক্রম ও আশিক কুরুনিয়ন কয়েক বার আফগান বক্সে ঢুকেও পড়েন। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেননি তাঁরা।
৭০ মিনিটের মাথায় জীবনদান পায় ভারত। বক্সের মধ্যে থেকে হানিফির শট বারে লেগে ফেরে। বল গোলে থাকলে গুরপ্রীতের কিছু করার থাকত না। ফিরতি বল কোনও রকমে বার করেন ভারতীয় ডিফেন্ডারেরা।
সময় যত গড়াচ্ছিল, তত আফগানিস্তানের ফুটবলারদের গোল করা চেষ্টা বাড়ছিল। কারণ, এই ম্যাচ জিতলে নক আউটে ওঠার সুযোগ থাকত আফগানিস্তানের। খালিদ জানতেন, হারলে চলবে না। অন্তত ড্র করতে হবে। ফলে রক্ষণ আরও জমাট করেন তিনি। সেই সঙ্গে আক্রমণে তাজা ফুটবলার আনেন। নামান ফারুখ চৌধরি ও উদান্তা সিংহকে।
বাকি সময়টাও আফগানিস্তানের আক্রমণই বেশি ছিল। কিন্তু গুরপ্রীতকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। চলতি প্রতিযোগিতায় ভাল দেখাচ্ছে গুরপ্রীতকে। গোলের সামনে আত্মবিশ্বাসী তিনি। জমাট দেখাচ্ছে দলের রক্ষণকেও। গোলরক্ষক ও রক্ষণের হাত ধরে নেশনস কাপে টিকে রয়েছেন খালিদ।