Thomas Dennerby

Thomas Denerby: সুরক্ষিত ছিল না বলয়, এএফসিকে তোপ দেনার্বির

কোনও দোষ না থাকা সত্ত্বেও কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়া ভারতীয় দলের প্রতি কোনও রকম সহানুভূতি বা সম্মান দেখায়নি এশীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:২৩
Share:

ক্ষুব্ধ: এএফসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দেনার্বি। টুইটার

করোনায় ১২ জন ফুটবলার আক্রান্ত হয়ে এশিয়ান কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন ভারতীয় মহিলা দলের কোচ টমাস দেনার্বি।

Advertisement

বিস্ফোরক সব অভিযোগ এনেছেন তিনি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়ার জন্য ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার স্বপ্নও শেষ হয়ে গিয়েছে ভারতের মেয়েদের। দেনার্বির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, এশীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার তৈরি জৈব সুরক্ষা বলয় যথেষ্ট সুরক্ষিত ছিল না। বলয়ে ফাঁক থাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে এবং ভারতীয় দলের মেয়েরাও কোভিড আক্রান্ত হয় এই কারণে। দেনার্বির বক্তব্য, তাঁদের কোনও দোষ না থাকা সত্ত্বেও কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়া ভারতীয় দলের প্রতি কোনও রকম সহানুভূতি বা সম্মান দেখায়নি এশীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। যা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।

এএফসির বিরুদ্ধে কোভিড সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে রাখার অভিযোগও করেছেন তিনি। বুধবার সকালে মুম্বই থেকে ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে দেনার্বি অভিযোগ করেন, ‘‘মুম্বইয়ের হোটেলে আমরা যখন প্রবেশ করেছিলাম, তখন সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। অনুশীলনের জন্য যে দিন হোটেলের বাইরে গিয়েছিলাম, সে দিনই প্রথম করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ হওয়ার খবর জানতে পারি। তার পরের দিন, ১৭ জানুয়ারি, হোটেলের সাত জন কর্মীর পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ আসে। অথচ তা জানানো হয়েছিল এক দিন পরে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আক্রান্ত অবস্থাতেই হোটেলের কর্মীরা খাদ্য পরিবেশন করেন। ঘর পরিষ্কার করতে আসে। সেই সময় আমাদের ফুটবলারেরা ঘরেই ছিল। তাই সংক্রমণ কী ভাবে ছড়িয়েছে তা বোঝার জন্য রকেট বিজ্ঞান জানার প্রয়োজন নেই। একটা পুরো দিন এএফসি কেন চুপ করে বসেছিল, কেউ জানে না।’’

Advertisement

এখানেই শেষ নয়। ক্ষুব্ধ দেনার্বি যোগ করেছেন, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী তিন দিন অন্তর যে ভাবে সব দলের প্রত্যেক সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, তা হোটেলের কর্মীদের ক্ষেত্রে হয়নি। তাদের পরীক্ষা হচ্ছে ছয় দিন অন্তর। এই তারতম্য কেন, সেটাও জানি না।’’ এশিয়ান কাপের নিয়মের ৪.১ ধারার কথা তুলে ভারতীয় দলের সব ম্যাচই বাতিল করে দিয়েছে এএফসি। অভিযোগ, এই ধরনের বিশেষ পরিস্থিতিতে ম্যাচ সাময়িক ভাবে স্থগিত রেখে নতুন সূচি প্রকাশ করার যে নিয়ম রয়েছে, তা মানেনি এশিয়ার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা।

অন্য অনেক সংস্থা। অন্য অনেক খেলাতেই অতিমারির সময় সূচিতে পরিবর্তন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে হয়েছে। ফুটবলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে হচ্ছে। কিন্তু এশিয়ান কাপে ভারতীয় মেয়েদের ১২ জন কোভিড আক্রান্ত হতেই সটান ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয় এবং প্রতিযোগিতা থেকেই বার করে দেওয়া হয়। ভারতের মহিলা ফুটবল দলের কোচ বলেছেন, ‘‘এমন একটা কঠিন সময়ে আমাদের দলের প্রতি কোনও রকম সহানুভূতি বা মানবিকতা দেখানোর ধার ধারেনি এএফসি। ন্যূনতম সম্মানটুকুও দেখায়নি।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘আমাদের দলের ১২ জন ফুটবলার ও ছয় সাপোর্ট স্টাফ করোনায় আক্রান্ত। তা ছাড়া দু’জন ফুটবলারের চোটও ছিল। মাত্র নয় জন ফুটবলার নিয়ে যে দল গড়া সম্ভব নয়, তা এএফসি খুব ভাল ভাবেই জানত।’’

হতাশ দেনার্বির মন্তব্য, ‘‘আমাদের ছ’মাসের পরিশ্রম, আত্মত্যাগ সব বিফলে গেল। ফুটবলাররা কান্নায় ভেঙে পড়েছে। ওরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কেউ বড়দিনের বা নিউ ইয়ারের ছুটিতে পর্যন্ত বাড়ি যাইনি। এই প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি হব বলে।’’ দেনার্বি আরও একটি মারাত্মক অভিযোগ করেছেন যে, এএফসির দুই কর্মীও নাকি করোনা আক্রান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছি এএফসি-র দুই কর্মীও আক্রান্ত। যদিও এই সংখ্যাটা ঠিক কি না জানি না। কারণ, এএফসির তরফে কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন