তুরস্কের ফুটবলে রেফারি নিগ্রহ প্রায় নিত্য ঘটনা। ছবি: এক্স।
কলকাতা লিগে গড়াপেটায় অভিযুক্ত থাকার অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তুরস্কে একই কারণে একটি ক্লাবের সভাপতি এবং ১৭ জন রেফারিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিল সে দেশের আদালত।
কিছু দিন আগে তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশনের (টিএফএফ) কর্তারা চমকে উঠেছিলেন। ফুটবল জুয়ার সঙ্গে ৩৭১ জন রেফারি এবং কমপক্ষে ১৮ জন ক্লাব কর্তার সক্রিয় ভাবে জড়িত থাকার খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। দেশের ৫৭১জন রেফারির মধ্যে ৩৭১ জন রেফারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মাথায় হাত দেওয়ার অবস্থা হয় টিএফএফ কর্তাদের। তবে দেশের ফুটবলকে দুর্নীতি মুক্ত করতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তাঁরা। সরাসরি জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রেফারি এবং সহকারী রেফারি মিলিয়ে ১৫২ জনকে বরখাস্ত করা হয়। সেই ঘটনায় এ বার বেশ কয়েক জন রেফারি এবং ক্লাব কর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিল আদালত। তদন্তে জানা গিয়েছে, অন্তত ১০০০টি ম্যাচের ফল গড়াপেটা করা হয়েছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফুটবল জুয়া এবং ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত ১৭ জন রেফারি, সুপার লিগের একটি ক্লাবের সভাপতি-সহ মোট ২১জনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে ইস্তাম্বুলের আদালত। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। দায়িত্ব এবং পদের অপব্যবহার, ম্যাচের ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা এবং সমাজমাধ্যমে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম হ্যাসিয়োসমানলু জানিয়েছেন, ফুটবলে গড়াপেটা বন্ধ করতে তাঁরা পাঁচ বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘তুরস্কের ফুটবলে নৈতিক সঙ্কট রয়েছে। কাঠামো বলে কিছু নেই। আমাদের ফুটবলের মূল সমস্যা হল নীতিগত।’’ রেফারিদের কি যথেষ্ট পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না? কেন তাঁরা গড়াপেটায় জড়িয়ে পড়ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যাসিয়োসমানলু বলেছেন, ‘‘যে কোনও রেফারিকে জিজ্ঞেস করুন। ঠিক সময়ে বেতন পাননি, এমন এক জনও যদি থাকেন তা হলে আমি ফেডারেশন সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেব। আমরা গত বছরও রেফারিদের বেতন বাড়িয়েছি। এ বার ও রেফারিদের বেতন বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।’’
ফিফা, উয়েফা এবং টিএফএফের নিয়ম অনুযায়ী রেফারি, কোচ এবং ফুটবলারেরা কোনও ভাবেই ফুটবল গড়াপেটার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। সামান্যতম যোগযোগকেও অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয়। টিএফএফ কর্তাদের দাবি দেশের ফুটবলকে জুয়া এবং গড়াপেটার হাত থেকে বাঁচাতে সব রকম আইনি এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে।