সুকল্যাণের গোলার মতো শট মনে রাখবে ময়দান

উনিশশো সত্তরের ব্যাঙ্কক এশিয়াডের ব্রোঞ্জ জয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের সদস্য সুকল্যাণ ঘোষ দস্তিদার প্রয়াত হলেন। বয়স হয়েছিল ৭১।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪০
Share:

স্মৃতি: সুকল্যাণের মৃত্যুতে ময়দানে শোকের ছায়া। ফাইল চিত্র

উনিশশো সত্তরের ব্যাঙ্কক এশিয়াডের ব্রোঞ্জ জয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের সদস্য সুকল্যাণ ঘোষ দস্তিদার প্রয়াত হলেন। বয়স হয়েছিল ৭১।

Advertisement

ষাট ও সত্তর দশকের কলকাতার দুই প্রধানে দাপিয়ে খেলা স্ট্রাইকার পেটের ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই রবিবার শেষ রাতে হৃদরোগে মৃত্যু হয় তাঁর। দুই মেয়ের এক জন বিদেশে থাকায় এ দিন সুকল্যাণের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়নি। রাখা হয়েছে পিস হেভেনে। আজ মঙ্গলবার মরদেহ কালীঘাটের বাড়ি হয়ে আনা হবে ময়দানে।

ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গেই জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতায় খেলতে আসেন সুকল্যাণ। রাজস্থানে খেলা শুরু করে কলকাতা লিগে প্রথম মরসুমেই করেছিলেন ১০ গোল। এর পরই তিনি যোগ দেন মোহনবাগানে। সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলেছিলেন টানা পাঁচ বছর। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। ’৭৩ সালে হয়েছিলেন অধিনায়ক। পরে কিছুটা অভিমানেই ১৯৭৫-এ চলে আসেন ইস্টবেঙ্গলে। মোহনবাগানের হয়েই গোল করেছেন ৭২টি। তাঁর পা থেকে বোরোন শট গোলার মতো ঢুকতো বিপক্ষের গোলে। সে কারণেই তাঁকে মনে রাখবে ময়দান। ১৯৭২-এ মায়ানমারের বিরুদ্ধে প্রি অলিম্পিক্সে মহম্মদ হাবিবের নেতৃত্বে দারুণ খেলেছিলেন। করেছিলেন তিন ম্যাচে দু’গোল। এমনিতে শান্ত স্বভাবের মানুষ হলেও ’৭৩-এ একটি বিতর্কিত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছিলেন। ডার্বি ম্যাচের রেফারি বিশ্বনাথ দত্তকে ঘুষি মেরেছিলেন চোখে। সাসপেন্ডও হয়েছিলেন সে জন্য। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা নিয়ে আফসোস ছিল তাঁর। বলতেন, ‘‘ওই দিনটা ভুলে যেতে চাই। কেন যে ওটা করেছিলাম, আজও বুঝতে পারি না।’’ অনুতাপে ক্ষমা চেয়ে এসেছিলেন বিশ্বনাথবাবুর বাড়িতে গিয়ে। তাঁর মৃত্যুতে ময়দানে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন শেষে সুভাষ এ দিন বলে দেন, ‘‘আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতায় আসার পর দু’জনে এক সঙ্গে থাকতাম। বড় ম্যাচের দিন ও আমাকে ইস্টবেঙ্গলে নামিয়ে দিয়ে মোহনবাগানে যেত। জীবনের বহু সুখস্মৃতি জড়িয়ে আছে ওর সঙ্গে।’’ আর এক প্রাক্তন শ্যাম থাপা বললেন, ‘‘গোলটা চিনত। পায়ে প্রচণ্ড জোরাল শট ছিল। গোলার মতো তা ঢুকত বিপক্ষের গোলে। টাইব্রেকারে পেনাল্টি পেলে ওরই প্রথমে ডাক পড়ত। ওর মৃত্যুর খবর পেয়ে খুব খারাপ লাগছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন