দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল আইএসএল-টু। আর সেখানে সাধ্যমতো চেষ্টা করেও একদম শেষ মুহূর্তে খেতাব আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেল। পরিকল্পনামাফিক ঠিকঠাক এগিয়েও শেষের তিন মিনিটে সব হিসেব পাল্টে গেল। আর আমরা রানার্স হিসেবে শেষ করলাম টুর্নামেন্ট। এটাই ফুটবলের মজা। গত পঞ্চাশ বছর ধরে ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। সেই স্মৃতি হাতড়ে এ পর্যন্ত মাত্র একটা ঘটনাই মনে করতে পারছি, যেখানে এ ভাবে এত দ্রুত চ্যাম্পিয়নশিপের ভাগ্য বদলে গিয়েছে।
এ বছর ট্রফি জেতার জন্য গোটা এফসি গোয়া টিমটাই মরসুমের শুরু থেকে একাগ্র ছিল। তার জন্য গত চার মাসে প্রত্যেক দিন আমরা অনুশীলনে চার ঘণ্টা করে সময় দিয়েছি। পরিবার বন্ধুবান্ধব-সহ জাগতিক অনেক বিষয় দূরে সরিয়ে সবাই মনোনিবেশ করেছিল ট্রফিটার দিকে। কিন্তু তার পরে এতদূর উঠে আসার পর ট্রফিটা যদি পরিস্থিতির সৌজন্যে অন্য কারও হাতে চলে যায় তার দুঃখটা বলে বোঝানো খুব কষ্টকর। তবে ফাইনালের রেফারিং সত্যিই খুব খারাপ হয়েছে। বার বার ভুল হচ্ছিল ওদের ম্যাচ পরিচালনায়। যদি সেগুলো ঠিকঠাক হত, তা হলে ম্যাচের শেষে ফল অন্য রকম হলেও হতে পারত।
চেন্নাই ট্রফিটা জিতলেও, আমার মনে হয়, খেতাবটা আমরাও পেতে পারতাম। জেতার জন্য মাঠে যা যা করা দরকার ছিল সেগুলোই করেছিলাম আমরা। কিন্তু তার পরেও ফুটবল মাঠে এমন কিছু হয়ে যায়, যেখানে পরিস্থিতি ফুটবলারদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আর সে দিন সেটাই হয়েছে আমাদের টিমের সঙ্গে। রবিবার রাতের পর ওই ম্যাচের ভিডিও ক্লিপিংস বার বার দেখে বের করার চেষ্টা করেছি সে দিন কী ভাবে ফারাকটা তৈরি হল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুস্পষ্ট আইডিয়া পাইনি।
টুর্নামেন্টের শেষে আমার ছেলেদের একটা বড়সড় ধন্যবাদ দিতেই হবে। কারণ কঠিন সময়েও ওদের পরিশ্রম এবং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। আশা করি, এ বারের টুর্নামেন্ট থেকে ওরা কিছু শিখবে। একই সঙ্গে ধন্যবাদ প্রাপ্য টিম ম্যানেজমেন্ট এবং মালিকদেরও। টুর্নামেন্টের প্রথম দিন থেকেই ওঁরা শুধু স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন তা নয়, চাহিদা মতো সব কিছুর জোগানও দিয়ে গিয়েছেন।
সব শেষে গোয়ার ফুটবল সমর্থকদের কথা বলতে হবে। আশা রাখি, আমাদের সার্বিক পারফরম্যান্স ওদের মন জয় করেছে। মাঠে আমাদের সেরা পারফরম্যান্সটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। গোয়া সম্পর্কে একটা ভাল স্মৃতি নিয়েই দেশে ফিরছি। সবার উপরে গোয়ার মানুষের ভালবাসা ও আবেগটাও একটা বড় প্রাপ্তি।