অনুশীলনে ফ্রান্স অধিনায়ক লরিস। ছবি: এএফপি।
বহু প্রতীক্ষার ইউরো ২০১৬ শুরু হচ্ছে আজ। আর প্রথমেই যা বলে এই প্রতিবেদন শুরু করব তা জানার পর টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট তিন দেশের সমর্থকরা রেগে যেতে পারেন।
আমার গণনা অনুযায়ী, এ বারের ইউরো কাপে বেশ কয়েকটা নাম করা দেশ চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না। যার মধ্যে স্পেন, জার্মানি, বেলজিয়াম—এই তিন দেশ রয়েছে।
কেন? তা বলতে গিয়ে প্রথমে বলি, একটা ব্যাপার দেখবেন যে ক্রীড়া জগতের তারকারা সব পিঠোপিঠি জন্মায়। যেমন ১৯৮১ সালে জন্ম মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং ইকের কাসিয়াস, রজার ফেডেরারের। যখন ইউরেনাস এবং প্ল্যানেট ওয়াই ছিল উচ্চস্থ। টেনিসের এর পরের সুপারস্টাররা জন্মেছেন ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭-র মধ্যে। যেমন নোভাক জকোভিচ, রাফায়েল নাদাল, অ্যান্ডি মারে, স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কা। এই সময় আবার উচ্চস্থ ছিল প্ল্যানেট-এক্স এবং প্ল্যানেট-জেড। ক্রিকেটেও ঠিক সে ভাবেই ১৯৮৬-৮৭ সালে জন্মানো রোহিত শর্মা এবং ডেভিড ওয়ার্নার আইপিএল জিতছে। যখন ১৯৮১-র জাতক ধোনি এবং গম্ভীর ওদের জয়ের কোটা পূর্ণ করে ফেলেছে বহু দিন আগে।
সেই গণনা অনুয়ায়ী, ফুটবলেও ইউরোপের যে সুপারস্টাররা ইউরো ২০১৬ এ বার জিততে পারে তাদের হতে হবে ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সালের জাতক। স্পেনের ইকের কাসিয়াস তিনটে খেতাব—ইউরো কাপ, বিশ্বকাপ ও ইউরো কাপ জিতে তাঁর সাফল্যের কোটা পূরণ করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। ওঁর আর কোনও বড় টুর্নামেন্ট জয়ের সম্ভাবনা চোখে পড়ছে না। গ্রুপ লিগের বাধা টপকাতে পারলে নক আউটে গেলেই স্পেনের বিদায়ের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।
জার্মানির বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগারেরও এ বার ইউরো জয়ের কোনও আশা দেখছি না। কারণ ওর জন্ম ১৯৮৪ সালে যখন শনি ছিল উচ্চস্থ আর বৃহস্পতি ছিল তার নিজের ঘরে। কোচ জোয়াকিম লোয়ের ভাগ্যাকাশের যা অবস্থা তাতে ওঁর নিজেরও বড় কোনও টুর্নামেন্ট জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই। বেলজিয়ামও কাপ জিততে পারবে না কারণ ওদের আসল অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানির চোট পেয়ে টুর্নামেন্টের বাইরে চলে যাওয়া। যদি খেলত তা হলে ওদের একটা সম্ভাবনা ছিল। কারণ কোম্পানি ১৯৮৬ সালের জাতক। এডেন হ্যাজার্ডের এখনও বড় টুর্নামেন্ট জয়ের সময় আসেনি। ঠিক একই অবস্থা ইতালিরও। ওরা তখনই ইউরো জিততে পারে যদি ওদের বর্ষীয়ান গোলকিপার জিয়ানলুইগি বুঁফোকে সরিয়ে কোনও তরুণ অধিনায়কের হাতে ইতালির দায়িত্ব তুলে দেওয়া যায়।
তা হলে ইউরো ২০১৬ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার কারা? আমার গণনা অনুযায়ী, এ ব্যাপারে সবচেয়ে সম্ভাবনা বেশি ফ্রান্সের। আর সুক্ষ্ম ভাবে ব্যাপারটা বলতে গেলে ওদের তরুণ অধিয়ানক হুগো লরিসের ভাগ্য বেশ ভাল। ১৯৮৬ সালের জাতক লরিসের ভাগ্য ইউরোর সব অধিনায়কের চেয়ে একটু বেশি চাঙ্গা। কারণটা হল ওর ভাগ্যে ইউরেনাস, প্ল্যানেট এক্স এবং প্ল্যানেট জেড বেশ উচ্চস্থ। আর ফ্রান্স দলটারও গোলকিপার থেকে কোচ— সবার ভাগ্যই বেশ ভাল। তাই বলা যেতেই পারে বিশাল কোনও অঘটন না ঘটলে ইউরো কাপ ওদের হাতে দেখতে পাচ্ছি।
টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফেভারিট হল ইংল্যান্ড ও পর্তুগাল। এই দুই টিমের ক্যাপ্টেন ওয়েন রুনি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো দু’জনেরই জন্ম ১৯৮৫ তে। এ ছাড়াও নজর রাখতে হবে অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, রাশিয়া, রিপাবলিক অব আয়ার্ল্যাল্ড, তুরস্ক এবং হাঙ্গেরির দিকে। বেশ কিছু শক্তিশালী টিমকে টুর্নামেন্ট থেকে ছুটি করিয়ে দেওয়ার ভাগ্য ও শক্তি দু’টোই পুরোদমে রয়েছে ওদের।