চ্যাম্পিয়ন করে বায়ার্নকে বিদায় রবেন-রিবেরির

পরিসংখ্যান বলছে, ক্লাবকে উপহার দিয়েছেন আটটি বুন্দেশলিগা, জার্মান কাপ চার বার। জার্মান সুপার কাপ পাঁচ বার, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এক বার ও উয়েফা সুপার কাপ এক বার।  শনিবার সেই সফরে ইতি টেনে দিলেন আরয়েন রবেন। তাঁরই সঙ্গে বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করলেন আর এক লড়াকু ফুটবলার ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০৫:৩০
Share:

আবেগাপ্লুত: বায়ার্নকে বুন্দেশলিগা দিয়ে রবেন-রিবেরির উচ্ছ্বাস। এএফপি

এক দশক আগে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে তিনি এসেছিলেন বায়ার্ন মিউনিখে। আলিয়ান্‌জ এরিনায় শুরু হয়েছিল সাফল্যের নতুন অভিযান।

Advertisement

পরিসংখ্যান বলছে, ক্লাবকে উপহার দিয়েছেন আটটি বুন্দেশলিগা, জার্মান কাপ চার বার। জার্মান সুপার কাপ পাঁচ বার, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এক বার ও উয়েফা সুপার কাপ এক বার। শনিবার সেই সফরে ইতি টেনে দিলেন আরয়েন রবেন। তাঁরই সঙ্গে বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করলেন আর এক লড়াকু ফুটবলার ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি। ২০০৭ সালে মার্সেই ছেড়ে খেলতে এসেছিলেন বায়ার্নে। ক্লাবের আকাশছোঁয়া সাফল্যের সঙ্গে তাঁর নামও জড়িয়েছিল অঙ্গাঙ্গী ভাবে। তিনিও শনিবার ক্লাবের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন। আর তাঁদের বিদায়ের সঙ্গে শেষ হয়ে গেল জার্মান ক্লাব ফুটবলের এক সোনালি অধ্যায়।

টানা সাত বার ক্লাবকে বুন্দেশলিগা উপহার দিয়ে বিদায় নেওয়ার মুহূর্তে নিজেকে নির্লিপ্ত রাখার চেষ্টা করেও শেষরক্ষা করতে পারলেন না দুই তারকা। ম্যাচের পরেই কেঁদে ফেলেন রবেন। পরে ক্লাবের ওয়েবসাইটে তিনি বলেছেন, ‘‘আজকের দিনটা নিঃসন্দেহে আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাবের হয়ে শেষ ম্যাচে গোল করলাম। দলকে লিগ ট্রফি উপহার দিলাম। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে।’’ সেখানেই নিা থেমে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর থেকে প্রত্যেক মুহূর্তে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কোনও সময়ে সফল হয়েছি। অনেক সময়ে আবার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। তবে এটাই ফুটবলের অঙ্গ। সমর্থকদের আনন্দ দিতে পেরেছি, তার চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কিছু হতে পারে না। এ ভাবেই বায়ার্ন-অধ্যায় শেষ করতে চেয়েছিলাম।’’

Advertisement

একই সুর ফ্র্যাঙ্ক রিবেরির। শনিবার ৩৬ বছরের তারকার শেষ ম্যাচ দেখতে ফ্রান্স থেকে উড়ে এসেছিলেন তাঁর পরিবার। ম্যাচের পরে রিবেরি বলেছেন, ‘‘আমার গোটা পরিবার এই ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন। তাঁদের সামনে গোল করলাম। দলকে জয় এনে দিলাম। বুন্দেশলিগা ট্রফি ক্লাবকে তুলে দিয়ে আজ খুব তৃপ্তি অনুভব করছি।’’ রিবেরি আরও বলেছেন, ‘‘এই ক্লাবের সঙ্গে অনেক সুন্দর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তবে আমার জীবনে সেরা মরসুম ২০১২-১৩। সেই মরসুমে আমরা ত্রিমুকুট জিতেছিলাম। সেটাই সেরা মুহূর্ত।’’ আরও বলেছেন, ‘‘এই ক্লাবে এসেছিলাম খোলা একটা বই নিয়ে। যার পাতাগুলো ছিল খালি। আজ তা পরিপূর্ণ। ফলে সেই বইটাও বন্ধ করে দিচ্ছি। বাকি উপলব্ধিগুলো নিজের মনেই রেখে দিতে চাই।’’

বায়ার্নে দুই তারকার সঙ্গী পোলান্ড তারকা রবার্ট লেয়নডস্কি বলেছেন, ‘‘শুধু ওদের জন্যই এই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে চেয়েছিলাম। অনেক কিছু শিখেছি রবেন এবং রিবেরির থেকে। এটা ভেবে খারাপ লাগছে যে, পরের মরসুমে ওদের পাশে পাব না।’’ ক্লাব প্রেসিডেন্ট উলি হোয়েনেস বলেছেন, ‘‘ওদের ছাড়া বায়ার্ন মিউনিখ এই উচ্চতায় পৌঁছতে পারত না। আমরা সকলেই রবেন এবং রিবেরির কাছে কৃতজ্ঞ।’’

শনিবার ম্যাচের পরে ম্যানেজার নিকো কোভাচও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শুধু এটুকু বলতে পারি, বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে বুন্দেশলিগাকেও একটা উচ্চস্তরে পৌঁছে দিয়েছিল রবেন এবং রিবেরি। গত এক দশক ধরে ওরা এই ক্লাবকে যে ভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, তা ভাষায় ব্যাখ্যা করতে পারব না। কোচ হিসেবে ওদের মতো ফুটবলারদের পাওয়া আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। আমি গর্বিত।’’ শুধু তাই নয়। বুন্দেশলিগা জয়ের সঙ্গে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কাও কিছুটা হলে দূর হল। কোভাচ অবশ্য বলেছেন, ‘‘উত্থান-পতন থাকবেই। আমি তো রোবট নই। ফলে অনেক সময়েই ব্যর্থ হয়েছি। তবে তা নিয়ে ভাবতে চাই না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন