french open

French Open 2021: ইতিহাস গড়ে জোকোভিচের মুখে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই চিচিপাস

শেষে যা বললেন সেটা শুনলে মনে হবে ‘জোকার’ স্রেফ একজন টেনিস খেলোয়াড় নন। স্পেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি যেন সার্বিয়ার রাষ্ট্রদূত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০০:৫২
Share:

দ্বিতিয়বার ফরাসি ওপেন জেতার পর নোভাক জোকোভিচ। ছবি - টুইটার

শেষ ম্যাচ পয়েন্টটা পকেটে পুরে ডানহাতকে মুষ্টিবদ্ধ করে একবার খুব জোরে হুঙ্কার দিয়েছিলেন। ব্যস ওটাই ছিল ওঁর উল্লাস। বাকি সময়টা শান্ত মনে হাসিমুখে বসে থেকে এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তকে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন নোভাক জোকোভিচ। আর হবে নাই বা কেন! দুবার ফরাসি ওপেন জয়। ৫২ বছরের ইতিহাস স্পর্শ করে ১৯তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। তবে এমন জয় পেয়েও প্রতিপক্ষ ২২ বছরের স্টেফানোস চিচিপাস ও তাঁর দেশ গ্রীসকে সম্মানে ভরিয়ে দিলেন সার্বিয়ার এই তারকা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জোকারের মুখে শুধুই ‘স্তেফানোস’।

Advertisement

পুরুষদের ফাইনালের মঞ্চে এ দিন যেন ছিল তারকার সমারোহ। বিয়ন বর্গের সঙ্গে ছিলেন জিম কুরিয়ার। ছিল দুই যোদ্ধার পরিবার, প্রশিক্ষক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন গ্রীস ও সার্বিয়ার পতকা বহন করা একাধিক সমর্থক। সবার সামনেই এল প্রায় চার ঘণ্টার লড়াইয়ের পর কষ্টার্জিত জয়। দুই সেট হেরে গিয়েও খেলার ফলাফল জোকারের পক্ষে গেল। ৬-৭ (৬-৮), ২-৬, ৬-৩, ৬-৩, ৬-৪।

তাই পরিবার ও সমর্থকদের দিকে উড়ন্ত চুম্বন ছুঁড়ে বিয়ন বর্গের হাত থেকে ট্রফি নিলেও বাড়তি উল্লাস দেখাননি। বরং প্রতিপক্ষ চিচিপাসের প্রশংসা করে জোকোভিচ বলেন, “বিয়ন বর্গ ও জিম কুরিয়ারের মতো মানুষের কাছ থেকে এই পুরস্কার নিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কারণ এঁরাই তো আমাদের প্রিয় টেনিসকে সবার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তবে এখন শুধু চিসিপাসকে নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি ওর মানসিক অবস্থা বেশ বুঝতে পারছি। কারণ আমিও এমন কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে জয়ের খুব কাছে গিয়ে হেরে যাওয়া ও সেই হারকে মেনে নেওয়া খুব কঠিন। তবে এই হার কিন্তু ওকে ভবিষ্যতে শিক্ষা দেবে। আশা করি চিসিপাস ও ওর টিম এই হার থেকে শিক্ষা নেবে। আমি নিশ্চিত ও ভবিষ্যতে আরও অনেক গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতবে।”

Advertisement

গত ৪৮ ঘণ্টা যে তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম অধ্যায় ছিল সেটাও জানাতে ভুলে যাননি জোকোভিচ। সেমি ফাইনালে রাফায়েল নাদালের বিরুদ্ধে প্রথম দুটি গেমে হার দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। তারপর এসেছিল দাপুটে প্রত্যাবর্তন। ৩-৬, ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৬-২ ব্যবধানে জিতে যেন ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ জয় করেছিলেন জোকোভিচ। এ বারের ফাইনালও জোড়া সেট হার দিয়ে শুরু হয়েছিল। সেটা তিনি জানেন। আর তাই বললেন, “সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমাকে ও চিসিপাসকে সমানতালে আপনারা ভরসা জুগিয়ে গিয়েছেন। আমি এই ৪৮ ঘণ্টা জীবনে ভুলতে পারব না। প্রথমে নাদাল আর এ বার চিসিপাস, এমন ম্যাচের স্মৃতি সম্বল করেই এগিয়ে যাব।”

আর শেষে যা বললেন সেটা শুনলে মনে হবে ‘জোকার’ স্রেফ একজন টেনিস খেলোয়াড় নন। স্পেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি যেন সার্বিয়ার রাষ্ট্রদূত। জেতার পর যেমন দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে পতাকা উঠতে দেখে গর্বে তাঁর বুক আরও চওড়া হয়ে যায়। ঠিক তেমনই তিনি প্রকৃত পেশাদার হিসেবে বিপক্ষের দেশকে সম্মানও জানালেন।

হাসিমুখে বললেন, “গ্রীস থেকে আসা ভাই-বোনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। সার্বিয়ার সঙ্গে তোমাদের দেশের সম্পর্ক খুব ভাল। শুধু তাই নয়, তোমাদের দেশ থেকে চিসিপাস ও মারিয়া সাক্কারির মতো প্রতিভা উঠে আসছে। সেটা টেনিস বিশ্বের কাছে দারুণ খুশির খবর।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন