হতাশ ডাফি। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বিপক্ষের টিম লিস্ট নিয়ে ঝামেলায় শুরু হওয়া ম্যাচ শেষ হল মোহনবাগানের স্বপ্নভঙ্গের হতাশায়!
সোমবার ঘরের মাঠে পিয়ারলেস ম্যাচ শুরুর আগে প্রতিপক্ষ তাদের রিজার্ভ বেঞ্চের তিন ফুটবলার বাদ দিয়ে নতুন তিনজনের নাম নথিভুক্ত করে। যাঁরা কুড়িজনের তালিকাতেও ছিলেন না। ততক্ষণে পিয়ারলেসের টিম লিস্ট চলে গিয়েছিল আইএফএর হাতে। মোহনবাগানও বিপক্ষের সেই অপরিবর্তিত তালিকা পেয়েছিল। পরে ঘটনা জানতে পেরে বাগান কর্তারা প্রতিবাদ করেন। এবং ম্যাচ কমিশনার দেবাশিস মিশ্রর নির্দেশে পিয়ারলেসের সেই তিন ফুটবলারকে বের করে দেওয়া হয়। ম্যাচ শুরু হতে কুড়ি মিনিট দেরি হয়ে যায়।
কিন্তু তার পরের নব্বই মিনিট মাঠে ডাফি-তপন-প্রবীরদের বিশ্রী পারফরম্যান্স দেখে নৈশালোকেও যেন অন্ধকার ঘনিয়ে আসে বাগান গ্যালারিতে! মরসুমের প্রথম ড্র করার ধাক্কায় কলকাতা লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে দু’পয়েন্টে পিছিয়ে পড়ল মোহনবাগান। দশ ম্যাচের ছোট লিগে যা বাগানের বড় ক্ষতি হিসেবে টুর্নামেন্ট শেষে দেখা দিতেই পারে।
পাশাপাশি এ দিনের পরে আইএফএকেও একটা প্রশ্ন খোঁচা মারছে— ময়দানের ছোট দলগুলোও কি কলকাতা লিগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না?
টুর্নামেন্টের নিয়মে, আইএফএর কাছে কোনও দলের ফুটবলার তালিকা পৌঁছনোর পর তাদের সেই ম্যাচে নথিভুক্ত ফুটবলারের বাইরে আর কাউকে পরিবর্তন করা যায় না। পিয়ারলেস কর্তারা বোধহয় বিষয়টা গুরুত্বই দেয়নি। তবে মাঠের ভেতর নৈতিক জয় অফিস দলটারই।
বাগান নয়, গোটা ম্যাচ গঠনমূলক ফুটবল খেলল ফুজা তোপের পিয়ারলেস-ই। ফুজা তোপে এমন একজন কোচ যিনি বড় দলের গাঁট। পোড়খাওয়া প্রাক্তন আন্তর্জাতিক তারকা রহিম নবির নেতৃত্বে বাগানের উইং প্লে আটকে, কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে রাজু গায়কোয়াড়দের ডিফেন্সকে বিপাকে ফেলে দিচ্ছিল পিয়ারলেস। সবুজ-মেরুন হাতেগুনে গোলের মাত্র দুটো পজিটিভ সুযোগ পেয়েছিল। দুটোই ভাল সেভ করেন গোলকিপার শঙ্কর রায়। গোলের মধ্যে থাকা ড্যারেল ডাফিদের হঠাৎ এ হেন পদস্খলনের কারণ কী? বাগানের কলকাতা লিগ কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীও উত্তর দিতে পারছেন না। কেবল বললেন, ‘‘আমার ছেলেরা খারাপ খেলেছে। কেন খারাপ খেলল সেটা ওদের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে হবে।’’
তুকতাকের ময়দানি ফুটবলে অবশ্য বাগান সমর্থকেরা স্থানীয় লিগে প্রিয় দলের পিছিয়ে পড়ার উত্তর বার করে ফেলেছেন! কথায় আছে না, কোনও কাজ শুরুর আগে যদি তাতে বাধা পড়ে তবে সেই কাজের ফল ভাল হয় না! বেশির ভাগ সবুজ-মেরুন সমর্থক ম্যাচ শেষে ডাফিদের ব্যর্থতার জন্য ম্যাচের আগের ঝামেলাকেই দুষলেন!
মোহনবাগান: অর্ণব, সার্থক, স়ঞ্জয়, রাজু, দীপক (তন্ময়), তপন (বিদেমি), শরণ, রবিনসন, প্রবীর, আজহারউদ্দিন, ডাফি (অজয়)।