গত বারেও হল না, এ বারেও ফস্কে গেল!
জুলাই মাসে ফিনল্যান্ডে অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে হিমা দাস যখন প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সোনার পদক জিতছেন, নগাঁও জেলার কান্ধুলিমারি গ্রাম তখনও প্রচারের আলোয় আসেনি। কিন্তু এক মাস পরে এশিয়ান গেমসের ৪০০ মিটার দৌড় যখন চলছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায়, তখন একদা অখ্যাত কান্ধুলিমারি গ্রামের দিকে গোটা দেশের নজর ছিল। কিন্তু দিন বদলালেও মন্দ কপাল বদলালো না গ্রামবাসীর। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে চারশো মিটার ফাইনালের মতোই এ বারেও এশিয়ান গেমসে চারশো মিটার ফাইনালে ঘরের মেয়ের দৌড় সরাসরি দেখতে পেলেন না হিমার পরিবার ও বাড়িতে জড়ো হওয়া প্রায় হাজার চারেক মানুষ। খলনায়ক বিদ্যুৎ বিভাগ।
গত বার লোডশেডিংয়ের জন্য হিমার সোনার দৌড়ের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে না পাওয়ায় এ বার হিমার দৌড়ের আগের দিন ধিঙবাসীর দাবি ছিল বিকেলের পর থেকে যেন কোনওভাবেই লোডশেডিং না হয়। কিন্তু সেটাই ঘটল। তাও আবার দৌড় শুরু হওয়ার ঠিক আগেই। সকলে মিলে দৌড় দেখবেন বলে হিমাদের বাড়ির সামনে প্রজেক্টর ও পর্দা বসানো হয়েছিল। কিন্তু বিকেল পাঁচটায় বিদ্যুৎ চলে যায়। খানিকক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় দৌড়ের আগে প্রোজেক্টর আর ঠিক করা যায়নি। যান্ত্রিক গণ্ডগোলও হয়। তাই হিমার পদক জেতার ‘লাইভ’ মুহূর্তটা আবারও দেখতে পেলেন না হিমার পরিবারের ১৭ জন সদস্য ও আশপাশের হাজার-হাজার মানুষ। অবশ্য অল্প পরেই পর্দায় ফুটে ওঠে হিমার দৌড়। আনন্দে মাতেন সকলে।
হিমার প্রতিবেশীরা জানান, বছর কয়েক আগেও হিমা বিশ্বনাথ চারিয়ালিতে দৌড় প্রতিযোগিতা জিতেছিল খালি পায়ে দৌড়ে। বাড়ি ফিরে আবদার করেছিল, একটা স্পাইক বুট কিনে দিতে হবে। কাকিমার কাছ থেকে দু’হাজার টাকা নিয়ে হিমা প্রথম দৌড়ের জুতোটা কিনেছিল। এখন সেই পায়েই নামী কোম্পানির ৬৫ হাজার টাকার জুতো। আজ, মঙ্গলবার দু’শো মিটারে নামছেন হিমা।