এর পর ভারতের দায়িত্বে আর রাখা কেন ধোনিকে

ভুল শুধরে অশ্বিনকে প্রাপ্য দায়িত্ব দিতে হয়েছিল। অ্যাডাম জাম্পাকেও খেলাতে হল এক রকম বাধ্য হয়েই। অনেক দেরি হলেও দুটো ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ধোনি। কিন্তু তার পরেও খামখেয়ালিপনার ভূত চেপে বসল ওর ঘাড়ে।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৬ ০৪:৩৯
Share:

ভুল শুধরে অশ্বিনকে প্রাপ্য দায়িত্ব দিতে হয়েছিল। অ্যাডাম জাম্পাকেও খেলাতে হল এক রকম বাধ্য হয়েই। অনেক দেরি হলেও দুটো ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ধোনি। কিন্তু তার পরেও খামখেয়ালিপনার ভূত চেপে বসল ওর ঘাড়ে। যার জেরে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ছেলেখেলা করতে গেল আর ডুবল।

Advertisement

মঙ্গলবারের হারের পর বলে দেওয়া যাচ্ছে আইপিএল থেকে ছিটকেই গেল পুণে সুপারজায়ান্টস। ন’ বছরে এই প্রথম নক আউটে না উঠেই বিদায় নিতে হল ধোনিকে। ভুলের পর ভুল করে দলকে এমন ব্যর্থতার অন্ধকারে ঢেকে দিতে পারে ওর মতো দুটো বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক, এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।

পুরো টুর্নামেন্ট ধরে এই মঙ্গলবারের ম্যাচটা ছাড়া অশ্বিনকে ঠিক মতো কাজেই লাগাল না ধোনি। আর জাম্পার মতো বোলার হাতে থাকা সত্ত্বেও শেষ দুটো ম্যাচ ছাড়া বাকি সময়টা ওকে রিজার্ভ বেঞ্চেই বসিয়ে রাখল। হায়দরাবাদের ইনিংসটা দেখার পর মনে হচ্ছিল, ভুলগুলো শুধরেছে ধোনি আর ম্যাচটাও জিতবে। কিন্তু তখনও বুঝিনি ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে কী ছেলেখেলা করতে চলেছে।

Advertisement

এ দিন ধোনির মুকুটে আরও একটা পালক খসে পড়ল। ফিনিশার ধোনি-র যে সুনাম ছিল এত দিন, তাও এ দিন বিরাট ধাক্কা খেল। যখন ও ব্যাট করতে নামে, পুণের ৩০ বলে ৫২ দরকার। ধোনির পক্ষে এটা কোনও ব্যাপারই নয়। কিন্তু এ দিন সেই কাজটাই করতে পারল না। শেষ ওভারে আশিস নেহরাকে একটা ছয় মারার পরেও। হয়তো ধোনির সেই পুরনো ভাগ্য কাজ করলে শেষ বলে জাম্পার মারা খোঁচাটা চার হয়ে গিয়ে ম্যাচ সুপার ওভারে চলে যেত। কিন্তু এখন ধোনির ভাগ্যও কাজ করছে না। নমন ওঝার অসাধারণ একটা ক্যাচে পুণের ইনিংস শেষ হয়ে গেল ১৩৩-৮ স্কোরে। হায়দরাবাদের ১৩৮-এর জবাবে।

এ দিন হায়দরাবাদ ছ’ওভারে ৩৪ তোলার পর অশ্বিনকে সাত নম্বর ওভারে বল করতে পাঠায় ধোনি। এই আইপিএলে দলের সেরা স্পিনারকে যে ভাবে ব্যবহার করেছে পুণে সুপারজায়ান্টসের ক্যাপ্টেন, তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। বেশির ভাগ ম্যাচেই অশ্বিনকে পুরো কোটা বলও করানো হয়নি। গত ম্যাচে তো ওকে বলই দেওয়া হয় একেবারে ইনিংসের শেষ দিকে। আমি যদি পুণের কোচ হতাম, তবে আমার সেরা অস্ত্র হত অশ্বিন। এবং আমার অধিনায়ককে আমি সেটাই বলতাম। বলতাম, আগে প্ল্যান করো অশ্বিনকে কী ভাবে ব্যবহার করবে, তার পর বাকিদের কথা ভেবো।

টুর্নামেন্ট থেকে একেবারে ছিটকে যাওয়ার মুখে এসে ধোনি নিজের ভুল দুটো শুধরে নিল ঠিকই, কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারে আবার সব তালগোল পাকিয়ে ফেলল। অশ্বিনকে এ দিন চার নম্বরে ব্যাট করতে দেখে তো চমকে গিয়েছি। আবার জর্জ বেইলি যখন টিমের ৬৮-র স্কোরে আউট হয়ে গেল, তখন কোথায় ও নিজে নামবে, তা না করে সৌরভ তিওয়ারিকে পাঠিয়ে দিল ব্যাট করতে! ভাল দল পেলে এ সব খামখেয়ালিপনা চলে। যেটা ধোনি চেন্নাই সুপার কিংগস বা ভারতীয় দলের ক্ষেত্রেও করে এসেছে বারবার। কিন্তু আইপিএলে ওর দল থেকে চোটের জন্য পরপর চারটে বিদেশি ছিটকে যাওয়ায় এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তার পরেও ধোনি যে গোঁয়ার্তুমিটা করে গেল, সেটাই পুণের সর্বনাশের কারণ হল।

যে ভাবে এই আইপিএলটায় ধোনি নেতৃত্ব দিল, তাতে একটা কথা বলতেই হবে। এ বার কিন্তু সময় এসেছে ভারতীয় দলের দায়িত্ব থেকে ধোনিকে সরিয়ে দেওয়ার। বিরাট কোহালিকেই সব ফর্ম্যাটের দায়িত্ব দেওয়া হোক। ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন আইডিয়া আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন