এটিকে প্র্যাকটিসে হিউম। ছবি: উৎপল সরকার।
জিকোর গোয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেও আটলেটিকো দে কলকাতার দুই চোট পাওয়া ফুটবলারের খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।
শুক্রবারও অনুশীলনে পস্টিগা এবং তিরিকে ফিজিও-র কাছে পাঠিয়েছিলেন জোসে মলিনা। ‘‘রবিবার সকালে সব পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’ ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন কলকাতার কোচ।
পস্টিগা, তিরির খেলা নিয়ে জল্পনা চললেও কলকাতার জন্য সুখবর, নাতো চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেছেন। এ দিন তিনি টিমের সঙ্গে পুরো প্র্যাকটিসও করেছেন। শোনা যাচ্ছে, গোয়ার বিরুদ্ধে তাঁকে টিমে রাখা হতে পারে। তবে মলিনা যে টিমই নামান না কেন, জিকোর টিমের বিরুদ্ধে জিততে না পারলে সমস্যা বাড়বে কলকাতার। এ সবের মধ্যে আবার ইয়ান হিউমও নাকি কোচের স্ট্র্যাটেজিতে খুশি নন। হিউম চাইছেন স্ট্রাইকারে খেলতে, মলিনা তাঁকে খেলাচ্ছেন স্ট্রাইকারের পিছন থেকে। কখনও পস্টিগার পিছনে, কখনও জোয়ান বেলোনকোসোর পিছন থেকে খেলতে হচ্ছে হিউমকে। আগের কোচ অন্তোনিও লোপেজ হাবাস দলের প্রধান স্ট্রাইকার হিসেবে হিউমকে গত বছর ব্যবহার করেছিলেন। টিমের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসাবে ১১টি গোলও পেয়েছিলেন হিউম। ছিলেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। আর এ বার তিন ম্যাচ খেলে এখনও পর্যন্ত তাঁর পা থেকে একটি গোলই এসেছে। সেটাও পেনাল্টি থেকে। আটলেটিকো সূত্রের খবর, গোল করার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছেন স্কটিশ স্ট্রাইকার। তাঁর ধারণা স্ট্রাইকারে খেললেই সেটা সম্ভব। কোচের কাছে নাকি তা নিয়ে মৃদু আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
লিগ টেবলে কলকাতা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে জিকোর টিমের চেয়ে। এটিকের যেখানে তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট, গোয়া সেখানে হারের হ্যাটট্রিক করে সবার শেষে। কোনও পয়েন্ট এখনও তাদের সংগ্রহে নেই। তার উপর আবার কলকাতার টিম খেলবে নিজেদের ঘরের মাঠে। সেটাও মলিনার টিমের কাছে নিঃসন্দেহে প্লাস পয়েন্ট। তবে দ্যুতি-হিউমদের কোচ মনে করছেন, জিকোর টিম এই ম্যাচটা জেতার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে। টিম মিটিং-এ সেটা বারবার বলছেন মলিনা। অন্তত ফুটবলাররা সে রকমই বলছেন।
চেন্নাইয়ান বৃহস্পতিবার গোয়াকে দু’গোলে হারানো সত্ত্বেও মাতেরাজ্জি কিন্তু অন্য টিমগুলোকে সাবধান করার ঢঙেই সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছেন, ‘‘এফসি গোয়া খুবই ভাল টিম। আমাদের কাছে হেরেছে মানে এই নয়, তারা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছে।’’
এ দিকে হারের পর হারেও মচকানোর পাত্র নন জিকো। এ দিনই চেন্নাই থেকে টিম নিয়ে শহরে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। টানা তিন ম্যাচে জয় নেই, তবু তিনি নিজের টিমের ফুটবলারদের মানসিক ভাবে উদ্দীপ্ত করার জন্য প্রথম আইএসএলের উদাহরণ টেনে এনে বলছেন, ‘‘আইএসএলের প্রথম বছর আমাদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। যেমন এই বছর। সে বার প্রথম লেগ থেকে আমরা মাত্র পাঁচ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম। তার পরও শেষ চারে উঠেছিলাম। এ বার তো মাত্র তিনটে ম্যাচ হয়েছে। এখনও আমরা কিছুই হারাইনি।’’
এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের কোনও কিছুই ঠিকঠাক কাজ করছে না। তবে আমরা কাম ব্যাক করবই। হয়তো পরের ম্যাচ থেকেই।’’ জিকোর এই মন্তব্য নেহাৎ ফেলে দেওয়ার মতো নয়। এটিকে-র কাছে এটা এক ধরনের আশঙ্কার বার্তা বলা যেতেই পারে।