হিরের শহরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ঝকঝকে লড়াই শেষ ড্রয়ে

মহাম্যাচ শেষে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দু’দেশের দুই অধিনায়কই টিভি সাক্ষাৎকারে দাবি করলেন, তাঁদেরই জেতা উচিত ছিল! ভারত-পাক স্টিক যুদ্ধের আবহ যেমনটা থাকার কথা তেমনটাই আর কী! ড্রতেও যেখানে জয়ের উত্তেজনা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৫ ০৩:৫১
Share:

ভারতের গোলদাতা রামনদীপ।

ভারত-২ (রামনদীপ-২)

Advertisement

পাকিস্তান-২ (ইমরান-২)

Advertisement

মহাম্যাচ শেষে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দু’দেশের দুই অধিনায়কই টিভি সাক্ষাৎকারে দাবি করলেন, তাঁদেরই জেতা উচিত ছিল! ভারত-পাক স্টিক যুদ্ধের আবহ যেমনটা থাকার কথা তেমনটাই আর কী! ড্রতেও যেখানে জয়ের উত্তেজনা।

এবং সত্যিই হিরের শহর আন্তোয়ার্পে শুক্র বিকেলে বিশ্ব হকির দুই হীরক দলের ২-২ ড্র ম্যাচে সেই রোমাঞ্চ, সেই উত্তেজনাই পাওয়া গিয়েছে যেটা ভারত-পাক হকি ম্যাচে পাওয়াটা প্রত্যাশিত। যে লড়াই দেখে মুগ্ধ বলিউড থেকে ক্রীড়ামহল। বোমান ইরানি টুইট করেছেন, ‘অনেক ভারত-পাক রূপকথার ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছি। আজকের ভারত-পাক হকি ম্যাচও সে রকমই এক রূপকথা।’ বিরাট কোহলির টুইট, ‘ঘরে বসে অনেক দিন পরে একটা হকি ম্যাচ দেখে উত্তেজনায় লাফালাফি করার অবস্থা! চক দে ইন্ডিয়া!’ বীরেন্দ্র সহবাগের পোস্ট, ‘ওয়াও! কী দুর্দান্ত হকি! ভারত-পাকিস্তান ২-২!’ প্রাক্তন জাতীয় হকি তারকা বীরেন রাসকুইনার টুইট, ‘‘শুরু থেকে শেষ দুর্দান্ত ম্যাচ। প্রচণ্ড আবেগ নিয়ে সারাক্ষণ লড়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।’

হকি ওয়ার্ল্ড লিগ সেমিফাইনালের গ্রুপ পর্বের ম্যাচের চারটে কোয়ার্টারই হাড্ডাহাড্ডি হল। হাফটাইমেও কেউ কারও চেয়ে এগিয়ে ছিল না। আধ ঘণ্টা শেষেও তখন স্কোরবোর্ড সমান-সমান, ১-১। প্রথমে রামনদীপের গোলে এগিয়ে যায় সর্দারের ভারত। জাতীয় দলের নীল জার্সিতে যুবরাজ বাল্মিকীর ৫০তম ম্যাচে তাঁর সতীর্থ মিডফিল্ডার গুরমেল সিংহ প্রথম কোয়ার্টারেই পাক ডি-এর ভেতর এমন এক অসাধারণ পাস বাড়ান যে সেই ক্রসে কেটে যান বিপক্ষের তিন ডিফেন্ডার। বাকি ছিলেন পাক গোলকিপার। রামনদীপ সেই অনবদ্য ক্রসের উপর ততোধিক অনবদ্য রিভার্স ফ্লিক মেরে হার মানান বিপক্ষ কিপারকে। কিন্তু মহম্মদ ইমরান পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে পাকিস্তানকে সমতায় ফেরানোই শুধু নয়। কিছুক্ষণের মধ্যে নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলকে ২-১ এগিয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু মিনিটকয়েকের মধ্যেই আবার সেই রামনদীপ। এ বার তাঁর দ্বিতীয় গোলে ভারতের সমতায় ফ‌েরা।

তার পর দু’দলই পেনাল্টি কর্নার পেলেও এশীয় হকির দুই দৈত্য অনেক দিন যাবত যে রক্তস্বল্পতায় ভুগে বিশ্বহকিতে একটু পিছিয়ে পড়েছে সেই দুর্দান্ত ড্র্যাগফ্লিকারের অভাবে পেনাল্টি কর্নারের ফায়দা তুলতে পারেনি। না ভারত, না পাকিস্তান। শেষ কোয়ার্টারে তাই কোনও গোল হয়নি। তবে ভারতীয় কিপার শ্রীজেস একটা অনবদ্য সেভ করেন তার মধ্যেই। সর্দার-বাহিনীর আরও কৃতিত্ব— ম্যাচে এক বার দশ মিনিটের জন্য দশ জন, এমনকী এক বার নয় জন হয়ে গিয়েও ম্যাচকে হাতের বাইরে যেতে দেয়নি।

তবে পাশাপাশি এটাও ঘটনা যে, হাইভোল্টেজ ম্যাচে এ দিন ভারতীয়দেরই যেন একটু বেশি ফাউলের প্রবণতা ছিল। সতবীর এক পাক প্লেয়ারকে স্টিক-ফাউল করায় প্রথমার্ধেই একটা সময় ভারত দশ মিনিটের জন্য দশ জন হয়ে গিয়েছিল। সতবীরকে আম্পায়ার মার্চিং অর্ডার দেওয়ায়। কিছু পরে অনুরূপ অপরাধে ভারতীয় দল কমে নয় জনে দাঁড়ায়। তবু সর্দারদের মাথা নোয়ানো যায়নি!

ছবি: এএফপি ও টুইটার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন