স্টিভের মতো এত স্বার্থপর ক্রিকেটার দেখিনি: ওয়ার্ন

সেটা ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের চতুর্থ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়া। ওই সিরিজের প্রথম টেস্ট অস্ট্রেলিয়া জিতলেও পরের দুটো টেস্ট জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০৮
Share:

বিতর্ক: প্রাক্তন সতীর্থ স্টিভ ওয়-কে নিয়ে নতুন বইয়ে বিস্ফোরক ওয়ার্ন।

শেন ওয়ার্ন বনাম স্টিভ ওয়ের দ্বন্দ্বের কথা অজানা নয় ক্রিকেট বিশ্বের। দু’জনের মধ্যে অনেক ঝামেলার কথাই শোনা যায়। এ বার সেই সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিস্ফোরণ ঘটালেন ওয়ার্ন। তাঁর এখনও অপ্রকাশিত বইয়ে স্টিভকে রীতিমতো আক্রমণ করে ওয়ার্ন বলেছেন, ‘‘আমার দেখা সব চেয়ে স্বার্থপর ক্রিকেটার। যে কী ভাবে নিজের ব্যাটিং গড় ৫০ হবে, তার বাইরে কিছু ভাবত না।’’

Advertisement

আরও একটা প্রসঙ্গের কথা নিজের এই বইয়ে তুলে এনেছেন ওয়ার্ন। সেটা ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের চতুর্থ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়া। ওই সিরিজের প্রথম টেস্ট অস্ট্রেলিয়া জিতলেও পরের দুটো টেস্ট জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম তিন টেস্টে মাত্র দুই উইকেট পান ওয়ার্ন। চতুর্থ টেস্ট শুরুর আগে দল নির্বাচনী বৈঠকে কী ঘটেছিল, তা নিজের বইয়ে লিখেছেন প্রাক্তন লেগস্পিনার। যে বইয়ের বিশেষ কিছু অংশ ছাপা হয়েছে ইংল্যান্ডের এক সংবাদপত্রে। ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘আমি ওই সিরিজে সহ-অধিনায়ক ছিলাম। টুগ্গা (স্টিভ ওয়) বৈঠকের শুরুতেই বলে দেয়, ‘ওয়ার্নি, আমার মনে হচ্ছে পরের টেস্টে তোমার খেলার দরকার নেই।’ ওই বৈঠকে কোচ জিওফ মার্শও ছিল। স্টিভের ওই মন্তব্যের পরে সবাই চুপ করে যায়।’’

ওয়ার্ন আরও লিখেছেন, ‘‘আমি প্রশ্ন করি, কেন? তাতে স্টিভ জবাব দেয়, ‘ভাল খেলতে পারছ না বলে।’ সেটা মেনে নিয়ে আমি বলি, ‘তবে আমি ছন্দে ফিরে আসছি।’ কোচ মার্শও আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু স্টিভ গোঁ ধরে থাকে, আমাকে বাদ দেবেই। অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন নির্বাচক অ্যালান বর্ডার তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। তাঁর মতও নেওয়া হয়। বর্ডার বলেছিলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে ওয়ার্নের পাশে আছি। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের জন্য ওয়ার্ন কী করেছে, সেটা ভুললেও চলবে না।’ কিন্তু স্টিভ কিছুই শোনেনি। পরিষ্কার বলে দেয়, ওয়ার্নকে নেওয়া যাবে না।’’

Advertisement

সেই টেস্টে অবশ্য ওয়ার্নকে ছাড়াই জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘ওই ভাবে বাদ পড়ায় হতাশ হয়েছিলাম বললে খুব কমই বলা হয়। কঠিন সময় স্টিভ আমার পাশে দাঁড়ায়নি। অথচ স্টিভ আমার ভাল বন্ধু ছিল, ওকে আমি সব সময় সমর্থন করে এসেছি। তা-ই স্টিভের ওই আচরণ আমি মানতে পারিনি।’’

আরও একটা ব্যাপার মানতে পারেননি ওয়ার্ন। সেটি হল, ব্যাগি গ্রিন (অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের টুপি) নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বাস। কিংবদন্তি এই স্পিনার এও লিখেছেন, যে ভাবে ব্যাগি গ্রিনকে পুজো করা হত, তাতে তিনি অসুস্থ বোধ করতেন। ওয়ার্ন লিখেছেন, ‘‘কেউ কেউ তো ব্যাগি গ্রিনকে রীতিমতো পুজো করত। যেমন ল্যাং (জাস্টিন ল্যাঙ্গার), হেডোস (ম্যাথু হেডেন), গিলি (অ্যাডাম গিলক্রিস্ট)। কিন্তু আমি নই। ওরা কাজটা করতে খুব ভালবাসত। কিন্তু ওই সব আদিখ্যেতা দেখার পরে, সত্যি বলতে কী, অর্ধেক সময় আমার বমি বমি পেত। যেমন উইম্বলডনে কেউ কেন একটা সবুজ ক্রিকেট টুপি পরে যাবে? মার্ক ওয়-ও আমার মতে বিশ্বাস করত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলাটা আমাদের কাছে যে কী, সেটা একটা টুপি পরে বোঝাতে হবে কেন?’’

ওয়ার্ন মনে করেন, স্টিভ তাঁকে হিংসা করা শুরু করেছিল। প্রাক্তন লেগস্পিনার লিখেছেন, ‘‘অধিনায়ক হওয়ার পরে স্টিভ পুরো বদলে যায়। আমি বাদ পড়ার জন্য বলছি না। খারাপ খেললাম, বাদ দিলে ঠিক আছে। কিন্তু মনে হয়, আমার বাদ পড়ার পিছনে পারফরম্যান্স ছাড়াও অন্য কারণ ছিল। আমার মনে হয়, স্টিভ আমাকে হিংসে করত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন