দুরন্ত: টেস্টে দশ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা উমেশ। ছবি: এএফপি।
রবিবার হায়দরাবাদে ভারত টেস্ট সিরিজ জিতলেও বেশি হইচই একজনকে নিয়েই। উমেশ যাদব। প্রায় পাটা উইকেটে দুই ইনিংস মিলিয়ে দশ উইকেট নিয়ে যিনি সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন। ম্যাচে ১০টি উইকেট নিয়ে তিনি ভারতকে ঘরের মাঠে টানা ১০ নম্বর সিরিজও জেতালেন। তাই ক্রিকেট মহল বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় উমেশকে না নিয়ে গেলে ভুল করবে ভারতীয় দল।
দেশের মাটিতে টেস্টে দশ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার নজির আর দুই ভারতীয় পেসারের রয়েছে। কপিল দেব ও জাভাগল শ্রীনাথ। ১৯৯৯-এ ইডেনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শ্রীনাথের সেই ১৩ উইকেট নেওয়ার ঘটনাই সেরা। আর তার ১৯ বছর আগে চেন্নাইয়ে পাকিস্তানেরই বিরুদ্ধে কপিল ১১ উইকেট নিয়ে সেই ক্লাব স্থাপন করেছিলেন। বিশ্বকাপ জয়ের বছরেও (১৯৮৩) আমদাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দশ উইকেট নিয়েছিলেন কপিল। শ্রীনাথের কীর্তির ১৯ বছর পরে দশ উইকেট ক্লাবে ঢুকে পড়লেন উমেশ।
নতুন এই কীর্তি গড়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে উমেশ রবিবার বলেন, ‘‘সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাই পাশে থাকার জন্য। জানতাম, এই পিচেও সফল হতে পারি আমি। তাই নিজের সেরাটা দিয়ে উইকেট পাওয়ার জন্য ঝাঁপাই। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও পাঁচ উইকেট নেওয়াই ছিল আমার লক্ষ্য। আমরা (দলের পেসাররা) প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করি। দলের মধ্যে এই সুস্থ প্রতিযোগিতাটা খুব ভাল। আমরা দলের ও পরস্পরের জন্য খেলি।’’
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে গাড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন উমেশ, ‘‘একটা গাড়ি যত চলবে, তত মসৃণ থাকবে। আমিও সে রকম। যত খেলব, তত আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সেরাটা দিতে পারব।’’ হায়দরাবাদ টেস্টে উমেশের সেই মসৃণ উমেশকেই দেখা গেল যেন।
এই পারফরম্যান্সের পরে অস্ট্রেলিয়াগামী টেস্ট দলে তাঁকে রাখার দাবিও উঠল এ দিন। সুনীল গাওস্কর যেমন বলেছেন, ‘‘ভারতে টেস্টে দশ উইকেট নেওয়াটা মোটেই ছোটখাটো ব্যাপার নয়। অ্যাডিলেড টেস্টে আমি ওকে প্রথম এগারোয় দেখতে চাই।’’ অভিনন্দন জানিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর, বীরেন্দ্র সহবাগ, সুরেশ রায়না, ভিভিএস লক্ষ্মণরা। প্রাক্তন ভারতীয় পেসার জাহির খান টুইট করেন, ‘‘পেসারদের জন্য যে পিচে তেমন কিছুই ছিল না, সেই পিচে দশ উইকেট পাওয়াটা অবশ্যই বিশেষ ব্যাপার। এই ছন্দ ধরে রেখো বন্ধু।’’ বিরাট কোহালি নিজেও এ দিন উমেশকে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজের দলে রাখার ইঙ্গিত দেন।