লোকেশ রাহুল। বিশ্বকাপের দলে এসেছেন তৃতীয় ওপেনার হিসাবে। ভাল ক্রিকেটারের ফর্মটা খুব একটা যে ভাল যাচ্ছে তা নয়, কিন্তু দলে জায়গা পেয়েছেন। তাই নিজের খেলাটা উজাড় করে দিতে চান, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়োতে রাহুল বলেছেন এমনটাই। তবে রাহুলের কিন্তু ক্রিকেটার হওয়ার কথাই ছিল না। তাঁর সম্পর্কে না জানা কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
১৯৯২ সালের ১৮ এপ্রিল কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোরে জন্ম লোকেশ রাহুলের।
রাহুলের বাবা ক্রিকেট, বিশেষ করে সুনীল গাওস্করের অন্ধ ভক্ত ছিলেন। তাই ছেলের নাম সানির ছেলের নামেই রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি জানতেন নামটা রাহুল। সেই কারণেই রোহান নয়, রাহুল নাম রাখা হয়।
রাহুলের বাবা ম্যাঙ্গালোরের এনআইটিকে-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিখ্যাত অধ্যাপক, তাঁর মা ম্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কলেজের অধ্যাপিকা। তাই ছোট থেকে পড়াশোনার পরিবেশেই বড় হয়েছেন রাহুল।
তবে ছেলের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা দেখে ছেলেকে ক্রিকেট শিখতে ভর্তি করে দেন বাব-মা। বয়স ১১। ভলিবল, হকি, ফুটবলও খেলতেন রাহুল স্কুলে পড়ার সময়। কিন্তু বেছে নেন ক্রিকেটটাই।
১৭ বছর বয়সে বেঙ্গালুরুর ইউনাইটেড ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতে শুরু করেন তিনি। কর্নাটকের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৩,১৫,১৭,১৯, এমনকি অনূর্ধ্ব ২৩ দলেও খেলেছেন রাহুল একের পর এক ম্যাচ। পারফরম্যান্সও ছিল বেশ ভাল। সেই সময়ের কোচ জয়ারাজের থেকে এখনও পরামর্শও নেন তিনি।
রাহুল কিন্তু ভক্ত ছিলেন নিজের নেমসেকের। অর্থাৎ রাহুল দ্রাবিড়ের। দ্রাবিড়কেই নিজের ‘আইডল’ বলে মনে করেন লোকেশ। দু’জনের মধ্যে সুসম্পর্কও রয়েছে।
২০১০ সালে কর্নাটকের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডেবিউ হয় তাঁর। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই ৬১ রান করে নজর কেড়েছিলেন রাহুল।
২০১৪-২০১৫ সালে রঞ্জি ট্রফি খেলার সময় উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে কর্নাটকের হয়ে ৪৪৮ বলে ৩৩৭ রান করেন তিনি। রাহুলই কর্নাটকের প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ত্রিশতক পূর্ণ করেছেন। আর সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের দিক থেকে রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর ৩৩৭ রান রয়েছে আট নম্বরে।
২০১৪ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফরম্যান্সের কারণেই বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচে সুযোগ পান রাহুল ভারতীয় দলে। প্রথম টেস্টে পারফরম্যান্স একেবারেই ভাল ছিল না। তবে স্মরণীয় ছিল চতুর্থ টেস্ট ম্যাচটি।
মূরলী বিজয়ের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ম্যাচে প্রথম শতরান পূর্ণ করেন। ১১০ রান করেছিলেন রাহুল সেই ম্যাচে।
২০১৪ সালেই আইপিএলেও উৎসাহ তৈরি হয় রাহুলকে নিয়ে। এক কোটি টাকা দিয়ে তাঁকে কেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
তবে রাহুল কিন্তু বেশ ফ্যাশন সচেতন। তবে তাঁর পাগলামি রয়েছে ট্যাটু নিয়ে। রাহুল জানিয়েছেন ট্যাটুর নেশা রয়েছে তাঁর।
কর্ণ জোহরের সঙ্গে একটি শো’য়ে মহিলাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণেই রাহুল ও হার্দিক পাণ্ড্যকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। তবে সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। ফিরেছেন দলে। বিশ্বকাপে তৃতীয় ওপেনার হিসাবে কতটা সফল হন রাহুল, সেটাই এখন দেখার।