রিডিং ৫ - ৭ আর্সেনাল (২০১২)- লিগ কাপে আর্সেনালের বিরুদ্ধে রিডিং টিমের হার এখনও মেনে নিতে পারেননি সেই দলের ম্যানেজার ব্রায়ান ম্যাকডারমট। পরে এই ম্যাচ কি আপনি ডিভিডি তে দেখতে চান জিজ্ঞাসা করলে ম্যাকডারমট জানান, “ডাস্টবিনে ফেলে দিতে চাই ওই ডিভিডি।” কেন? সেদিন আর্সেনালের বিরুদ্ধে প্রথম ৪৪ মিনিট ৪ গোলে এগিয়ে ছিল। বিরতির আগে আর্সেনালের স্ট্রাইকার থিও ওয়ালকটের গোল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপরের দু মিনিটে জিরাউডের গোল (৪-২)। শেষ মিনিটে একটি এবং অতিরিক্ত পাঁচ মিনিট সময়ে আরও চারটি গোল দেয় আর্সেনাল।
মাদারওয়েল ৬ - ৬ হাইবারনিয়ান (২০১০)- এ ভাবে ম্যাচ ড্র খুব কমই দেখা গিয়েছে ফুটবল ইতিহাসে। ৬৫ মিনিট খেলা হয়ে গিয়েছে কিন্তু তখন মাদারওয়েল ৬ -২ পিছিয়ে। এরপর থেকে মাদারওয়েলের খেলোয়াড়রা জ্বলে ওঠেন। একটা সোজা পেনাল্টি মিস করেও ইনজুরি টাইমে সমতা ফেরায় মাদারওয়েল।
লিভারপুল ৩ - ৩ এসি মিলান (২০০৫) - চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। প্রথমার্ধে ০-৩ পিছিয়ে লিভারপুল। ম্যাচ যত গড়াচ্ছে নিশ্চিত হতে চলেছে এসি মিলানের জয়ের হাতছানি। লিভারপুলের অনেক সমর্থক তখন এক বুক হতাশা নিয়ে স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যাঁরা তখনও বসে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দেখছিলেন তা যে হঠাত্ বাস্তব হয়ে উঠবে কে ভেবেছিল। অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত হাতে পেয়ে জেরাড, স্মিসার এবং আলোনসোরা সমতা ফেরায় লিভারপুলকে। পেনাল্টিতে জয় ছিনিয়ে আনেন তাঁরা। এই জয় ‘মিরাকল অব ইস্তানবুল’ নামে পরিচিত।
নিউক্যাস্টেল ৪ - ৪ আর্সেনাল (২০১১) - প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনালের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে হাফ টাইমের আগেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ৪ গোল খায় নিউক্যাস্টেল। তবুও জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায় আর্সেনালের। শেষ ১৯ মিনিটে ৪ গোল দিয়ে সমতা ফেরায় নিউক্যাস্টেল।
ব্ল্যাকপুল ৪ - ৩ বল্টন ওয়ান্ডারার্স (১৯৫৩)- এফ কাপের ফাইনাল মানেই টানটান উত্তজেনা থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৯৫৩-র এফ কাপের ফাইনালও সে রকমই একটি ম্যাচ ছিল। এই ম্যাচকে ‘ম্যাথুস ফাইনাল’ নামে পরিচিত। স্টেডিয়ামে এক লক্ষ দর্শকের সামনে প্রথম ২০ মিনিটে ৩ - ১ এগিয়ে বল্টন ওয়ান্ডারার্স। কিন্তু স্টাইকার স্ট্যানলি ম্যাথুসের হ্যাট্রিকে জয় ছিনিয়ে আনে ব্ল্যাকপুল।
বার্সেলোনা ১ -৪ মেটজ (১৯৮৪) - এ ভাবেও ফিরে আসাও যায়। ১৯৮৪ তে ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপের ফরাসি দলের কাহিনি তাই মনে করায়। ঘরোয়া লিগে একেবারে ৬-০ এবং ৭-০ তে গো-হারা হয়ে যাওয়ার পর সে সময় তাদের ম্যাচ কভার করতে বিরক্ত প্রকাশ করেছিল মিডিয়াও। প্রথম রাউন্ডে ফার্স্ট লেগে বার্সেলোনার কাছে ২ - ৪হেরে মেটজ দলের আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে ঠিকে গিয়েছিল। সেকেন্ড লেগেও বার্সেলোনার সঙ্গে ম্যাচ। নিজেদের সমর্থক থেকে বিশেষজ্ঞ কেউ কোনও জেতার আশা দেখছেন না। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। টনি কুরবোসের হ্যাট্রিক এবং হোসে সানচেকের একটি গোলে ৪ - ১জেতে মেটজ।
জার্মানি ৪ - ৪ সুইডেন (২০১২) - বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন ম্যাচে সুইডেনের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে ৪টি গোল দিয়ে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে জার্মান দলের। যখন হাতে বাকি মাত্র ২৮ মিনিট, ম্যাচের মোড় ঘোরায় ৬২ মিনিটের মাথায় জালাটান ইব্রাহিমোভিচের অনবদ্য একটি গোল। ঠিক দু মিনিটের মধ্যে আবার লাস্টিং গোল করেন। ৭৬ মিনিটে এলম্যান্ডার এবং অতিরিক্ত মিনিটে রাসমস এলমের গোলে সমতা ফেরায় সুইডেন।
স্পার্স ৩ - ৪ ম্যানচেস্টার সিটি (২০০৪) - ২০০৪ তে এফএ কাপে টোটেনহামের বিরুদ্ধে ফিরে আসার একটি অনবদ্য গল্প লিখেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। হাফ টাইমে পিছিয়ে ৩ -০। আবার ১০ টি খেলোয়াড় নিয়ে লড়তে হচ্ছে তাদের। ৪৮ মিনিটটের মাথায় সিলভেন প্রথম গোল করে ম্যান সিটির সমর্থকদের আশা জাগায়। এরপর বসভেল্ট, রাইট-ফিলিপ্সের দুটি গোল সমতা ফেরায় ম্যান সিটি। কিন্তু শেষ মিনিটে ম্যাকেনের অনবদ্য হেডে গোল যে জয় নিয়ে আসবে এটা অপ্রত্যাশিত ছিল সবার কাছেই।
মালি ৪-৪ অ্যাঙ্গোলা (২০১০)- আফ্রিকান কাপ অব নেশন টুর্নামেন্টে ৭৫ মিনিটেও অ্যাঙ্গোলার দেওয়া ৪টি গোলের কোনও জবাব দিতে পারেনি মালি। মালির পরাজয় নিশ্চিত তা ধরেই নিয়েছিল সেদিনের ৪৫ হাজার দর্শক। কিন্তু তাদের অনুমান সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত করে কেইটা, কানোট ও ইয়াতাবাররা। অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত লড়ে সে ম্যাচ সমতায় নিয়ে আসেন তাঁরা।
গিলিংহাম ২ -২ ম্যানচেস্টার সিটি (১৯৯৯)- ম্যানচেস্টার সিটি ক্লাবের একটি স্মরণীয় ম্যাচ ছিল গিলিংহামের বিরুদ্ধে। ৯০ মিনিটে পিছিয়ে ছিল ০-২। ম্যানচেস্টার সিটির অধিকাংশ সমর্থক মাঠ ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। অতিরিক্ত সময়ে কেভিন হর্লক এবং পল ডিকভের অনবদ্য দুটি গোলে সমতা ফেরায় ম্যানচেস্টার সিটি।