India vs England 2021

বিরাটের ক্ষুরধার মস্তিষ্ক, ভুবি-শার্দূলের নিখুঁত বোলিং, সিরিজ পকেটে পুরল ভারত

পাহাড় সমান ২২৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে তখন ১ উইকেটে ১৩০ রান। ভারতের সব বোলারদের বিরুদ্ধে তখন দেদার রান তুলছেন ডাউইড মালান ও জস বাটলার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২১ ০০:৫২
Share:

সিরিজ জয়ের পর ভারতীয় দল ছবি টুইটার

প্রথম এবং দুই নম্বরে থাকা দলের লড়াই। এমন যুযুধান দুই দল বাইশ গজের যুদ্ধে নামলে কড়া টক্কর তো হবেই। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারল না। তাই আপাত রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষে ৩৬ রানে ম্যাচ ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে হাসিমুখে মাঠ ছাড়লেন বিরাট কোহলী।

Advertisement

পাহাড় সমান ২২৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে তখন ১ উইকেটে ১৩০ রান। ভারতের সব বোলারদের বিরুদ্ধে তখন দেদার রান তুলছেন ডাউইড মালান ও জস বাটলার। মনে হচ্ছিল ম্যাচ ও সিরিজ যেন হাত থেকে বেরিয়ে গেল। কিন্তু বিরাট কোহলীর মাথায় ঘুরছিল অন্য পরিকল্পনা। ১৩ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে ফের বল তুলে দিলেন। এল কাঙ্খিত সাফল্য। ভুবির স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন বাটলার (৫২)। স্কোরবোর্ড বলছে ১৩০ রানে ২ উইকেট। বিরাটবাহিনীর ধড়ে যেন প্রাণ এল।

তবে রোমাঞ্চের এখানেই শেষ নয়। ১৫তম ওভারে ইংরেজদের জোড়া ধাক্কা দিলেন শার্দূল ঠাকুর। ঠিক যেন তৃতীয় ম্যাচের প্রতিফলন ঘটল। সেই ম্যাচের ১৭তম ওভারে বেন স্টোকস ও অইন মর্গ্যানকে পরপর দুই বলে আউট করেছিলেন। এই ম্যাচে তাঁর শিকার জনি বেয়ারস্টো ও বিস্ফোরক মেজাজে ৬৮ রানে ব্যাট করা ডাউইড মালান। ১৪২ রানে ৪ উইকেট হারাতেই ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। শিশির খেলায় প্রভাব ফেললেও ভুবি, শার্দূল সেটা বুঝতে দেননি। শেষের দিকে হার্দিক পাণ্ড্য, টি নটরাজন তুলে নেন একটি করে উইকেট। ফলে একটা সময় চাপে থাকলেও, ম্যাচ ও সিরিজ পকেটে পুরতে ভারতকে মোটেও বেগ পেতে হয়নি।

Advertisement

রোহিত-বিরাট জুটি ভারতকে সাহায্য করে বড় লক্ষ্য তৈরি করতে।

নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে এ দিন ফের টসে হারেন বিরাট। তবে কে এল রাহুলকে বাইরে রেখে নিজেকে ওপেনিংয়ে তুলে এনে বিপক্ষকে প্রথম ঝটকা দেন অধিনায়ক। রোহিত শর্মা ও বিরাটের জুটিতে শুরু থেকেই কুপোকাত ইংল্যান্ড। মাত্র ৯ ওভারে ৯৪ রান তুলে ফেলে ভারত। এরপর রোহিত ৩৪ বলে ৬৪ রানে আউট হলেও পাল্টা আক্রমণ থেকে সরে আসেনি দল। বরং সূর্য কুমার যাদব শুরু থেকেই ঝড় তোলেন। গত ম্যাচে যেখানে শেষ করেন এ দিন যেন সেখান থেকেই শুরু করেন এই মুম্বইকর। মাত্র ১৭ বলে ৩২ রানে ফেরেন সূর্য।

আর বাকিটা সময় ধরে চললো বাইশ গজ জুড়ে শুধু ‘কিং কোহলী’র ব্যাটিং রাজ। ৫২ বলে ৮০ রানে অপরাজিত রইলেন অধিনায়ক। প্রথম ও চতুর্থ ম্যাচে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবে একই সঙ্গে এই সিরিজে করেন তিনটি অর্ধ শতরান। যদিও ক্রিকেটীয় বিচারে এই ইনিংসের তাৎপর্য অনেক বেশি। রোহিত ও সূর্যের মতো তিনিও শুরু থেকে ব্যাট চালাতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে পুরো ইনিংস জুড়ে ইংরেজদের শাসন করার দায়িত্ব নেন। আর এতেই অইন মর্গ্যানের দলের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ২২৪ তোলে ভারত। আর ১৭ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন হার্দিক।

অসাধারণ বল করলেন ভুবনেশ্বর কুমার।

বিশাল রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা ভাল হয়নি। সাহেবদের প্রথম ধাক্কা দেন ভুবি। জেশন রয় খালি হাতে ফিরে যান। কিন্তু এরপর প্রতি আক্রমণ শানান বাটলার ও মালান। চোখের নিমেশে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩০ রান যোগ করেন। ফলে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেবে। কিন্তু বিরাটের ক্ষুরধার মস্তিষ্ক অন্য ছক করেছিল। ভুবি ও শার্দূলের সেই ফাঁদে ধরা দেয় ইংল্যান্ড। ফলে ৮ উইকেটে ১৮৮ রানে থেমে যায় মর্গ্যানের দল।

আর ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’ প্রবাদকে ফের একবার মনে করিয়ে দেশকে আরও একটা ম্যাচ ও সিরিজ উপহার দেন অধিনায়ক এবং ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন