Neeraj Chopra

নীরজের জ্যাভলিনে সওয়ার ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স, দিনবদলের আশায় হরিয়ানার তরুণ

বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছেন ভারতের তিন জ্যাভলিন থ্রোয়ার। নীরজের মতে, দেশের অ্যাথলেটিক্সে পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, জ্যাভলিনে ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ১৫:৫৯
Share:

নীরজ চোপড়া। ছবি: টুইটার।

অলিম্পিক্সের একটা সোনা বদলে দিয়েছে ভারতের অ্যাথলেটিক্স। টোকিয়োয় নীরজ চোপড়ার সাফল্য দেখে অন্যরাও বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, তাঁরাও পারবেন। সেই বিশ্বাসের ফসল ডিপি মানু এবং কিশোর জেনা। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিন থ্রোয়ের ফাইনালে উঠেছেন তিন ভারতীয়। যা ভারতের অ্যাথলেটিক্সের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব।

Advertisement

নীরজে বুঁদ অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব রবিবার হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে দেখেছে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের উদয়। নীরজের সোনা ছাড়া ভারতের ঝুলিতে পদক নেই। কিন্তু রবিবার পদকের লড়াইয়ে ছিলেন আট ভারতীয়। মহিলাদের ৩০০০ হাজার মিটার স্টিপলচেজ়ে পারুল চৌধরি ছিলেন। ছিল পুরুষদের ৪x৪০০ মিটার রিলে দলও।

নজর কেড়েছেন জ্যাভলিন থ্রোয়ারেরা। পদক জিততে না পারলেও জেনা পঞ্চম এবং মানু শেষ করেছেন ষষ্ঠ স্থানে। অর্থাৎ, বিশ্বের সেরা ছ’জন পুরুষ জ্যাভলিন থ্রোয়ারের তিন জনই ভারতের। ২৩ বছরের মানু কর্নাটকের হাসানের বাসিন্দা। আর জেনা ওড়িশার পুরী থেকে থেকে উঠে এসেছেন। তাঁরাও নিয়মিত ৮০ মিটারের বেশি দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ছেন। জেনা ২০২২ সালের জুন মাসে ৮৪.৩৫ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। গত ছ’মাসে উঠে এসেছেন জেনা। পদক না পেলেও রবিবার তিনি ৮৪.৭৭ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ে জীবনের সেরা পারফরম্যান্স করেছেন। পেয়েছেন পঞ্চম স্থান। মানু ৮৪.১৪ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ে হয়েছেন ষষ্ঠ।

Advertisement

সতীর্থদের পারফরম্যান্স নিয়ে উচ্ছ্বসিত নীরজ। তাঁর দাবি, জ্যাভলিনে ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা শক্তি। বিশ্বের এক নম্বর জ্যাভলিন থ্রোয়ার বলেছেন, ‘‘আমাদের আরও এক দশক অপেক্ষা করার দরকার নেই। আমরা চার জন এখন নিয়মিত ৮০ মিটার দূরত্বের বেশি জ্যাভলিন ছুড়তে পারি। ভারতে কখনও এক সঙ্গে এত জন প্রথম সারির জ্যাভলিন থ্রোয়ার ছিল না। আমি ছাড়াও দু’জন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে। অন্নু রানির কথা ভুলে গেলে হবে না। গত কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের প্রথম মহিলা জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসাবে পদক জিতেছিল। ২০২২ সালে বার্মিংহ্যামে অন্নু ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। পরিবর্তন তো এখনই দেখা যাচ্ছে।’’

রবিবার ফাইনালে নিজের পারফরম্যান্সে মন দেওয়ার পাশাপাশি মানু এবং জেনাকে সমানে উৎসাহিত করে গিয়েছেন নীরজ। প্রতিযোগিতা চলার সময় দুই সতীর্থের সঙ্গে বার বার কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কোনও পরামর্শও দিয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর জ্যাভলিন থ্রোয়ার। মানু, জেনা ৮৪ মিটারের বেশি জ্যাভলিন ছোড়ার পর এগিয়ে গিয়ে তাঁদের পিঠ চাপড়ে দিতেও দেখা গিয়েছে নীরজকে।

নীরজ নিজে ৯০ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছোড়ার লক্ষ্য স্থির করেছেন। নিজে যেমন এগোচ্ছেন, তেমনই দেশের অন্য জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের নিয়েও এগোচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায় দেশের যে কোনও অ্যাথলিটের সাফল্য সমাজমাধ্যমে নিজের পেজে ক্রীড়াপ্রেমীদের সঙ্গে ভাগ করে নেন নিয়মিত। সবাইকে উৎসাহিত করেন।

একটা সময় পর্যন্ত জার্মানি এবং ফিনল্যান্ড দেশগুলি পুরুষদের জ্যাভলিন থ্রোয়ে দাপট দেখাত। দু’দেশই উপহার দিয়েছে একাধিক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সেই জায়গা কি দখল করতে পারবে ভারত? নীরজ আশাবাদী। তাঁর মতে, আগামী দিনে আরও জ্যাভলিন থ্রোয়ার উঠে আসবে। নীরজ বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রতিভার অভাব নেই। দরকার সঠিক প্রশিক্ষণ এবং পরিশ্রম।’’

দিনবদলের আশায় নীরজ। তাঁকে দেখে আশার আলো দেখছেন দেশের অন্য অ্যাথলিটেরা। যে বদলের কান্ডারি ২৫ বছরের হরিয়ানভি। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের পর থেকেই নীরজের জ্যাভলিনে সওয়ার ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স। উদীয়মান সূর্যের দেশ থেকে শুরু যাত্রা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন