ক্রিকেট মাঠে ভারত-পাক লড়াই নিয়ে সরগরম হয় গোটা বিশ্ব। হকিতেও তেমনটাই দেখা যায়। কিন্তু ফুটবল যাই হোক এই সবের থেকে খানিকটা এখনও পিছিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে যদি মুখোমুখি হয় এই দুই দেশ। তার মাত্রা কিন্তু আলাদাই হবে। এমনটাই হতে চলেছে সাফ কাপ সেমিফাইনালে। এই ম্যাচ ঘিরে কি দু’ভাগ হয়ে যাবে ঢাকার ফুটবল দর্শক?
এ বার সাফ কাপের আসর বসেছে বাংলাদেশে। আর তারই সেমিফাইনালে বুধবার মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তান। এতদিন সাফকাপ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে তেমন উৎসাহ না থাকলেও এই দুই দেশের সেমিফাইনাল ঘিরে আপাতত টানটান উত্তেজনা রাজধানী শহর ঢাকায়। বেড়েছে টিকিট বিক্রির হার। ৫ বছর পর ফুটবলের কোনও অফিশিয়াল ম্যাচে লড়াইয়ে নামছে চির শত্রু দুই দেশ।
পাকিস্তান দলের তরফে ইতিমধ্যেই এই ম্যাচকে বিশেষ তকমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটবলাররা সকলেই মনে করছেন, এই ম্যাচ সব সময় স্পেশ্যাল। তার জন্য বাড়তি কিছু দিতে হয়। আর সেই প্রস্তুতি নিয়েই নামছে পাকিস্তান। পাকিস্তান দলের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার জেশ রহমান যিনি প্রথম ফুটবলার সাফ দেশ থেকে যিনি ইংলিশ প্রিমিয়র লিগে খেলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে খেলাটা সব সময়ই ভীষন স্পেশ্যাল। আমার বিশ্বাস ভারতীয় প্লেয়ারদের জন্যও একই অনুভূতি।’’
আরও পড়ুন
প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছিল, ইংল্যান্ড থেকে দ্রাবিড়কে ফোন করেছিলেন হনুমা
ফুলহ্যামের এই ডিফেন্ডার বলেন, ‘‘এই ম্যাচের ইতিহাস অনেক বড়। আবেগও ততটাই। এই শত্রুতা সবাইকে বাড়তি দিতে বাধ্য করে। দুই দেশের কাছে অনেক কিছু। পুরো ম্যাচ যে উত্তেজনা থাকবে সেটা সবাই টের পাচ্ছি। তবে আমাদের খুব সাবধান থাকতে হবে। আবেগকে আহত করা যাবে না।’’ পাকিস্তান অধিনায়ক সাদ্দাম হোসেন আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। প্রতিপক্ষের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলব। কেউ এই ম্যাচে এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না।’’
শেষ অফিশিয়াল ম্যাচে এই দুই দেশে মুখোমুখি হয়েছিল কাঠমান্ডুতে ২০১৩ সালে। সাদ্দাম কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধেই গোল করতে বেশি মুখিয়ে থাকেন বলে জানিয়ে দিলেন। এ বার সিনিয়র দল নিয়ে সাফ খেলতে যায়নি ভারত। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের উপরই ভরসা রাতে চেয়েছেন কোচ স্টিফেন কনস্টানটাই। তাঁদের উপর যাতে পাকিস্তান ম্যাচের বাড়তি চাপ না পড়ে তাই এই ম্যাচকেও আর একটি অন্য ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করছেন কোচ।
অনুশীলন শেষে ভারতীয় ফুটবল দল। ছবি: এআইএফএফ।
শ্রীলঙ্কা ও মলদ্বীপকে হারিয়েই সেমিফাইনালে পৌঁছেছে ভারত। দুই ম্যাচেরই ফল ২-০। কনস্টানটাইন বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আমরা অবহিত। তবে এটা কোনও আলাদা কিছু নয়। এটা আর একটা ম্যাচ। আশা করছি তাদের হারিয়ে আমরা ফাইনালে পৌঁছব।’’ অন্য সেমিফাইনালে মুখোমুখি নেপাল ও মলদ্বীপ। নেপালের পারফর্মেন্সকে সম্মান জানিয়ে কনস্টানটাইন বলেন, ‘‘আমি চাই পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে নেপালের মুখোমুখি হতে। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ফুটবলল খেলেছে নেপাল।
মনবীর সিংহ মলদ্বীপের বিরুদ্ধে দারুণ খেলে মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার হয়েছিলেন। দেশের জার্সিতে প্রথম গোলও পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের হয়ে গোল করাটা সব সময়ই বিশেষ। প্রথম গোল আলাদা আবেগের। আমি চেষ্টা করছিলাম কিন্তু গোল পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত যখন পেলাম, সেটা একজন ফুটবলার হিসেবে আমার জন্য দারুণ মুহূর্ত ছিল। আমাদের জয় টিম গেমের ফল। এখন আমরা সেমিফাইনালের জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’’