প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে, ভারতের অন্যতম প্রিয় মাঠে টেস্ট খেলতে নামছে নিউজিল্যান্ড। যাঁদের ইতিহাসটা একটু পছন্দ, তাঁদের জন্য বলি, সে সময় সিনেমা হলে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালি’ চলত, বিনু মাকড়ের সঙ্গে ৪১৩ রানের জুটিতে নাম লিখিয়েছিলেন পঙ্কজ রায়। আর মাকড়-সুভাষ গুপ্তে-জেশু পটেলের ত্রয়ী বুঝিয়ে দিচ্ছিল ভারতের স্পিন-ভবিষ্যতটা কী হতে যাচ্ছে। আসন্ন দুর্গা পুজোর আবহে এই ‘সিটি অব জয়’-এ আসতে পারাটা এক জন ক্রিকেটার বা টুরিস্ট— সবার কাছেই দারুণ একটা সুখকর অভিজ্ঞতা।
নিশ্চিত থাকতে পারেন, উইলিয়ামসন এবং ওর ছেলেরা কিন্তু ইডেনে নিজেদের সেরাটা দিতেই নামবে। ইডেন কিন্তু ব্যাটসম্যানদের কাছেও ভাল একটা মাঠ। এখানে অর্ধেক ম্যাচ ড্র হয়েছে। বিদেশিদের কাছে এই মাঠে জয়-হারের পরিসংখ্যানটা প্রায় সমান সমান। প্রতি ম্যাচে গড়ে অন্তত একটা করে সেঞ্চুরি হওয়ার নজির আছে। তাই ইডেনে নিউজিল্যান্ডের একটা সুযোগ আছে সিরিজটাকে জমিয়ে দেওয়ার।
মুরসুমটা সবে শুরু হচ্ছে। ফলে দিনের শুরুতে বা শেষে পেসারদের সুইং পাওয়ার সে রকম সম্ভাবনা কম। নিউজিল্যান্ড দেখলাম মার্ক ক্রেগকে চোটের জন্য আর পাচ্ছে না। তার বদলে জিতেন পটেলকে নিয়েছে। এটা কিন্তু এক দিক থেকে ওদের জন্য ভালই হবে বলে মনে হচ্ছে। পটেলের অভিজ্ঞতাটা অনেক বেশি।
কানপুরের উইকেট থেকে ইডেনের পিচের চরিত্র আলাদা। এখানে কিন্তু পাঁচ বোলারে খেলা উচিত ভারতের। এই পিচে জাডেজা এখনও পরীক্ষিত নয়। অশ্বিন ইডেনে এখনও পাঁচ উইকেট পায়নি। ইডেন কিন্তু বোলারদের জন্য কঠিন একটা মঞ্চ হয়ে যেতে পারে। এখানে নিয়মিত দ্বিতীয় নতুন বলটা নিতে হয়। এখানে ২০টা উইকেট তোলার জন্য ভারতকে যত বেশি সম্ভব বোলারই খেলাতে হবে। আশা করব, এর জন্য কোপটা রোহিত শর্মার উপর পড়বে না। কারণ ইডেনের সঙ্গে রোহিতের প্রেম কাহিনি সবারই জানা।
এ ছাড়া ইডেনে টাইম ফ্যাক্টরটাও একটা বড় ব্যাপার। আলো কমে যায়। রুটিন মাফিক বৃষ্টি হয়। ভারতকে তাই দ্রুত রেজাল্ট পাওয়ার জন্য ঝাঁপাতে হবে। তবে অসতর্ক হলে চলবে না। এই নিউজিল্যান্ড দলটা কিন্তু লড়তে জানে। তাই একটা ভাল টেস্ট দেখার আশায় আছি। (টিসিএম)