শাসন: জয়ে ফিরল ভারত। রানে ফিরলেন ধোনিও। গেটি ইমেজেস
অ্যাডিলেডের ওয়ান ডে-তে শুধু ভারতই জেতেনি, জিতেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও।
বিরাট কোহালির ৩৯তম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি ভারতকে জয়ের রাস্তায় এনে দেওয়ার পরে ম্যাচ শেষ করে আসেন ধোনি। শেষ ওভারে তাঁর ব্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছে বিশাল একটা ছয়ও। ‘ফিনিশার’ ধোনিকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত কোহালি বলেছেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে অ্যাডিলেডে একটা এম এস ধোনির ক্ল্যাসিক দেখা গেল।’’
অস্ট্রেলিয়ার নয় উইকেটে ২৯৮ রান তাড়া করতে নেমে কোহালি করে যান ১১২ বলে ১০৪। কিন্তু ভারত অধিনায়ক যখন আউট হন, জয়ের জন্য তখন ৬.২ ওভারে ৫৭ রান বাকি। দীনেশ কার্তিককে সঙ্গে নিয়ে যে রানটা তুলে দিলেন ধোনি (৫৪ বলে ৫৫ ন.আ.)। শেষ ওভারে দরকার ছিল সাত রান। জেসন বেহরেনডর্ফের প্রথম বলেই বিশাল ছক্কা মেরে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।
ম্যাচের শেষে টিভি-তে উচ্ছ্বসিত কোহালি বলেন, ‘‘ধোনি ম্যাচকে একেবারে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। ওই সময় ওর মাথার মধ্যে কী চলছে, ধোনি ছাড়া কেউ জানে না। তবে নিজের ওপর ধোনির পুরো আস্থা আছে যে, শেষ দিকে ওই বড় শটগুলো মারতে পারবে। রাতটা ওরই ছিল।’’
একই সঙ্গে দীনেশ কার্তিকেরও প্রশংসা শোনা গিয়েছে কোহালির মুখে। ‘‘দীনেশও দারুণ খেলল। ধোনির ওপর থেকে চাপটা কমিয়ে দেয় ও,’’ বলেছেন কোহালি।
অ্যাডিলেডের গরম যে ক্রিকেটারদের কাজটা আরও কঠিন করে দিয়েছিল, সেটা বলছিলেন কোহালি। ‘‘এত ঘাম হচ্ছিল যে, শরীর থেকে প্রচুর নুন বেরিয়ে যাচ্ছিল। আমার প্যান্ট পর্যন্ত ঘামে সাদা হয়ে গিয়েছিল। এমএসও ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল,’’ বলেছেন ভারত অধিনায়ক।
নিজের ইনিংস নিয়ে কোহালি বলেছেন, ‘‘আমি সব সময় মাথায় রাখছিলাম, কখন আক্রমণে যেতে হবে। দু’-তিনটে ওভার বেছে নিয়ে আক্রমণে যাই, যাতে রান আর বলের মধ্যে ফারাকটা কমে যায়।’’
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ নিয়ে নকশায় স্বস্তি ফিরবে দলে
ধোনির সঙ্গে এ দিন শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচ জেতানোয় বড় ভূমিকা নেন দীনেশ কার্তিকও। যিনি পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেন, ‘‘দল চায় আমি যেন ছয় নম্বরে নেমে ম্যাচ শেষ করে আসি। আমাকে সেই ভূমিকাটা দেওয়া হয়েছে। সেই কাজটাই যতটা পারি করার চেষ্টা করছি।’’ ধোনিকে নিয়ে কার্তিক বলেছেন, ‘‘ধোনি এই সিরিজে যথেষ্ট ভাল খেলছে। এই রকম ইনিংস ও বহুবার খেলেছে। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে ওকে ম্যাচ শেষ করতে দেখাটা
দারুণ একটা অভিজ্ঞতা।’’
সিডনিতে আগের ম্যাচে মন্থর ব্যাটিং করার জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ধোনিকে। রান পাননি কার্তিকও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘নিজের পরিকল্পনাটা ধোনি ভাল করেই জানত। আমারও নিজস্ব একটা রণনীতি ছিল। সেই মতো ব্যাট করেছি। ধোনি কখনও ভাবে না যে, সামনে মাত্র ১০ ওভার আছে, তা হলে আমাদের এত রান করতে হবে। ও দেখে কোন বোলার কী রকম
বল করছে।’’
শেষ ওভারে সাত রান দরকার ছিল ভারতের। যা নিয়ে তাঁরা কোনও রকম চাপেই ছিলেন না বলে জানালেন কার্তিক। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দু’জনেই জানতাম, একটা বড় শট ম্যাচ শেষ করে দেবে। তাই শেষ ওভার শুরুর সময় একটুও টেনশনে ছিলাম না। বরং ওদের বোলারই চাপে ছিল। অস্ট্রেলিয়া জানত, একটা খারাপ বল মানেই খেলা শেষ। আমরাও জানতাম, বোলার একটা খারাপ বল দিলেই সেটা মাঠের বাইরে পাঠানো যাবে। সেটাই হল।’’
প্রচণ্ড গরমে মাঝে মাঝে কাহিল হয়ে পড়তে দেখা যায় ধোনিকে। যা নিয়ে মজা করে কার্তিক বলেন, ‘‘আমি খুব খুচরো রান নিচ্ছিলাম। এমনিতে যা গরম, তার উপর ধোনি অনেকটা সময় ব্যাট করছিল। মনে হয়, পরের বার ও অন্য কারও সঙ্গে ব্যাট করা পছন্দ করবে। যে ব্যাটসম্যান বড় শট মারতে পারবে!’’